আজকাল ওয়েবডেস্ক: দুবাইয়ে সদ্য সমাপ্ত অনুর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে ঐতিহাসিক সাফল্য পাওয়া পাকিস্তান দলকে সংবর্ধনা দেবেন দেশের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। 

সীমান্তের ওপার থেকে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিরুদ্ধে এই জয়কে ঘিরে গোটা পাকিস্তানজুড়ে উৎসবের আবহ তৈরি হয়েছে। পাকিস্তানে জুনিয়র স্তরের ক্রিকেট সাধারণত খুব একটা আলোচনায় আসেনি।

এই টুর্নামেন্টেও কেউই সেরকম ভাবে ম্যাচ দেখেননি। কিন্তু ফাইনালে ভারতের বিরুদ্ধে এই বিরল সাফল্য তরুণ দলটিকে নিয়ে জয়জয়কার গোটা দেশজুড়ে।

এবার প্রধানমন্ত্রীর তরফে সংবর্ধনাও পাবেন সমীর মিনহাসরা। জানা গিয়েছে, পাকিস্তান দল দেশে ফেরার পর ইসলামাবাদ বিমানবন্দরে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়।

তবে এই ধরনের অভ্যর্থনা সাধারণত সিনিয়র জাতীয় দলের ক্ষেত্রেই দেখা যায়। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি ইতিমধ্যেই এই জয়কে দেশের ক্রিকেটের জন্য একটি বড় সাফল্য বলে ঘোষণা করেছেন।

ফাইনালে দুরন্ত শতরান করে ১৭২ রান করা সমীর মিনহাস এবং চার উইকেট নেওয়া ফাস্ট বোলার আলি রেজাকে পাকিস্তান ক্রিকেটের নতুন ‘প্রতিভা’ হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে।

তাঁদের পারফরম্যান্স ভবিষ্যতের জন্য বড় আশার আলো দেখাচ্ছে বলে মনে করছে ক্রিকেটমহল। উল্লেখ্য, পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি বর্তমানে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) প্রধানও এবং একই সঙ্গে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

সিনিয়র এশিয়া কাপের সময় থেকেই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে তাঁকে ঘিরে একাধিক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। গত ২৮ সেপ্টেম্বর দুবাইয়ে ভারতীয় দল নাকভির হাত থেকে বিজয়ীর ট্রফি গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছিল।

ওই ট্রফি এখনও দুবাইয়ের এসিসি দপ্তরেই রয়ে গিয়েছে। কারণ, গোটা বিষয়টির এখনও কোনও মীমাংসা করা যায়নি। নাকভি গোটা ঘটনায় অনড় অবস্থান নিয়ে জানিয়েছেন, সংবাদমাধ্যম উপস্থিতিতে তাঁর হাত থেকেই ভারতীয় দলকে আনুষ্ঠানিক ভাবে ট্রফি গ্রহণ করতে হবে।

অন্যদিকে, সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, অনুর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ জয়ের জন্য জুনিয়র দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়কে ৫০ লক্ষ পাকিস্তানি রুপি করে নগদ পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা করেছেন নাকভি, যা পাকিস্তান ক্রিকেটে কার্যত নজিরবিহীন।

ম্যাচ চলাকালীনই দুবাইয়ে আইসিসি অ্যাকাডেমির মাঠে পৌঁছে গিয়েছিলেন মহসিন নকভি। পুরস্কার বিতরণীর সময়ও অন্যান্য বিশিষ্ট অতিথিদের সঙ্গে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

তবে ভারতীয় খেলোয়াড়রা নকভির সঙ্গে একই মঞ্চে ওঠেননি। তারা মূল ডায়াস থেকে দূরে অন্য এক অতিথির কাছ থেকে নিজেদের পদক গ্রহণ করেন, যেখানে নকভি দাঁড়িয়ে ছিলেন।

নকভি পাকিস্তান দলের খেলোয়াড়দের হাতে বিজয়ী পদক তুলে দেন এবং অধিনায়ক ফারহান ইউসুফের হাতে ট্রফি তুলে দেন।

এরপর পাকিস্তান দলের খেলোয়াড় ও সাপোর্ট স্টাফদের সঙ্গে তিনি উদযাপনের ছবি তোলেন। মাঠে পাকিস্তান দলের ভিকট্রি ল্যাপের সময়ও তাঁকে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়।

উল্লেখ্য, এর আগে সিনিয়র দলের এশিয়া কাপ ফাইনাল ঘিরে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের পর থেকে মহসিন নকভিকে কেন্দ্র করে এশিয়া স্তরের টুর্নামেন্টগুলিতে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

সেই সময় ভারতীয় দল এসিসি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ট্রফি নিতে অস্বীকার করেছিল। সেই ঘটনার পর বিজয়ীদের হাতে ট্রফি তুলেই দেওয়া হয়নি।

সেটি নকভি সঙ্গে করে নিয়ে চলে যান। সেই ঘটনার পর বিতর্ক আরও বেড়ে যায়। এশিয়া কাপ ট্রফি নিয়ে সেই টানাপোড়েন এখনও চলছেই।

এর মধ্যেই রাইজিং স্টার্স এশিয়া কাপ ও অনুর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ট্রফি পাকিস্তান দলের হাতে তুলে দিয়েছেন মহসিন নকভি। যা বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।