মঙ্গলবার ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পূর্ণ খবর

উত্তর সম্পাদকীয় | চারটি উপনির্বাচন প্রসঙ্গে

AM | | Editor: Arijit Mondal ০৫ জুলাই ২০২৪ ০১ : ১৫Arijit Mondal

শমিত ঘোষ
লোকসভা নির্বাচনের পর্ব মিটতে না মিটতেই রাজ্যে আবার ভোট! আপাতদৃষ্টিতে উপনির্বাচনে শাসক দলের পক্ষেই হাওয়া থাকে। কিন্তু, আগামী ১০ তারিখ অনুষ্ঠিত হতে চলা, চার কেন্দ্রের উপনির্বাচন কিন্তু নানা কারনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শাসক তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি দুই দলের কাছেই এই চারটি কেন্দ্রের নির্বাচন আলাদা তাৎপর্য বহন করছে। বিজেপির কাছে যেমন বাগদা, রানাঘাট দক্ষিণ, রায়গঞ্জ ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ। তেমনই রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের কাছে কার্যত প্রেস্টিজ ফাইট! কারণ, লোকসভায় এরাজ্যে ২৯ টি আসন পাওয়ার পরে তৃণমূল কংগ্রেস স্বাভাবিকভাবেই চাইবে তাদের জয়ের 'মোমেন্টাম'টা ধরে রাখতে। ১০ তারিখের নির্বাচনের ফল বেড়োবে ১৩ ই জুলাই। তার ৮ দিনের মাথাতেই তৃণমূল কংগ্রেসের বাৎসরিক 'মেগা ইভেন্ট' ২১শে জুলাই। স্বাভাবিক ভাবেই তৃণমূল কংগ্রেস চাইবে নিজেদের জয়ের ধারা কে অক্ষুন্ন রেখেই ২১শে জুলাই পালনে মন দিতে! 
রাজনীতির সাধারণ হিসেব বলে, রাজ্যের ক্ষমতাসীন দলই সাধারণত উপনির্বাচনে জেতে। কিন্তু দেড় বছর আগের সাগরদিঘী উপনির্বাচনের ফলাফলের তিক্ত অভিজ্ঞতা এখনো শাসক তৃণমূলের কাছে টাটকা। কংগ্রেসের প্রার্থী বাইরন বিশ্বাসের কাছে সেবার হার স্বীকার করতে হয়েছিলো তৃণমূল প্রার্থীকে। ফলে, এই চার উপনির্বাচন নিয়ে কোনো রকম ঝুঁকি নিচ্ছে না তৃণমূল কংগ্রেস। কারণ, চারটি আসনের তিনটিতেই সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনেও এগিয়ে বিজেপি। এমনকি ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় চারটি বিধানসভাতেই নিজেদের ভোট বাড়াতে সক্ষম হয়েছে বিজেপি। কৃষ্ণ কল্যানী, মুকুটমনি অধিকারী, বিশ্বজিৎ দাস'রা দুহাজার একুশের নির্বাচনে বিজেপি'র টিকিটে যত ভোটে জিতেছিলেন, দু'হাজার চব্বিশে দল বদলে তৃণমূলের টিকিটে নিজেদের নির্বাচিত বিধানসভাতেই অনেক বেশী ভোটে হেরেছেন! মানিকতলায় ২০২১ সালে বিজেপি পেয়েছিলো ৪৭,৩৩৯ টি ভোট। ২০২৪ এ সেই মানিকতলাতেই বিজেপি পেয়েছে ৬৩,৩৮৯ টি ভোট! অর্থাৎ খাস কলকাতাতেও ভোট বাড়িয়েছে বিজেপি।

আসন্ন উপনির্বাচনে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ 'ফ্যাক্টরে'র দিকে তাকিয়ে। যার মধ্যে অন্যতম হলো, রাজ্য বিজেপি'তে শুভেন্দু-সুকান্ত জুটির ভবিষ্যত! সুকান্ত মজুমদার যতই বিভিন্ন জায়গায় দাবী করুন, লোকসভায় আসন কমলেও বিধানসভা ভিত্তিক ফলে বিজেপি ২০২১ এর তুলনায় ভালো ফল করেছে।(২০২১ এ বিজেপির আসন সংখ্যা ছিলো ৭৭। ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে বিধানসভা ভিত্তিক ফলে বিজেপি এগিয়ে ৯০ টি মতো আসনে)। আদতে, ২০২১ এবং ২০২৪ এর নির্বাচন এক নয়। ২৪ এর নির্বাচন ছিলো দেশের নির্বাচন। সেখানে নরেন্দ্র মোদি ছিলেন একটি গুরুত্বপূর্ণ 'ফ্যাক্টর'৷ এছাড়া দেশের নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটা বড় অংশের মানুষ একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে বিজেপি'কে ভোট দিয়েছিলেন। কারন, বিজেপির দিক থেকে লাগাতার প্রচার ছিলো, মোদি'র সমতুল্য বিপক্ষ জোটের মুখ কে? বিপক্ষ 'ইন্ডিয়া' জোটের 'মুখ' কেউ ছিলেননা! রাজ্যের নির্বাচনের ক্ষেত্রে কিন্তু, এই সমীকরণটাই পুরো উল্টে যায়! কারণ এক্ষেত্রে রাজ্যের শাসক দলের কাছে একজন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আছেন৷ যার সমতুল্য কোনো মুখ এখনো রাজ্য রাজনীতিতে কাউকে দেখা যাচ্ছেনা! ফলে বিধানসভা নির্বাচনে এই 'অ্যাডভ্যান্টেজ'টা পুরোপুরি পায় তৃণমূল কংগ্রেস। শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদারদের কাছে এই উপনির্বাচনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এখন এই তিনটি আসন এবং মানিকতলায় গত দু'টি নির্বাচনের ভোট ধরে রাখা। ধূপগুড়ি উপনির্বাচনে নিজেদের জেতা আসন বিজেপিকে হারাতে হয়েছে। রায়গঞ্জ, রানাঘাট দক্ষিণ, বাগদায় যদি বিজেপি হারে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্ব নিয়ে কিন্তু স্বাভাবিকভাবেই আরো প্রশ্ন উঠবেই! আর সেই প্রশ্নটা উঠবে বিজেপির অন্দরেও!

এই উপনির্বাচনের আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো মতুয়া ভোট কোন দিকে? ৪টি আসনের মধ্যে বাগদা এবং রানাঘাট দক্ষিণে মতুয়া ভোটাররাই নির্নায়ক শক্তি। সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে বাগদায় ২০,৬০০ এবং রানাঘাট দক্ষিণে প্রায় ৪০,০০০ হাজার ভোটে এগিয়ে বিজেপি৷ লোকসভার ফলেও স্পষ্ট, মতুয়া অধ্যুষিত বনগাঁ এবং রানাঘাট দুটি লোকসভা আসনেই মতুয়াদের সিংহভাগ বিজেপি'কে ভোট দিয়েছে। তার অন্যতম কারণ হতে পারে, লোকসভা নির্বাচনের একদম আগেই কেন্দ্রীয় সরকারের সি-এ-এ'র মাধ্যমে নাগরিকত্ব প্রদানে মতুয়ারা প্রভাবিত হয়েছেন। যদিও এখনো অবধি নাগরিকত্বের জন্য আবেদনের সংখ্যা অত্যন্ত নগন্য। তবুও একথা বলাই যায়, যে সি-এ-এ মতুয়াদের মধ্যে প্রভাব ফেলেছেই। এবং কার্যত ২০১৯ থেকেই যে মতুয়া ভোট পদ্মমুখী, সেই 'ট্রেন্ড' একই রকম বহাল থেকেছে লোকসভা নির্বাচনেও। 

খানিক এর পুরস্কার স্বরূপই বোধহয়, তৃতীয় নরেন্দ্র মোদি সরকারে যে দু'জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পেয়েছে বাংলা, তাদের একজন মতুয়া ঠাকুর বাড়ির শান্তনু ঠাকুর। মতুয়া ভোটের ক্ষেত্রে ঠাকুর বাড়ি যে এখনো শেষ কথা, তা জানেন বিজেপি'র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব জানেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বড়মা বীনাপানি দেবী যত দিন বেঁচে ছিলেন, তাঁর স্নেহধন্যা ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মতুয়ারাও সেই সময় ঢেলে ভোট দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসকে। বড়মা বীনাপানি দেবীর প্রয়ানের পরে, একদা উত্তর ২৪ পরগণার তৃণমূল কংগ্রেসের প্রভাবশালী নেতা বর্তমানে জেলবন্দি এক নেতার সঙ্গে প্রথম দ্বন্দ্ব শুরু হয় ঠাকুর পরিবারের মঞ্জুল কৃষ্ণ ঠাকুর এবং তাঁর পুত্র শান্তনু ঠাকুরদের। সেই দ্বন্দ্ব আজও মেটেনি। বড়মায়ের আরেক পুত্র কপিল কৃষ্ণ এক সময় ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ। কপিল কৃষ্ণের অকাল প্রয়ানের পরে তাঁর স্ত্রী মমতাবালা ঠাকুরকেও তৃণমূলের টিকিট দিয়ে সাংসদ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, মতুয়া সমাজের গোঁসাই-দলপতি-পাগলদের একটা অংশের অভিযোগ, মতুয়া মহাসঙ্ঘে মমতা বালা ঠাকুর তেমন প্রভাব কোনো দিনই বিস্তার করতে পারেননি। মমতাবালা ঠাকুরের সঙ্গে শান্তনু ঠাকুরের দ্বৈরথ অত্যন্ত চর্চিত। শান্তনু ঠাকুরদের অভিযোগ, মমতাবালা ঠাকুর শুধুই ঠাকুর পরিবারের পুত্রবধূ। তাঁর সঙ্গে সরাসরি কোনো রক্তের সম্পর্ক নেই। তিনি, হরিচাঁদ ঠাকুর, গুরুচাঁদ ঠাকুরের সরাসরি বংশধর নন! শান্তনু ঠাকুরদের আরো অভিযোগ, মমতাবালা ঠাকুর দীর্ঘদিন ঠাকুর বাড়িতে থাকেনইনি৷ তিনি আলাদা থাকতেন। এই অভিযোগের কি কি সারবত্তা আছে, তা বলা কঠিন। তবে ভোট রাজনীতিতে মমতাবালাকে হারিয়েছেন শান্তনু ঠাকুর। এমনকি গত লোকসভা নির্বাচনের সময়ে, তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস'কে 'নকল মতুয়া' বলেও কটাক্ষ করেছেন শান্তনু ঠাকুর-সুব্রত ঠাকুর'রা। হরিচাঁদ ঠাকুর -গুরুচাঁদ ঠাকুরের সরাসরি বংশধর এই পরিচয়ে এক আত্মশ্লাঘা অনুভব করেছেন বরাবর শান্তনু-সুব্রত'রা। আর এইখানেই তৃণমূল নেত্রীর মাস্টারস্ট্রোক! হরিচাঁদ ঠাকুর - গুরুচাঁদ ঠাকুরের সরাসরি বংশধর পঁচিশ বছর এক মাস বয়সী মধুপর্ণা ঠাকুর (কপিলকৃষ্ণ-মমতাবালা'র কন্যা)কেই বাগদায় প্রার্থী করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। অর্থাৎ সরাসরি ঠাকুর পরিবারের মেয়ে আবারো তৃণমূলের প্রার্থী। লোকসভা নির্বাচনের ক'দিন আগে বড়মা বীনাপানি দেবী'র ঘরে তালা দেওয়া নিয়ে তীব্র বিতন্ডায় বড়মার ঘরের সামনে ধর্নায় বসে প্রথম খবরের শিরোনামে আসেন মধুপর্ণা।সেই মধুপর্ণার ওপরই বাজি ধরেছে তৃণমূল। পার্থক্য ২০ হাজারের সামান্য কিছু বেশী ভোটের। পারবেন মধুপর্ণা? পারলেই দেশের কনিষ্ঠতম বিধায়ক হিসেবে রেকর্ড গড়বেন! তাঁর উল্টোদিকে বিজেপি প্রার্থী করেছে শান্তনু ঘনিষ্ঠ বিনয় কুমার বিশ্বাস কে। যদিও বিনয় কে প্রার্থী করা নিয়ে দলের অন্দরেই তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে! পাল্টা নির্দলে দাঁড়িয়ে গেছেন বিজেপিরই বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর নেতা সত্যজিৎ মজুমদার! বাম কংগ্রেসের জোটও হয়নি এই আসনে। কংগ্রেসের সাথে সাথে ফরোয়ার্ড ব্লকও প্রার্থী দিয়েছে বাগদায় । সব মিলিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনের সাক্ষী হতে চলেছে এই 'মতুয়াগড়'। 

একইরকমভাবে রানাঘাট দক্ষিণেও মতুয়া ভোটই ঠিক করবে এই বিধানসভার প্রার্থীর ভাগ্য। মুকুটমনি অধিকারী লোকসভাতে হারলেও তার ওপরেই ফের একবার ভরসা রেখেছে তৃণমূল। মুকুটমনির কাছে বড় চ্যালেঞ্জ নিজের হারানো আসন পুনরূদ্ধার করার। রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার এই আসনে ৩৯,৯০০ ভোটে লিড নিয়েছেন কয়েকদিন আগেই। বিজেপির প্রার্থীও জগন্নাথ ঘনিষ্ঠ মনোজ বিশ্বাস। এই আসনে যদি তৃণমূল জেতে, তবে নদীয়া জেলা, বিশেষত রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের জন্য তা খানিকটা স্বস্তির হবে। এমনিতেই রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেস দীর্ঘদিন ধরেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দীর্ণ। স্থানীয় সাধারণ মানুষের অভিযোগ, রানাঘাট সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল নেতারা স্রেফ নিজেদেরটা গোছাতে ব্যস্ত! পঞ্চায়েত বা পৌরসভায় এখানে নিজেদের আসনগুলো নেতারা জিতে নেন। কিন্তু, লোকসভা এবং বিধানসভায় দল চূড়ান্ত ব্যর্থ হয় বারবার! রানাঘাট সাংগঠনিক জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের এই 'পারফরম্যান্সে' যে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে দলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিরক্ত, তা একাধিকবার প্রকাশ্যে এসেছে। এখন দেখার যে রানাঘাট দক্ষিন কেন্দ্রটি জিতে বিজেপির মতুয়া ভোটে ভাগ বসাতে পারে কিনা তৃণমূল! 

বাকী দু'টি আসনের মধ্যে রায়গঞ্জ আসনটিতেও বিজেপি ৪৬,৮০০ ভোটে এগিয়ে। উত্তরবঙ্গ বারবার হতাশ করেছে তৃণমূল কে! এই লোকসভা নির্বাচনেও কোচবিহার ছাড়া বাকী সব ক'টি আসন থেকে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে রাজ্যের শাসক দলকে। স্বাভাবিকভাবেই, রায়গঞ্জে কৃষ্ণ কল্যানী যদি নিজের জেতা আসন ফের একবার জিততে পারেন, তাহলে তা স্বস্তি দেবে গোটা উত্তরবঙ্গেরই তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের। যেমন ধূপগুড়ি উপনির্বাচন দিয়েছিলো। কৃষ্ণ কল্যানীর প্রার্থীপদ নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেও খানিক আওয়াজ উঠেছিলো। কিন্তু শেষ অবধি কৃষ্ণ কল্যানী'র সমর্থনেই প্রচারে বেড়িয়েছেন তৃণমূলের নবীন-প্রবীন সব পক্ষ। এখানেও লড়াইটা কার্যত তৃণমূল আর বিজেপিরই। বিজেপির পক্ষে প্রার্থী হয়েছেন সাংসদ কার্ত্তিক চন্দ্র পালের ঘনিষ্ঠ মানস ঘোষ। তৃণমূল জানে, উত্তরবঙ্গের একটা আসন মানেও সেটা 'কেক ওয়াক'। আর বিজেপির চ্যালেঞ্জ উত্তরবঙ্গে নিজেদের জয়ের ধারা কে অক্ষুন্ন রাখা! ফলে উপনির্বাচন হলেও, রায়গঞ্জ আসনের দিকে নজর থাকবেই রাজ্য রাজনীতির বিশ্লেষকদের! 

এবং মানিকতলা। এই একটি আসন যা নিয়ে গত আড়াইবছরে বির্তক হয়েছে সবচেয়ে বেশী! ২০২২ এর ফেব্রুয়ারিতে সাধন পান্ডের প্রয়ানের পর থেকে গত আড়াই বছর বিধায়কহীন থেকেছে এই বিধানসভার সাধারণ মানুষ। বিধায়ককে ছাড়া নানারকম নিত্য নৈমিত্তিক কাজে নানা অসুবিধায় পরেছেন এলাকাবাসী। কিন্তু তার পরেও ২০২১ এর নির্বাচনে হেরে গিয়ে বিজেপি প্রার্থী কল্যান চৌবে'র করা মামলার প্রেক্ষিতে এই বিধানসভায় ভোট করায়নি নির্বাচন কমিশন! মৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে এরকম মামলা'র যে আদতে কোনো মূল্যই নেই তা নিয়ে কোনো আওয়াজ তোলেনি শাসক বিরোধী কেউই! এমনকি অদ্ভুত নীরাবতা বজায় রেখেছে বামেরাও! সমস্ত মামলা মোকদ্দমা শেষে অবশেষে যখন মানিকতলায় নির্বাচন হচ্ছে, তখন সেখানে ফের একবার বিজেপি প্রার্থী সেই কল্যান চৌবে'ই! যার মামলার ভিত্তিতেই আড়াই বছর বিধায়কহীন রইলো এই বিধানসভা! তৃণমূলের প্রার্থী নিয়েও কম বির্তক হয়নি। সাধন কন্যা শ্রেয়া পান্ডে'র বদলে সাধন জায়া সুপ্তি পান্ডে'র তৃণমূলের টিকিট পেয়ে যাওয়া দেখে খানিক চমকেই গেছিলো রাজ্য রাজনীতির কারবারিরা৷ রাতারাতি বদলাতে হয়েছিলো দেওয়াল লিখন। মেয়ের বদলে মায়ের মুখ দিয়ে ফ্লেক্স ছাপাতে হয়েছিলো স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বকে। ২০২১শে প্রায় ২১হাজার ভোটে এই বিধানসভায় জেতেন সাধন পান্ডে।কোনো এক 'অজ্ঞাত' কারনে ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিধানসভায় 'লিড' পান মাত্র সাড়ে তিন হাজারের মতো! বিধায়ক পরেশ পালের ওয়ার্ড সহ দু'টি ওয়ার্ডে পিছিয়ে পরে তৃণমূল কংগ্রেস! কলকাতার এই বিধানসভাটিতে একটা বড় অংশের ভোটাররা হিন্দিভাষী। তৃণমূল এবং বিজেপি দুই দলের প্রার্থীরাই আদতে হিন্দিভাষী পরিবারেরই। বামেরা এখানে প্রার্থী করেছেন রাজীব মজুমদারকে। রাজীব বাবু ২০১৬ তে সিপিএমের টিকিট পেলেও, ২১ এর নির্বাচনে টিকিট পাননি! উপনির্বাচনে আবার তাকে টিকিট দিয়েছে সিপিএম!

 লোকসভা নির্বাচনের ওয়ার্ডভিত্তিক ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, শহুরে ভোটারদের একটা বড় অংশ তৃণমূল বিমুখ! কলকাতা কর্পোরেশনের ১৪৪ টি'র মধ্যে ৪৭ টি ওয়ার্ডে লিড পেয়েছে বিরোধীরা।পার্শ্ববর্তী বিধানসভা বিধাননগরেও লিড পেয়েছে বিজেপি। তারপরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে সক্রিয় হয়েছেন। দলের অন্তর্তদন্তে দেখা গেছে একাধিক কাউন্সিলররা বেআইনি নির্মান থেকে শুরু করে নানা রকম অনৈতিক কর্মকান্ডে যুক্ত! মানিকতলা উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস যদি ফের নিজেদের ভোট বাড়াতে পারে, তবে কলকাতায় তৃণমূল বাড়তি অক্সিজেন পাবে। কিন্তু তৃণমূলের 'লিড' যদি ২০২১ এর নির্বাচনের তুলনায় কমে যায় তবে তা কিন্তু ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রবল অস্বস্তির হবে শাসক দলের জন্য!

সব মিলিয়ে উপনির্বাচন হলেও, অঙ্ক যে খুব জলের মতো পরিস্কার এমনটা বলা যাচ্ছেনা। বরং এই চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ওপর নির্ভর করেই আগামীদিনে রাজ্য রাজনীতির অনেক সিঁড়ি ভাঙা অঙ্ক যে নির্ধারিত হবে, তা এখন থেকেই বলা যায়

১ টাকায় ১০৫০ একর জমি আদানি গোষ্ঠীকে? বিহারে বিজেপির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ কংগ্রেসের

আচমকা হার্ট অ্যাটাকের আগে জানান দেয় জিভ! কোন কোন লক্ষণ দেখলে বুঝবেন হৃদরোগের ঝুঁকি?

পুজোর আগে গায়েব দাগছোপ, হিরের মতো চমকাবে ত্বক! এই ঘরোয়া ক্রিমের ম্যাজিকেই তাক লাগাবে জেল্লা

ভারতীয় স্বামী চাই! প্রকাশ্যে প্ল্যাকার্ড হাতে তরুণীর চাঞ্চল্যকর দাবি, নেটিজেনরা বলছেন, "এই স্বপ্নের জন্য শাহরুখ খান দায়ী"

মাত্র ২৫ শতাংশ লিভার নিয়ে বেঁচে আছেন অমিতাভ, সঙ্গে যক্ষ্মার লড়াই! সুস্থ থাকতে কোন নিয়ম মেনে ৮২-তে ক্লান্তিহীন বিগ বি?

বাগান সমর্থকদের নিয়ে ভাবছেন না, পাল্টা হুঙ্কার তুর্কমেনিস্তানের ক্লাবের কোচের আজকাল ওয়েবডেস্ক: মোহনবাগানের বিরুদ্ধে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে নামার আগে হুঙ্কার আহাল এফকের কোচ এজিজ আন্নামুহামেদভের। সচরাচর কোনও অ্যাওয়ে দলের কোচ যা করেন না, তাই করে বসলেন তুর্কমেনিস্তানের ক্লাবের কোচ। কলকাতায় এসে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন মোলিনার দলকে। দলে তাবড় তাবড় বিদেশি ফুটবলার। তারমধ্যে রয়েছে তিনজন বিশ্বকাপার। তারওপর ৫০ হাজার মোহনবাগান সমর্থকদের সামনে খেলতে হবে তাঁদের। কিন্তু বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দিলেন না আহালের কোচ। বরং, পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন। আন্নামুহামেদভ বলেন, 'আমরা মোহনবাগান দল সম্বন্ধে জানি। ভাল ফুটবলার আছে। আমরা ট্যাক্টিকাল ফুটবল খেলব। ওদের আমাদের ডিফেন্ডার এবং ফরোয়ার্ডদের নিয়ে ভাবতে দিন। আমরা প্রথমবার এই প্রতিযোগিতায় খেলছি না। আমরা জানি সমর্থকে ঠাসা থাকবে স্টেডিয়াম। আমাদের জন্য এটা প্রথম নয়। আমরা প্রস্তুত। এর আগেও আমরা ভাল দলের সঙ্গে খেলেছি। তাই সমর্থক নিয়ে আমরা ভাবছি না। আমরা এখানে খেলতে এসেছি। নিজেদের সেরাটা দেব।' দলে কোনও বিদেশি নেই। এগারোজন স্বদেশী ফুটবলার। অলিম্পিকে খেলা অনূর্ধ্ব-২৩ জাতীয় দল থেকে ৭-৮ জন প্লেয়ার রয়েছে দলে। তুর্কমেনিস্তানের জাতীয় দলের ৫-৬ জন ফুটবলার রয়েছে। সুতরাং, বিদেশিহীন হলেও, হেলাফেলা করার মতো দল নয়। আহালের কোচ জানিয়ে দিলেন, তিন পয়েন্ট নিয়ে দেশে ফেরার লক্ষ্যেই তাঁরা এসেছেন। বিদেশিহীন দল নিয়ে বাগানের তারকাখচিত দলের বিরুদ্ধে নামতে কোনও ভয়ডর নেই। আন্নামুহামেদভ বলেন, 'আমরা নিজেদের দেশের ফুটবলের উন্নতি চাই। তাই বিদেশি ফুটবলার আনার কোনও প্রয়োজন নেই। আমাদের দেশে অনেক প্রতিভাবান প্লেয়ার আছে। আমরা ওদের তৈরি করতে চাই।' দু'মাস আগে এএফসির প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে আহাল এফকে। প্রস্তুতিস্বরূপ ট্রেনিং ক্যাম্প হয়েছে। স্থানীয় দলের বিরুদ্ধে তিনটে ম্যাচ খেলেছে। মোহনবাগানের খেলা নিয়ে ভিডিও অ্যানালিসিস হয়েছে। সবরকম হোমওয়ার্ক সেরে এসেছে তুর্কমেনিস্তানের ক্লাব। দুই দেশের পরিবেশের মধ্যে বিশেষ পার্থক্য নেই। তবে কলকাতায় আর্দ্রতা বেশি। কিন্তু আহালের কোচের দাবি, এটা কোনও পার্থক্য গড়ে দেবে না। ১২ সেপ্টেম্বর কলকাতায় চলে এসেছে তুর্কমেনিস্তানের দল। মাঠ নিয়েও খুশি। এলমান তাগায়েভ বলেন, 'আমরা প্রস্তুত। সতীর্থরা তৈরি। আমরা জানি মোহনবাগান ভারতের চ্যাম্পিয়ন ক্লাব। শক্তিশালী দল। আমরা ওদের সম্বন্ধে হোমওয়ার্ক করেছি। আমরা নিজেদের সেরাটা দেওয়ার জন্য তৈরি।' মোহনবাগানকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত তুর্কমেনিস্তানের ক্লাব।

সারা দেহে ৪০ হাজার মৌমাছি বসে আছে, অথচ হুল ফোটাচ্ছে না! মধুকরদের 'বশ' করে বিশ্বকে চমকে দিলেন রাজেন্দ্র

নেহালের অভিযোগে ‘বিগ বস ১৯’-এ বিস্ফোরক আমাল! অনু মালিকের ‘মি টু’ বিতর্ক টেনে পরিবারের কোন গোপন কীর্তি ফাঁস করলেন?

এসি কামরায় দেদার ধূমপান! প্রতিবাদ করতেই মহিলা যা করলেন, ছিঃ ছিঃ পড়ল নেটপাড়ায়

আত্মবিশ্বাসী মোলিনা, এশিয়ায় নিজেদের প্রমাণ করার পালা 'ভারতসেরা' মোহনবাগানের

সুন্দরবন ঘুরতে যাবেন?‌ এবার থেকে মানতে হবে এই নির্দেশিকাগুলি

হার্টের বন্ধু! বশে রাখে প্রেশার-সুগার, এই চেনা সবজির রস খেলেই ওজন নিয়ে কমবে দুশ্চিন্তা

মণ্ডপে অন্য বর! ছবি মিলিয়ে পর্দাফাঁস, শেষ মুহূর্তে বিয়ে ভাঙল কনেপক্ষ

‘রক্তারক্তি’ কাণ্ড! আইনি লড়াইয়ের ঘোষণা জিতুর! কার বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের ঘোষণা অভিনেতার??

'চলো বিয়ে করে নিই', প্রেমিককে রাজি করাতে ৬০০ কিলোমিটার পাড়ি, প্রেমিকাকে মেরে গাড়িতে ভরে দিলেন শিক্ষক

ভারতের শক্ত গাঁট তারা, এশিয়া কাপে বড় ধাক্কা খেল এই দল, কী হল?

হাতে কামড়ে দিয়েছিল চোর, 'ছোটখাটো' চোট বলেছিলেন চিকিৎসকরা, একবছর পর মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন বৃদ্ধ!

‘সূর্যকুমার সবকিছুর উত্তর দিয়ে দিয়েছে’, করমর্দন কাণ্ডে সাফ সাফ জানিয়ে দিলেন সৌরভ, কী বললেন প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক?

দেশের কোন জনপ্রিয় সুপারমডেল ইচ্ছামতো ‘ব্যবহৃত’ করেছিলেন বরুণ ধাওয়ানকে? গোপন অধ্যায় প্রকাশ্যে এই প্রথমবার খুললেন বলি-তারকা!

প্রথমবার বিদেশে যাচ্ছেন? কোন কোন বিষয় মাথায় রাখলে ঝক্কি পোহাতে হবে না?

'একদিন বাড়িতে এসো', বাড়িতে ডেকে সাইকেলের চেন দিয়ে মারধর, যুবকের গোপনাঙ্গে পরপর পিন ফুটিয়ে দিলেন যুবতী, ভিডিও করলেন স্বামী

'ক্লাব পর্যায়ের ক্রিকেটও খেলতে পারছে না পাকিস্তান', আফ্রিদিদের দেখে ভীষণ হতাশ শোয়েব

তাবু থেকে চলছে নেপালের সুপ্রিম কোর্ট! বদলে যাচ্ছে তারিখের পর তারিখ, দেশজুড়ে খালি অনিশ্চয়তার ছায়া

মানসীর ছেলে অধ্যায়ের অন্নপ্রাশনের জমজমাট অনুষ্ঠান

সোশ্যাল মিডিয়া