শনিবার ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪
সম্পূর্ণ খবর
AA | ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ১৯ : ০৫Rishi Sahu
কৌশিক রায়:বেহালার পর্ণশ্রীর বাসিন্দা ছোট্ট শ্রাবণেন্দু।
২ বছর বয়স হয়ে যাওয়ার পরেও সে কথা বলতে পারত না। শ্রাবণেন্দুর বাবা শুভ্রস্বত্ত্ববাবু জানালেন, ছোটবেলায় তিনি এবং তাঁর স্ত্রী অফিস চলে গেলে শ্রাবণেন্দুকে দেখাশোনার জন্য একজনকে রাখা হয়েছিল। তাছাড়া থাকত তাঁর দাদু, দিদা। বর্তমানে ৭ বছর বয়স শ্রাবণেন্দুর। সে কথা বলতে শিখেছে অনেক দেরিতে। এমনকি, ছেলেকে কথা বলানোর জন্য শুভ্রস্বত্ত্ববাবুকে পরামর্শ নিতে হয়েছে চিকিৎসকের। কিন্তু মা–বাবার সঙ্গে বাচ্চাদের কম সময় কাটানোটা যে কত বড় ক্ষতি হতে পারে তার অন্যতম উদাহরণ বাচ্চাদের দেরিতে কথা বলা। দেড় বছরের জায়গায় তিন বছরেও কথা বলতে পারছে না শিশুরা। সাধারণত একটি বাচ্চা দু’বছর বয়সে ২৫০–৩০০ শব্দ বলার ক্ষমতা রাখে। এর ব্যতিক্রম হলে যদি সঙ্গে সঙ্গে থেরাপিস্টের পরামর্শ নেওয়া হয় তবে ৬ মাসের মধ্যেই বাচ্চাটিকে কথা বলানো সম্ভব বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। কলকাতার এক বেসরকারি স্পিচ থেরাপি সংস্থার চিকিৎসক সোমনাথ মুখার্জি জানালেন, ‘গত দু’বছরে এই ধরনের রোগের সমস্যা বেশি বেড়েছে। এই ধরনের সমস্যা নিয়ে স্পিচ থেরাপি সেশনে প্রতিদিন যোগ দেয় পঞ্চাশের ওপর বাচ্চা এবং তাদের মা–বাবা।’ সোমনাথ বাবু জানান, ঠিক সময়ে যদি শিশুকে নিয়ে আসা হয় তাহলে স্পিচ থেরাপির এক একটি সেশন শেষ হতে সময় লাগে মূলত ৬ মাস। বাচ্চার কানে শোনার অসুবিধা থাকলে কথা বলতেও দেরি হয় তার। এই সমস্যাকে বলা হয় ‘হিয়ারিং ইমপ্যাক্ট’। এক্ষেত্রে আগে বাচ্চাদের শব্দ বোঝানো হয়। একে বলা হয় ‘অডিটরি ট্রেনিং’। তারপর আস্তে আস্তে শুরু হয় স্পিচ থেরাপি। অনেক বাচ্চা আছে যারা ছোট থেকে নিজের মত করে থাকতে চায়, একা থাকতে চায়। বাবা–মা সকালে কাজে চলে যাচ্ছেন। তারপর সারাদিন একা থাকতে থাকতে এই ধরনের সমস্যা হচ্ছে বাচ্চাদের। এই সমস্যায় আগে বাচ্চার সাইকোলজিকাল পরীক্ষা করেন চিকিৎসকরা। তারা কী খেতে ভালবাসে, কী নিয়ে খেলতে ভালবাসে সেই ব্যাপারগুলো লক্ষ্য করা হয়। ছবি আঁকিয়ে, রং করিয়ে, খেলনা দিয়ে বাচ্চার মনঃসংযোগ তৈরি এক্ষেত্রে প্রধান কাজ। কখনও পরিবারের কারোর ছবি দেখানো হয় যাতে করে বাচ্চারা যাদের সব থেকে বেশি সময় দেখে, তাদের দেখে শান্ত হয়ে বসতে পারে। চিকিৎসকদের বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ এই ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যেক সেশনে চিকিৎসকরা কী কী করছেন সেগুলো শেখানো হয় বাচ্চার পরিবারকেও। বাড়িতে গিয়ে বাচ্চার সঙ্গে তাঁরা যাতে সেইভাবে মিশতে পারেন।
তবে এই ধরনের স্পিচ থেরাপি যথেষ্ট ব্যয়সাপেক্ষ। তাই সব স্তরের মানুষ এর সুযোগ নিতে পারেন না। কিন্তু দিনদিন যেভাবে বাড়ছে বাচ্চাদের সময়ে কথা না বলার সমস্যা, তাতে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে আরও ব্যাপকভাবে স্পিচ থেরাপির সুযোগ তৈরি হআরও পড়ুন:গাড়ি থামিয়ে শৌচকর্ম করতে যেতেই বিপত্তি, মার্সিডিজ চুরি করে পালাল দুষ্কৃতীরা
ওয়া জরুরি।