আজকাল ওয়েবডেস্ক: জমে গেল মহিলাদের একদিনের ক্রিকেটের বিশ্বকাপ। আয়োজক ভারতকে তিন উইকেটে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলে চতুর্থ স্থানে উঠে এল দক্ষিণ আফ্রিকা। বৃহস্পতিবার বিশাখাপত্তনমে জমজমাট ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিলেন নাদিন ডি ক্লার্ক এবং ওপেনার লরা ওলভাডেট।

ভারতীয় বোলাররা চেষ্টা করেছিলেন  নিজেদের সর্বস্ব দিয়ে। কিন্তু তা কাজে লাগল না এদিন। কাজে এল না রিচা ঘোষের ম্যাচ বাঁচানো ৯৪ রানের ঝোড়ো ইনিংসও। এদিন পরপর উইকেট খোয়াতে থাকলেও রান তোলার গতি কিন্তু কমতে দেননি প্রোটিয়ারা। সেটাই শেষ পর্যন্ত কাজে লাগল। অষ্টম উইকেটে দুর্দান্ত পার্টনারশিপেই ম্যাচ জিতে নিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার মেয়েরা।

চলতি বিশ্বকাপে ভারত একাধিক বার ব্যাটিং ব্যর্থতায় ভুগেছে। ম্যাচ জিতলেও ব্যাটারদের মধ্যে রানের অভাব দেখা গিয়েছে। প্রথম ম্যাচে আমনজ্যোতের দুর্দান্ত ইনিংস, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে টিমগেমে জয়ের পর এদিনও ব্যর্থ ভারতের টপ অর্ডার। প্রতীকা রাওয়াল এবং স্মৃতি মান্ধানা ভাল শুরু করলেও বড় রানে কনভার্ট করতে পারেননি।

বিশাখাপত্তনমে টসে জিতে টিম ইন্ডিয়াকে ব্যাটিং করতে পাঠিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ৫৫ রানের মাথায় প্রথম উইকেটের পতন ঘটে। দুই ওপেনার ফেরার পর মিডল অর্ডার পুরোপুরি ব্যর্থ। হারলিন, জেমাইমা, হরমনপ্রীত, দীপ্তি. আমনজ্যোত কেউ রান পাননি। মিডল ওভারে স্পিনের ফাঁদে পড়ে উইকেট যায় একের পর এক। ১০২ রানের মধ্যে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল ভারত।

সেখান থেকে পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন  উইকেটকিপার রিচা ঘোষ। তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দেন স্নেহ রানা। পাকিস্তান ম্যাচেও শেষের দিকে নেমে ঝোড়ো ইনিংস খেলেছিলেন বঙ্গতনয়া। এদিনও সেই একই মোমেন্টাম ধরে রেখে বেধড়ক পেটালেন প্রোটিয়া বোলারদের। ৭৭ বল খেলে তাঁর ব্যাট থেকে এল ৯৪ রান। অন্যদিকে, স্নেহ করলেন ৩৩। দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২৫২ রানের লক্ষ্য়. দিয়েছিল ভারত।

শুরুটা খুব একটা ভাল হয়নি দক্ষিণ আফ্রিকারও। দলের ৬ রানের মাথাতেই প্রথম উইকেট হারায় তারা। তাজমিন ব্রিটসকে দুর্দান্ত কট অ্যান্ড বোল্ডে ফেরান ক্রান্তি গৌড়। দ্বিতীয় উইকেট পড়ে ১৮ রানে। ভারতীয় স্পিন অ্যাটাকের সামনে হিমশিম খাচ্ছিল প্রোটিয়া মিডল অর্ডার। ৮১ রানে অর্ধেক দলকে প্যাভিলিয়নে পাঠিয়ে দিয়েছিল টিম ইন্ডিয়া।

একদিক থেকে হাল ধরে রেখেছিলেন ওপেনার লরা ওলভাডেট। অর্ধেক দল প্যাভিলিয়নে ফেরার পর ক্লোয়ি ট্রায়নকে সঙ্গে নিয়ে ধীরে ধীরে পার্টনারশিপ গড়ার দিকে মন দেন। ৭০ রান করে তিনি যখন আউট হন সেই সময়ে দক্ষিণ আফ্রিকার রান ১৪২। ম্যাচে নিজেদের দখলে নিয়ে নেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ ছিল ভারতের কাছে।

কিন্তু ট্রায়নকে সঙ্গে নিয়ে পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন ডি ক্লার্ক। টি-টোয়েন্টির মেজাজে ব্যাটিং করে ম্যাচ জমিয়ে দেন তিনি। শেষ ছ'ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার জেতার জন্য প্রয়োজন ছিল ৬০ রান। ট্রায়নও ৪৯ রান করে যখন আউট হন তখন দলের রান ২১১। ন'নম্বরে নামা আয়াবঙ্গা খাকা নামার পর থেকে তিন বল খেলে করেন মাত্র এক রান।

ডি ক্লার্ক ৫৪ বল খেলে করেন ৮৪ রান। শেষে পরপর দুটি ছক্কা মেরে ম্যাচ জিতিয়ে দেন তিনি। এই দক্ষিণ আফ্রিকাই গত ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে ধরাশয়ী হয়েছিল। এদিন ভারতকে হারিয়ে দিয়ে তারা উঠে এল চতুর্থ স্থান। টিম ইন্ডিয়া বর্তমানে পয়েন্ট টেবিলে তৃতীয় স্থানে রয়েছে।