বলিউড অভিনেত্রী থেকে বিজেপি সাংসদ—নতুন পরিচয়ে পথচলা শুরু করলেও কঙ্গনা রানাউতের রাজনৈতিক সফর শুরু থেকেই তীব্র বিতর্কে। হিমাচল প্রদেশের মান্ডিতে এক সভায় এক অশতিপর বৃদ্ধর অনুরোধ উড়িয়ে দেওয়ার ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। আর তা দেখামাত্রই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন সাধারণ মানুষ ও নেটনাগরিকরা।
কী দেখা যাচ্ছে সেই ভাইরাল ভিডিওতে? একটা সরকারি সভা চলছে। সেখানেই কঙ্গনার পায়ের কাছে বসে আছেন এক বৃদ্ধ। তাঁর সমস্যার কথা জানান। উত্তর দিতে গিয়ে কঙ্গনা বলেন -“এটা তো মুখ্যমন্ত্রীর কাজ… আমাকে মুখ্যমন্ত্রীর কাজ বলে লাভ কী?” শুনে বৃদ্ধ পালটা বলেন, “আপনি তো সংসদে বিষয়টা তুলতেই পারেন।” তখন কঙ্গনা জানান তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনোহরলাল খট্টরের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ করিয়ে দেবেন। ভিডিওর এক পর্যায়ে কেউ একজন বৃদ্ধকে সরিয়ে নিতে আসেন, কিন্তু কঙ্গনা তাঁকে থামিয়ে দেন এবং কথোপকথন চালিয়ে যেতে থাকেন।

সব দেখেটেখে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় - ‘‘সংসদ সদস্য হয়েছেন, আর নালি-রাস্তার কথা শুনলে বিরক্ত!’ অপূর্ব! ’ ভিডিও ঘিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এক ব্যক্তি লিখেছেন, “পায়ের সামনে এক বৃদ্ধ বসে আছেন, তিনি রাজ্যের সমস্যা জানাতে এসেছেন, আর আপনি বলছেন এটা মুখ্যমন্ত্রীর কাজ?” আরেকজনের মন্তব্য, “রাজনীতি করতে এলেন, অথচ দায়িত্ব নিতে নারাজ!” চোখ কেড়েছে আরেক নেটিজেনের মন্তব্য, “যদি এটাই মনোভাব হয়, তবে কেন রাজনীতিতে এলেন?” একজন তো ক্ষুব্ধ হয়ে লিখেই দিলেন - “ওঁর টিমও ওই বৃদ্ধকে বসার জন্য একটা চেয়ার পর্যন্ত দিল না! লজ্জাজনক।”
আরও পড়ুন: সলমনের সঙ্গে ‘বজরঙ্গি ভাইজান ২’-এর ঘোষণা আসছে কয়েক দিনের মধ্যেই? বড়সড় মন্তব্য কবীর খানের
এদিকে, কঙ্গনার রাজনৈতিক হতাশা প্রকাশ্যে এসেছে। নিজেই তিনি তা এনেছেন। সম্প্রতি এক পডকাস্টে কঙ্গনা বলেন—“আমি রাজনীতিতে অভ্যস্ত নই। এটা অনেকটা সামাজিক সেবার মতো। কেউ নালার কথা বলছে, কেউ রাস্তার। আমি বলি আমি তো এমপি, এটা রাজ্য সরকারের কাজ। কিন্তু মানুষ শুনতে চায় না। তারা বলে আপনার তো টাকা আছে, আপনি খরচ করুন।” তিনি এরপর স্পষ্ট বলেন—“রাজনীতি উপভোগ করছি, তা বলতে পারি না। এটা আমার ব্যাকগ্রাউন্ড না।”, আসলে রাজনীতির ময়দানে কঙ্গনার অভিষেকই যেন এক বাস্তব চ্যালেঞ্জ। যেখানে স্পটলাইটের নিচে দাঁড়ানো নয়, বরং মাটির কাছাকাছি নেমে কাজ করতে হয়। আর এখানেই যেন ধাক্কা খাচ্ছেন বলিউডের ‘কুইন’।
এই অভিজ্ঞতা তাঁকে বুঝিয়ে দিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী হওয়া তো দূর, বড় মাপের রাজনীতি তাঁর ধাতেই নেই। “আমি জানি না ঈশ্বর আমাকে কী উদ্দেশ্যে এই পথে এনেছেন। কিন্তু এটা কোনও মহান আত্মত্যাগের জীবন নয়। আমি এটা নিজের জন্য চাই না, আর কারও জন্যও চাই না,”—এই ছিল তাঁর স্পষ্ট বার্তা।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের জুনে মাণ্ডি থেকে লোকসভায় জিতে সাংসদ হয়েছেন কঙ্গনা। তারও আগে একাধিকবার নানা জাতীয় ইস্যুতে সরব হয়েছেন, কিন্তু রাজনীতির বাস্তবতা তাঁকে শুধুই হতবাক নয়, হয়রান-ও করেছে।
অন্যদিকে, সিনেমার পর্দায় তিনি আবার ফিরছেন ‘তনু ওয়েডস মনু’-খ্যাত সহ-অভিনেতা আর. মাধবনের সঙ্গে একটি সাইকোলজিক্যাল থ্রিলারে। রাজনীতি নয়, আপাতত ক্যামেরার লেন্সেই কঙ্গনার মন পড়ে আছে—সেই ইঙ্গিত স্পষ্ট!
