আজকাল ওয়েবডেস্ক: সাঁতার কাটতে না পারা সোনালি মাছের জন্য হুইলচেয়ার বানালেন এক সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী। সান আন্তোনিওর ডেরেক বার্নেটের ব্যতিক্রমী উদ্যোগে প্রাণ ফিরে পেল ছোট্ট প্রাণীটি। সাঁতার কাটতে না পারার কারণে মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে পৌঁছানো একটি সোনালি মাছ এখন নতুনভাবে জীবন ফিরে পেয়েছে। এর পেছনে রয়েছেন টেক্সাসের সান আন্তোনিও শহরের একটি অ্যাকোয়ারিয়াম দোকানের ম্যানেজার ডেরেক বার্নেট, যিনি একজন পেশাদার সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানীও বটে।
আরও পড়ুন: গাজা হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ইজরায়েলি তরুণরা, বাধ্যতামূলক সামরিক সেবায় ‘না’ বলায় জেল
মাছটির মালিকরা যখন এর যত্ন নিতে ব্যর্থ হয়ে পড়েন, তখন তাঁরা মাছটিকে বার্নেটের দোকানে দিয়ে যান। মাছটি ছিল 'সুইম ব্লাডার ডিজঅর্ডার'-এ আক্রান্ত। এই রোগে মাছের শরীরের একটি বিশেষ অঙ্গ কার্যক্ষমতা হারায়, ফলে মাছটি তার ভাসমান অবস্থান নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। মাছটি বা তো উল্টে যায়, বা ট্যাঙ্কের নিচে গিয়ে পড়ে। এতে করে মাছটির শরীরের একপাশে ক্ষতও সৃষ্টি হচ্ছিল, এবং খাবার খাওয়াও দুষ্কর হয়ে পড়েছিল।
ডেরেক বার্নেট মাছটিকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান এবং ভাবতে শুরু করেন কিভাবে তাকে সহায়তা করা যায়। শেষমেশ তিনি মাছটির জন্য এক ধরনের “হুইলচেয়ার” তৈরি করেন। এই বিশেষ ভাসমান যন্ত্রটি তৈরি করা হয় অ্যাকোয়ারিয়াম-সুরক্ষিত টিউব, জিপ টাই, অ্যাকোয়ারিয়াম ওয়েট ও স্টাইরোফোম দিয়ে। নিচের দিকে ওজন যুক্ত করে এবং ওপরে হালকা ফোম লাগিয়ে এই ডিভাইসটি এমনভাবে বানানো হয় যাতে এটি মাছটির শরীরের গায়ে ঘষা না লাগে এবং একই সঙ্গে মাছটি সোজা থাকতে পারে।
আরও পড়ুন: স্তনের 'আকারে' মন ভরেনি! গভীর রাতে পুলিশ ডাকলেন পর্যটক!
এই উদ্ভাবনী ডিভাইসটির মাধ্যমে মাছটি আবার সঠিকভাবে সাঁতার কাটতে শুরু করে, খাবার খেতে পারে এবং জীবনের গুণগত মান ফিরে পায়। ডেরেকের এই মানবিক উদ্যোগ সামনে আসে স্থানীয় ইউটিউবার ও মাছপ্রেমী টেইলর নিকোল ডিন-এর মাধ্যমে। তিনি মাছটির হুইলচেয়ারের ছবি টুইটারে পোস্ট করলে তা দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায় এবং ১১ হাজারেরও বেশি লাইক পায়।
ডেরেক বার্নেট বলেন, “আমি এমন প্রতিক্রিয়া প্রত্যাশা করেছিলাম। আমি চাই মানুষ বুঝুক—মাছেরা আসলে অনেক বেশি জটিল এবং সংবেদনশীল প্রাণী। আমরা যদি তাদের পোষ মানাই, তাহলে তাদেরও যত্ন পাওয়ার অধিকার রয়েছে।” এই ঘটনা প্রমাণ করে, যতই ছোট হোক না কেন প্রাণীটি, একটু ভালোবাসা ও উদ্ভাবনী চিন্তা তার জীবনকে বদলে দিতে পারে।
