আজকাল ওয়েবডেস্ক: একদিকে ভাষা বিতর্কে উত্তাল মারাঠাভূম। তার মাঝেই আবার মাথা চাড়া দিয়েছে ডাল বিতর্ক। পরিস্থিতি যেদিকে, অনেকেই বলছেন, ডালের জল বুঝি গড়াল  বিধানসভাতেও। কারণ ওই বিতর্ককে কেন্দ্র করেই, শাসক দলের বিধায়কের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে বিরোধীরা একজোট হয়েছেন।  আগেই বার্তা দিয়েছেন। এসবের মাঝেই, বুধবার মহারাষ্ট্র বিধানসভার বাইরে বিরোধী দলের বিধায়করা প্রতিবাদ বিক্ষোভ দেখান। 

প্রতিবাদে বিধায়করা তোয়ালাকে লুঙ্গির মতো করে পড়েন জনসমক্ষেই, একই সঙ্গে গেঞ্জিও পরেন। বুধবার মহারাষ্ট্রের বিরোধী দল মহা বিকাশ আঘাড়ি (এমভিএ)-এর বিধায়করা শিবসেনা বিধায়ক সঞ্জয় গায়কোয়াড়ের হস্টেল ক্যান্টিন কর্মচারীর উপর হামলা এবং এই ঘটনায় শাসক দলের নিষ্ক্রিয়তার নিন্দা জানাতে মহারাষ্ট্র বিধানসভার বাইরে 'লুঙ্গি, বানিয়া' প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।

আরও পড়ুন: সিনেমা হলে দর্শক টানতে উদ্যোগী সিদ্দারামাইয়া, টিকিটের দাম বেঁধে দিল কর্ণাটক সরকার...

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ-ভিডিও ভাইরাল হয়েছে ইতিমধ্যে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, শিবসেনা (উদ্ধব বলহাসাহেব ঠাকরে) এমএলসি আম্বাদাস দানভে এবং এনসিপি (শরদ পাওয়ার শিবির) নেতা জিতেন্দ্র আওহাদ-সহ অন্যান্য নেতারা তাদের স্বাভাবিক পোশাকের উপরেই 'বানিয়া' এবং তোয়ালে 'লুঙ্গি' পরেছেন। 

ঘটনার সূত্রপাত, জুলাইয়ের শুরুতে। মুম্বইয়ের চার্চগেটের আকাশবাণী এমএলএ ক্যান্টিনের ঘটনা। বিধায়ক সঞ্জয় গাইকড়, তাঁর কার্যকলাপ নিয়ে তোলপাড় এবং বেশ অস্বস্ত্বিতে শিন্ডে শিবির। শিবসেনা একনাথ শিন্ডে শিবিরের ওই বিধায়কের কাজের ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সঙ্গে সঙ্গেই। 

ঘটনা কী? ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, একজন বিধায়ক, ক্যান্টিনের কর্মীকে চড়-থাপ্পড় মারছেন। ঘটনার পর সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম বিধায়কের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি সাফ জানিয়েছেন, বিন্দুমাত্র অনুতপ্ত নন তিনি। যে ভাষায় কথা বলেছেন, যে আচরণ তিনি করেছেন, তা শিখেছেন বালাসাহেবের থেকেই। 


তাঁর বক্তব্য তিনি যে থালি অর্ডার করেছিলেন, সেখানে ডাল এতটাই বিস্বাদ ছিল, তা খাওয়ায় দূর, মুখে দেওয়া যায় না। অভিযোগ, এই প্রথম নয়, ঘটনা ঘটেছে বারবার। তিনি একাধিকবার বলেছেন ফ্রেশ খাবার দিতে, কিন্তু মাংস থেকে ডিম, ডাল, সবকিছুই খারাপ মানের। তাঁর প্রশ্ন, বিধায়ককে এই খাবার পরিবেশন করা হলে, সাধারণ মানুষকে কোন মানের খাবার দেওয়া হয়? সাফ বক্তব্য, ‘আমি বালাসাহেব ঠাকরের শেখানো ভাষা ব্যবহার করেছি। আমি জুডো, জিমন্যাস্টিকস, ক্যারাটে এবং কুস্তিতে একজন চ্যাম্পিয়ন। আমি গান্ধীবাদী নই। আমার কোনও অনুশোচনা নেই।‘ ঘটনার পর থেকেই মহারাষ্ট্রে শুরু হয় রাজনৈতিক চাপান-উতোর। 

গত কয়েকদিনে এই ঘটনা নিয়ে তীব্র বিতর্ক চলছে মহারাষ্ট্রে। যদিও তাতে একেবারেই অনুতপ্ত নন একনাথ শিবিরের ওই বিধায়ক। তাঁর দাবি, তিনি একা নন, দিনের পর দিন ওই ক্যান্টিনে যাঁরা খাবার খেয়েছেন, তাঁরা সকলেই অভিযোগ তুলেছেন। সেখানকার খাবারের মান অতি খারাপ। তিনি আরও বলেন, ‘আমি জানতাম যে আমি যে পথটি অবলম্বন করেছি তা ভুল ছিল কিন্তু ভুল পথ বেছে নেওয়া আমাকে সঠিক পথে নিয়ে গেছে, এবং এই কারণেই আজ তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।‘ গায়কোয়াড়ের মতে, তার পদক্ষেপ লক্ষ লক্ষ মানুষের অভিযোগের সমাধানে সাহায্য করেছে। তিনি বলেন, যদি এই ধরনের ঘটনা পুনরায় ঘটে, পুনরায় তিনি একই পদপক্ষেপ গ্রহণ করতে বাধ্য হবেন।  যদিও বিরোধীরা বারবার সরকারের ‘গুন্ডা রাজের’ কথাই তুলে ধরেছেন।