আজকাল ওয়েবডেস্ক: অ্যান্টিগার অনিল কুম্বলে ও ম্যানচেস্টারের ঋষভ পন্থ যেন মিলে গেলেন একই বিন্দুতে। 

২০০২ সালে ভারতের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের ঘটনা। অ্যান্টিগায় চোয়াল ভেঙে গিয়েছিল ভারতের অন্যতম ম্যাচ উইনার অনিল কুম্বলের। 
ভাঙা চোয়াল নিয়ে ব্যান্ডেজ জড়িয়ে মাঠে নেমে বল করেছিলেন কুম্বলে। সেই টেস্টে লারাকে প্যাভিলিয়নে ফিরিয়েছিলেন কুম্বলে। কিন্তু কেন এমন চোট নিয়ে বল করেছিলেন কুম্বলে? 

সেই স্মৃতি রোমন্থন করে কুম্বলে বলেছিলেন, ''ভাঙা চোয়াল নিয়ে যখন ড্রেসিংরুমে ফিরি, সেইসময় আমার স্ত্রী চেতনাকে ফোন করি। তাঁকে জানাই বেঙ্গালুরুতে আমি আসছি। একটা সার্জারি করতে হবে। তুমি একটু ব্যবস্থা করে রেখো। পরমুহূর্তেই বলি, এখন ফোন রাখছি। আমাকে বল করতে যেতে হবে। সেইসময় আমার স্ত্রী চেতনা ভেবেছিলেন আমি ওর সঙ্গে বোধহয় মজা করছি।''

আরও পড়ুন: ঋষভ পন্থ একজনই হন! দল বিপন্ন, ভাঙা পায়ে নেমে পড়লেন ব্যাট করতে, হাততালির ঝড় ম্যানচেস্টারে

কুম্বলে যখন ড্রেসিংরুমে আসেন, তখন শচীন বোলিং করছিলেন। সেই সময়ে তাঁর মনে হয়েছিল বোলিং করে যদি ২-৩টে উইকেট তিনি তুলে নিতে পারেন এবং দিনের শেষে যদি অল আউট হয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ, তাহলে ম্যাচ জেতার সুযোগ রয়েছে ভারতের সামনে। 
ফিজিও অ্যান্ড্রু লিপাসকে চ্যাম্পিয়ন লেগ স্পিনার জানান, এমনভাবে তাঁকে তৈরি করা হোক যাতে দিনের বাকি সময়টা তিনি খেলতে পারেন।  ভারতের বিমানে ওঠার আগে যেন তিনি নিজের কাছে পরিষ্কার থাকেন যে তিনি তাঁর সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।   

?ref_src=twsrc%5Etfw">July 23, 2025

 

মারভিন ডিলনের বাউন্সারে চোয়াল ভেঙেছিল কুম্বলের। ম্যানচেস্টারে অবশ্য পন্থ ব্যাট করলেন। কুম্বলের মতো তাঁর চোয়াল ভাঙেনি। প্রথম দিনে ক্রিস ওকসের বল আছড়ে পড়েছিল পন্থের বুটে। ফিজিও-ও তাঁকে সুস্থ করতে পারেননি। অ্যাম্বুল্যান্স করে মাঠ ছাড়েন পন্থ। দ্বিতীয় দিনের খেলা  শুরুর আগে ভেসে এল পন্থকে নিয়ে খবর। তাঁর পায়ের পাতায় চিড় ধরেছে। সবাই যখন ধরেই নিয়েছেন পন্থের পক্ষে আর ব্যাট করতে নামা সম্ভব নয়, ঠিক তখনই অবাক করার মতচো ঘটনা। 

শার্দূল ঠাকুর ফিরে যাওয়ার পরে দেখা যায় ড্রেসিং রুম থেকে খোঁড়াতে খোঁড়াতে নেমে আসছেন ঋষভ পন্থ। ভাল করে হাঁটতে পর্যন্ত পারছেন না তিনি। পন্থ নিজেও জানেন না সামনের পা এগিয়ে তিনি ব্যাট করতে পারবেন কিনা। তিনি জানেন না সিঙ্গলস নেওয়ার জন্য তিনি দৌড়তে পারবেন কিনা। পন্থ অকুতোভয়।

 

?ref_src=twsrc%5Etfw">July 24, 2025

ভয়ডর নেই তাঁর। তাঁর শট নির্বাচন নিয়ে প্রাক্তনরা সমালোচনা করেন। কিন্তু ঋষভ পন্থ হাল ছাড়ার বান্দা নন। দল বিপন্ন। তিনি আর সরে থাকতে পারলেন কোথায়! দলের খারাপ সময়ে নেমে পড়লেন ব্যাট করতে। বেন স্টোকসের মতো তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বীও পন্থকে দেখে হতবাক। এভাবেও কেউ নামতে পারেন! আসলে পন্থ তো মৃত্যুঞ্জয়ী। মারাত্মক পথ দুর্ঘটনার কবলে পড়েও পন্থ ফিরে এসেছেন। সেই তিনি কী করে ড্রেসিং রুমে বসে থাকেন পায়ের পাতার চোট নিয়ে! 

কুম্বলে-পন্থরাই রূপকথা লেখেন। কেউ অ্যান্টিগায়। কেউ ম্যানচেস্টারে। 

আরও পড়ুন: 'নিজের রাজ্যে এত সম্মান পাইনি, যা বাংলায় পেয়েছি', মুখ্যমন্ত্রীর বাংলাভাষীদের ওপর আক্রমণ প্রসঙ্গে জানালেন অ্যালভিটো