জীবনে সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছেছেন। তবু দিল্লিতে বেড়ে ওঠা বলিউড অভিনেত্রী কৃতি স্যাননের একটি বড় আক্ষেপ আছে—তিনি কোনওদিন প্রকৃত ক্যাম্পাস লাইফ উপভোগ করতে পারেননি। নিজের কলেজ-জীবন নিয়ে কথা বলতে গিয়ে কৃতি জানান, “আমি জেপি ইনস্টিটিউট অফ ইনফরমেশন টেকনোলজিতে পড়েছি। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের নর্থ ক্যাম্পাসের সেই আলাদা কলেজ-ফিল আমি কোনওদিন পাইনি। সে কারণে নিজের বোন নুপূরের উপর খুবই হিংসা হত। ওর ছিল সেই নির্ভার কলেজ-জীবন, আর আমাকে ইউনিফর্ম পরে, প্রায় পাগলের মতো পড়াশোনা করতে হত, নয়ডায় ইঞ্জিনিয়ারিং করতে গিয়ে। তাই আমি সত্যিই সেই কলেজ-লাইফটা মিস করেছি।”

তবে কৃতির মতে, তাঁর সেই অপূর্ণ স্বপ্নটি পূরণ হয়েছে ‘তেরে ইশ্‌ক মেঁ’ ছবিতে মুক্তির চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে। দিল্লিতে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “আনন্দ স্যর যখন বললেন আমরা ডিইউতে শুট করব, আমি ভীষণ উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েছিলাম। কারণ আমি কখনও সেই কলেজ-জীবন দেখিনি। আমার একটা পুরনো স্বপ্ন তখন যেন পূরণ হয়ে গেল।”

রাজধানীতে শুটিং করতে এসে জমিয়ে খেয়েছেন দিল্লির নানা খাবারও। কৃতির কথায়, “দিল্লিতে সব ধরনের অনুভূতি আছে… এখানে শুট করতে করতে মনে হয়েছিল যেন নিজের বাড়িতেই আছি।”
তিনি জানান, শুটিংয়ের সময় ইউনিটের মধ্যে কে কোথা থেকে ভাল খাবার এনে খাওয়াবে—তা নিয়ে নীরব প্রতিযোগিতাও চলত।

পরিচালক আনন্দ এল. রাই জানান, ‘রাঞ্ঝনা’ ও ‘তেরে ইশক মে’-এর যোগসূত্র ধারাবাহিকতার জন্য নয়, বরং ব্যক্তিগত বেড়ে ওঠার যাত্রা। তাঁর কথায়,“প্রতিটি দশকে মানুষ বদলায়। কুন্দন বা শঙ্করের মধ্যে যে গুণগুলো দেখা যায়, তা আসলে আমার আর হিমাংশুর (হিমাংশু শর্মা, লেখক) নিজেরই প্রতিফলন। এটি আমাদের যাত্রার গল্প।”

কৃতি জানান, মুক্তির চরিত্রকে তিনি সম্পূর্ণ আলাদা এবং স্বতন্ত্র হিসাবে ধরেছেন। “এটা সম্পূর্ণ ভিন্ন গল্প। আমার মাথায় ‘রাঞ্ঝনা’ ছিল না। মুক্তির চরিত্রে এক বিশেষ আবেগের গভীরতা ছিল, যা আমাকে খুব টানত,” বলেন তিনি।

নায়িকা আরও যোগ করেন, “হিমাংশুর লেখা চরিত্রগুলো সাধারণত জটিল, একেবারে কালো বা সাদা নয়। তাদের মাঝে একটা ধূসর শেড থাকে, যা অভিনেতার জন্য খুবই চ্যালেঞ্জিং ও রোমাঞ্চকর।”

ধনুষ জানান, ভাষা কখনও তাঁর সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলে না। তাঁর কথায়, “আমি শুধু স্ক্রিপ্ট দেখি। আনন্দ স্যরের প্রস্তাবে তো সম্পূর্ণ গল্প শোনার আগেই রাজি হয়ে গিয়েছিলাম। ওঁকে ‘না’ বলা খুব কঠিন।”

ছবিতে কৃতি মুক্তির ভূমিকায়, আর ধনুশ শঙ্কর চরিত্রে—এক উগ্র, নিয়মভাঙা যুবক, যার সঙ্গে মুক্তির প্রেম জমে ওঠার আগেই পরিস্থিতি তাদের আলাদা করে দেয়। হৃদয়ভঙ্গের যন্ত্রণায় বিধ্বস্ত শঙ্কর প্রতিশোধস্পৃহায় জ্বলে ওঠে, আর ঠিক করে তার ভেঙে যাওয়া প্রেমের জন্য ‘গোটা দিল্লিকে জ্বালিয়ে দেবে’।

২০১৩ সালের ‘রাঞ্ঝনা’র দশ বছর পূর্তিতে প্রথম ঘোষণা করা হয় ‘তেরে ইশ্‌ক মেঁ’-এর। আনন্দ এল. রাই পরিচালিত এই ছবি মুক্তি পাবে ২৮ নভেম্বর।