আজকাল ওয়েবডেস্ক: মন্দিরে ঠাকুরের গয়না, পুজোর সরঞ্জাম চুরি করতে ঢুকেছিল এক যুবক। ভেবেছিল, পালিয়েই জিনিসপত্রগুলি বেঁচে দেবেন। হাজার হাজার টাকা নিয়ে সুখেই কাটবে দিন। কিন্তু ঘটল ঠিক উল্টোটা। ঠাকুরের গয়না চুরি করে আর পালাতে পারেনি সে। কারণ? মন্দিরের ভিতরে এত ঠান্ডা ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছিল, আরামে তার ঘুম পেয়ে গিয়েছিল।
চুরি করা জিনিসপত্র ব্যাগে ভরেই, মন্দিরের মেঝেতে শুয়ে পড়েছিল যুবক। তারপরেই নাক ডেকে ঘুম। ঘুমিয়ে পড়ার জেরেই ঘটল আসল ঘটনা। পরদিন হুলস্থুল সেই মন্দির চত্বরে। ছুটে আসে পুলিশ। ঘুমন্ত অবস্থাতেই যুবককে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। উদ্ধার হল ঠাকুরের গয়না, মন্দিরের দামি জিনিসপত্র।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়খণ্ডে। পুলিশ জানিয়েছে, নাওমুন্ডির একটি মন্দিরে গয়না, বাসনপত্র চুরি করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছে এক যুবক। তার নাম, ভীর নায়ক। তাকে গ্রেপ্তার করার পর উদ্ধার হয়েছে সোনার গয়না, হার, বাসনপত্র, এমনকী কয়েকটি কাপড়।
পুলিশ জানিয়েছে, ১৪ জুলাই রাতে বীর নামের ওই যুবক বন্ধুদের সঙ্গে মদ্যপান করেছিল। এরপর বন্ধুরা যে যার মতো বাড়িতে ফিরে যায়। কিন্তু বীর একা একাই ওই মন্দিরে চুরির পরিকল্পনা করে। মত্ত অবস্থায় এক স্থানীয় কালী মন্দিরের পাঁচিল টপকে ভিতরে ঢোকে। ঠাকুরঘরের তালা ভেঙে হাতের সামনে যা পায়, তাই ব্যাগে ভরে ফেলে।

ঠাকুরের সোনার হার, মুকুট, অস্ত্র, থালা, ঘণ্টা, মূর্তির গায়ের বস্ত্র, আরও কিছু কাঁসা, পিতলের বাসন ব্যাগে ভরে নেয়। এত কিছু চুরি করেও সে পালাতে পারেনি। মন্দিরের মেঝে ঘুমিয়ে পড়ে। প্রথমত, মন্দির চত্বরটি অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা। দ্বিতীয়ত, সে মত্ত অবস্থায় ছিল। ঠান্ডা মেঝেতে খানিকক্ষণ বিশ্রাম নিতে গিয়েই ঘুমিয়ে পড়ে। কিন্তু সেই ঘুম আর ভোরবেলায় ভাঙেনি।
সকাল হতেই স্থানীয় বাসিন্দা এবং মন্দিরের পুরোহিত ঘটনাস্থলে আসে। ঠাকুরঘরের সামনে পৌঁছে সকলে দেখেন, ওই যুবক ঘুমে আচ্ছন্ন। প্রথমে কারো সন্দেহ হয়নি। এরপর তার ব্যাগটি খুলতেই সকলে চমকে ওঠেন। সেই ব্যাগ থেকে উদ্ধার হয় ঠাকুরের গয়না, পুজোর সরঞ্জাম। তড়িঘড়ি পুলিশে খবর দেওয়া হয়।
পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেই যুবককে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু তখনও সে টের পায়নি, চুরির ঘটনাটি জানাজানি হয়ে গেছে। জেরায় পুলিশকে সে জানায়, চুরির পর পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তার। কিন্তু ঠান্ডা মেঝেতে শুয়ে কখন ঘুমিয়ে পড়েছিল, তা টের পায়নি। বর্তমানে পুলিশি হেফাজতে রয়েছে সে।
এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অনেকেরই দাবি, 'এটি কালী মায়ের কৃপা। ঈশ্বর উপযুক্ত পদক্ষেপ করেছে। ঠাকুরের গয়না চুরি করে তাই পালাতে পারেননি চোর। মায়ের কৃপাতেই এখন সে শ্রীঘরে।' মন্দিরের পুরোহিতের দাবি, 'মায়ের আশীর্বাদ ছাড়া এ সম্ভব নয়। তিনি কখনও অন্যায়, অপরাধ সহ্য করেননি। এই ঘটনা আবারও তা প্রমাণ করল।' ঘটনার পর থেকে মন্দিরের ঠাকুর জাগ্রত বলে রটে গেছে এলাকায়। পুজোর জন্য আরও বাড়ছে ভিড়।
