আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্বামীর অবর্তমানে ভাড়াটে যুবকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ছিল স্ত্রীর। দিনভর গল্প, আড্ডার সুযোগে কখন থেকে একে অপরের প্রেমে পড়েছিলেন, তা টের পাননি। ধীরে ধীরে শারীরিক সম্পর্কেও লিপ্ত হননি। সবটাই চুপিসারে হচ্ছিল। 

হঠাৎ একদিন বিপদের কালো মেঘ ঘনায়। ভাড়াটে যুবকের সঙ্গে স্ত্রীকে উদ্দাম যৌনতায় লিপ্ত হতে দেখে ফেলেন স্বামী। সেদিন অফিস থেকে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরেছিলেন তিনি। পা টিপে ঘরের দরজা আলতো করে খুলেই ভাড়াটে যুবকের সঙ্গে স্ত্রীকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেন প্রৌঢ়। ব্যস! এরপরই রাগের মাথায় নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ছক কষে ফেলেন তিনি। 

আগেই স্ত্রীর সঙ্গে ভাড়াটে যুবকের ঘনিষ্ঠতা তাঁর নজরে পড়েছিল। সন্দেহ করেছিলেন বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কটি নিয়ে। হাতেনাতে ধরার অপেক্ষাতেও ছিলেন। অবশেষে স্ত্রীর কেচ্ছা চাক্ষুষ করেই চরম পদক্ষেপ করলেন তিনি। ভাড়াটে যুবককে জ্যান্ত কবর দিলেন তিনি। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে হরিয়ানার রোহতাকে। পুলিশ জানিয়েছে, হরদীপ নামের অভিযুক্ত ব্যক্তি ভাড়াটে যুবকের সঙ্গে স্ত্রীকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখে ফেলেছিলেন। এরপর তালিবান স্টাইলে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটান। যুবককে জ্যান্ত কবর দেন তিনি। এই হত্যাকাণ্ডে তাঁকে সাহায্য করেছিলেন তাঁর এক বন্ধুও। 

পুলিশ আরও জানিয়েছে, খুনের ঘটনাটি আদতে ঘটেছিল গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর। মৃত যুবকের নাম, জগদীপ। তিনি হরিয়ানার রোহতাকের বাবা মাস্তনাথ ইউনিভার্সিটির যোগা প্রশিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। এই এলাকাতেই হরদীপের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। বাড়িওয়ালার স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। 

আরও পড়ুন: ভেজা রাস্তায় পিছলে গেল গাড়ি, গভীর খাদে হুড়মুড়িয়ে গড়িয়ে পড়ল, কাশ্মীরে যাত্রীদের মর্মান্তিক পরিণতি

বিষয়টা জানাজানি হতেই জগদীপকে খুনের পরিকল্পনা করেন হরদীপ। ২৪ ডিসেম্বর জগদীপকে অপহরণ করেন অভিযুক্ত ব্যক্তি ও তাঁর বন্ধু। এরপর তাঁর হাত, পা বেঁধে দেন। মুখে টেপ লাগিয়ে দেন। যাতে কেউ চিৎকারের শব্দ শুনতে না পান। সেই অবস্থায় কয়েক কিলোমিটার দূরে চাখরি দাদরি এলাকায় পৌঁছে তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন দু'জনে। 

আগে থেকেই ওই এলাকায় মাটি খুঁড়ে রেখেছিলেন অভিযুক্তরা। তারপর সাত ফুট গভীর গর্ভে জীবন্ত অবস্থায় জগদীপকে পুঁতে দেন। বিষয়টি লুকিয়ে রেখেছিলেন তাঁরা। দীর্ঘদিন ইউনিভার্সিটিতে অনুপস্থিত ছিলেন জগদীপ। তা থেকেই রহস্য ঘনায়। থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। 

পুলিশ জানিয়েছে, ৩ জানুয়ারি জগদীপের নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছিল। কিন্তু তিন মাস ধরে খুঁজেও তাঁর সন্ধান পায়নি পুলিশ। এরপর জগদীপের ফোনের লোকেশন ও তথ্য খতিয়ে দেখে পুলিশ। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের বিষয়ে জানতেই হরদীপ ও তাঁর স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে তারা। 

একটানা দীর্ঘ জেরায় হরদীপ জানান, তিনিই জগদীপকে জীবন অবস্থায় মাটিতে পুঁতে দিয়েছিলেন। এই কাছে তাঁকে সাহায্য করেছিলেন এক বন্ধু। স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের বিষয়টি জানতে পেরেই জগদীপকে খুনের পরিকল্পনা করেছিলেন বন্ধুর সঙ্গে মিলে। তাঁকে অপহরণ করে, মাটির তলায় পুঁতে দেন। 

তল্লাশি অভিযান চালিয়ে সেই এলাকা থেকে জগদীপের কঙ্কাল উদ্ধার করে পুলিশ। গত ২৪ মার্চ জগদীপের কঙ্কাল উদ্ধার করে তারা। এই ঘটনায় হরদীপ ও তাঁর বন্ধুকে গ্রেপ্তার করে তদন্ত জারি রেখেছে পুলিশ। ঘটনায় মামলা রুজু করে এখনও চলছে তদন্ত।