RD | ০১ জুন ২০২৫ ১১ : ১৫Rajit Das

আজকাল ওয়েবডেস্ক: ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে বিস্ফোরক তথ্য ফাঁস হয়েছে। যা নিয়ো তোলপাড় গোটা বিশ্বে। জাতিসংঘের আণবিক শক্তি সংস্থা-আইএইএ-এর গোপন এক প্রতিবেদন অনুসারে, তেহরান পারমাণবিক বোমা তৈরির জন্য উপযুক্ত অস্ত্র-গ্রেড ইউরেনিয়ামের মজুদ বাড়িয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ইরানের কাছে এখন পর্যাপ্ত ইউরেনিয়ামের মজুদ রয়েছে, যা সামান্য বৃদ্ধি করলেই পারমাণবিক বোমা তৈরি সম্ভব। জানা গিয়েছে যে, বর্তমানে ইরানের কাছে ৬০ শতাংশ ইউরেনিয়াম মজুদ রয়েছে, যা অস্ত্র-গ্রেডের (৯০ শতাংশ) খুব কাছাকাছি।

এছাড়াও এমন খবরও রয়েছে যে, ইরান তার আকাশসীমা বন্ধ করে একটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাতে পারে। কিন্তু ইরান কি সত্যিই পারমাণবিক বোমা পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে? এটা এতই সহজ?

আইএইএ-এর অবস্থান:

আইএইএ স্পষ্টভাবে বলেছে যে, ইরানকে অবিলম্বে এটি বন্ধ করতে হবে। ইরান বারবার পারমাণবিক সরঞ্জাম পর্যবেক্ষণের বিষয়টি সীমিত করে রেখেছে। ফলে সংস্থাটির পক্ষে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচির সত্যতা যাচাই করা কঠিন হয়ে পড়েছে। 

এদিকে, ইরান দাবি করেছে যে তাদের উদ্দেশ্য কেবল শক্তি এবং চিকিৎসার উদ্দেশ্যে এটি ব্যবহার করা, পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করা নয়। 

মার্কিন বিদেশ সচিব জানিয়েছেন যে, যদি ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচি প্রকাশ না করে, তাহলে তার উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। ইজরায়েল এটিকে তার অস্তিত্বের জন্য হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং সামরিক বিকল্পগুলি নিয়ে আলোচনা করেছে।

অস্ত্র-গ্রেড ইউরেনিয়াম:

ইউরেনিয়াম একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা পারমাণবিক শক্তি উৎপাদন এবং পারমাণবিক অস্ত্র উভয়ের জন্যই ব্যবহৃত হয়। ইউরেনিয়ামের সমৃদ্ধকরণের বিভিন্ন স্তর রয়েছে। সাধারণত, বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী পারমাণবিক চুল্লির জন্য তিন থেকে পাঁচ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম যথেষ্ট। তবে, পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে, ইউরেনিয়ামকে প্রায় ৯০ শতাংশ সমৃদ্ধ করতে হবে, যাকে অস্ত্র-গ্রেড ইউরেনিয়াম বলা হয়। আইএইএ-এর একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ইরান প্রায় ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ বাড়িয়েছে, যা অস্ত্র-গ্রেডের খুব কাছাকাছি। এর অর্থ হল ইরান দ্রুত পারমাণবিক বোমা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল পেতে পারে।

ইরানের পদক্ষেপ কতটা ভয়ের? 

৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম অস্ত্র-গ্রেডের চেয়ে অনেক কম, তবে এটিকে খুবই উদ্বেগজনক স্তর হিসাবে বিবেচনা করা হয়। কারণ এটিকে অস্ত্র-গ্রেডে রূপান্তর করতে কম সময় এবং সম্পদ লাগে। এই স্তরের পরে, ইরান যদি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির দিকে এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তবে মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তারা পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে পারবে। এর সরাসরি অর্থ হল ইরান যদি চায়, তবে তারা কেবল পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিই নয়, সামরিকভাবে তার পারমাণবিক ক্ষমতাধর হয়ে উঠবে। যা আঞ্চলিক এবং বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তার জন্য বিরাট ঝুঁকির বলেই মনে করা হচ্ছে।