আজকাল ওয়েবডেস্কঃ আজকাল অল্প বয়সেই হানা দিচ্ছে ডায়াবেটিস। আসলে সময়ের সঙ্গে বদল এসেছে আমাদের জীবনধারায়। শরীরচর্চার অভাব, অনিয়ন্ত্রিত খাওয়াদাওয়া, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা জাঁকিয়ে বসেছে কম-বেশি সকলের জীবনে। যার প্রভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে রক্তে শর্করার ভারসাম্য। আর ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে ঝুঁকি বাড়ে শরীরে আরও অনেক জটিলতার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট বলছে, ভারতে ২০ বছর থেকে ৭০ বছর বয়সিদের প্রায় ৮.৭ শতাংশ মানুষ ডায়াবেটিক। শিশুদের মধ্যেও ডায়াবেটিস মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে। এখানেই প্রশ্ন আসে, বাবা-মায়ের ডায়াবেটিস থাকলে কি সন্তানেরও হতে পারে? যদিও নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয় যে বাবা-মা, কিংবা পরিবারের অন্য কারও মধুমেহর সমস্যা থাকলে আপনারও তা হবেই। তবে এক্ষেত্রে আগে থেকে সতর্ক হওয়া উচিত। 

রিস্ক ফ্যাক্টর কখন

•    চিকিৎসকদের একাংশের মতে, টাইপ ১ ডায়াবেটিস আসলে একটি বংশগত রোগ। অগ্ন্যাশয় বা প্যাংক্রিয়াস ওই রোগে কিছুতেই ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না। ফলে এই ধরনের ডায়াবেটিস প্রতিরোধের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন রোগীরা। বংশগত বলে শৈশব থেকেই এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। তবে ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রেই যে ডায়াবেটিস হয়, সেটা টাইপ ২। অনিয়মিত খাদ্যাভাস, শরীরচর্চার অভাব সহ নানা কারণ এই রোগের রিস্ক-ফ্যাক্টর।

 

আরও পড়ুনঃ রান্নাঘরে আর্থ্রাইটিসের 'অব্যর্থ' ওষুধ! ছোট্ট এই দানার গুণেই মিলবে শরীরের যাবতীয় ব্যথা-বেদনা থেকে স্বস্তি

 

•    গর্ভাবস্থার আগে থেকে অনেক সময়ে হবু মায়ের ডায়াবেটিস থাকে। হঠাৎ গর্ভবতী হওয়ার পর রুটিন পরীক্ষায় তা ধরা পড়ে। হবু মায়ের সুগার বেশি থাকলে গর্ভস্থ সন্তানের নানা রকম জন্মগত ত্রুটি দেখা দেওয়ার আশঙ্কা থাকে৷

•    যদি হবু মায়ের ওজন ও বয়স বেশি হয় তাহলেও প্রথম সন্তান জন্মের সময় গর্ভাবস্থায় রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে ডায়াবেটিস হতে পারে। আরও একধরনের ডায়াবেটিস হয় যার নাম জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস। গর্ভাবস্থার শেষের দিকে রক্তে সুগার লেভেল বেড়ে যেতে পারে। মায়ের জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস হলে, তাঁর সন্তানদের পরবর্তীকালে স্থূলতা ও টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা থাকে৷ 


কী কী লক্ষণ দেখলে সতর্ক হবেন

রক্তে ব্লাড সুগারের মাত্রা বাড়লে অত্যধিক ঘাম হতে পারে। সঙ্গে জলতেষ্টাও বেশি অনুভব হতে পারে। এছাড়াও ঘন ঘন প্রস্রাব, খিদে না পাওয়া, অল্পতেই ক্লান্তভাব, হাত-পায়ে ঝিঁঝি বা অবশ হয়ে গেলে, দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে গেলে, মহিলাদের অনিয়মিত ঋতুস্রাব ইত্যাদিও ডায়াবেটিসের লক্ষণ হতে পারে। 


ডায়াবেটিসকে বশে রাখতে কী কী মেনে চলবেন

•    ডায়েটের দিকে নজর দিন। বেশি মিষ্টি জাতীয় খাবার খাবেন না। নরম পানীয়, ভাজাভুজি বা প্রক্রিয়াজাত খাবার বাদ দিতে পারলেই ভাল। খাদ্যতালিকায় বেশি করে রাখতে হবে ফল, শাকসবজি সহ ফাইবার জাতীয় খাবার।

•    ওজন কোনওভাবেই বাড়তে দেওয়া চলবে না। আর যতই ব্যস্ততা থাকুক দিনে অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটাহাঁটি কিংবা ঘাম ঝরে এমন এক্সারসাইজ করা জরুরি। সারাদিন শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকুন। 

•    মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। শরীরে স্ট্রেস হরমোন বেড়ে গেলে শর্করা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই মানসিকভাবে দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে হবে। 

•    প্রতিটি খাবারের মধ্যে ৪–৫ ঘণ্টার ব্যবধান দরকার। ওই উপবাসের সময় গ্লুকোজ প্রক্রিয়া করে। এবং অপ্রয়োজনীয় স্পাইক প্রতিরোধ করে। একইসঙ্গে অনেকটা ভরপেট খাওয়াও এড়িয়ে চলুন। 

•    সূর্যের আলোতে ভরপুর মাত্রায় ভিটামিন ডি রয়েছে। আর শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি দেখা দিলে ইনসুলিনের মাত্রা বেড়ে যায়। তাই ভিটামিন ডি পর্যাপ্ত আছে কিনা রক্ত পরীক্ষা করে দেখে নিতে পারেন।