মোহনবাগান - ৫ (থাপা, ম্যাকলারেন,‌ লিস্টন-পেনাল্টি, সাহাল, কামিন্স)

ডায়মন্ড হারবার - ১ (লুকা)

আজকাল ওয়েবডেস্ক: ফাইভ স্টার পারফরম্যান্স। শুরুতেই জয়ের হ্যাটট্রিক। রাখি পূর্ণিমার রাতে হাসতে হাসতে ডুরান্ড কাপের শেষ আটে চলে গেল মোহনবাগান। আইএসএল এবং আই লিগের দলের মধ্যে পার্থক্য স্পষ্ট। শনিবাসরীয় রাতে ডায়মন্ড হারবারকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে দিল মোলিনার দল। তিন ম্যাচ জিতে ৯ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের একনম্বর দল হিসেবে ডুরান্ড কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে মোহনবাগান। সবুজ মেরুনের গোলদাতা অনিরুদ্ধ থাপা, জেমি ম্যাকলারেন, লিস্টন কোলাসো, সাহাল আব্দুল সামাদ এবং জেসন কামিন্স। ডায়মন্ড হারবারের একমাত্র গোলদাতা লুকা মাজেন। এদিন সবুজ মেরুনের সবচেয়ে বড় পাওনা প্রথম ম্যাচে নেমেই দুই বিদেশির গোল পাওয়া। টানা তিন ম্যাচে গোল লিস্টনের। মোট গোল সংখ্যা পাঁচ। ডুরান্ডের দ্বিতীয় ম্যাচে বিএসএফকে আট গোলে হারিয়ে প্রথম দল হিসেবে পরের রাউন্ডে যাওয়া প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছিল কিবু ভিকুনার দল। ডায়মন্ড হারবারের প্রয়োজন ছিল ড্র। বরং, চাপে ছিল সবুজ মেরুন ব্রিগেড। চোটের জন্য প্রথম একাদশে পাঁচজনকে ছাড়াই দল সাজাতে হয় মোলিনাকে। তাতেই পাঁচ গোল। এদিন ডায়মন্ড হারবারকে উড়িয়ে দেয় সবুজ মেরুন ব্রিগেড। প্রথমার্ধের শেষে ২-১ গোলে এগিয়ে ছিল মোহনবাগান। দ্বিতীয়ার্ধে আরও তিন গোল। ৫০ মিনিটে নরেশ সিং লালকার্ড দেখে মাঠ ছাড়ার দশজনে হয়ে যায় ডায়মন্ড হারবার। পাঁচ গোল হজম করে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট অনিশ্চিত হয়ে গেল কিবুর দলের। ইন্দো টিবেটান পুলিশ এবং বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের ম্যাচের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। 

এদিন দলে ছ'টি পরিবর্তন করেন মোলিনা। প্রথম একাদশে জায়গা পান সাহাল আব্দুল সামাদ, পাসাং তামাং, অভিষেক সিং, জেমি ম্যাকলারেন, আশিস রাই এবং আপুইয়া। কার্ড সমস্যা কাটিয়ে নামেন পাহাড়ি মিডফিল্ডার। সামনে একা ম্যাকলারেনকে রেখে ৪-২-৩-১ ফরমেশনে দল সাজান বাগান কোচ। আগেই জানিয়েছিলেন এদিন ম্যাকলারেন এবং কামিন্সকে ম্যাচ টাইম দেবেন। দু'জনেই ওজন বাড়িয়ে ফিরলেও গোল পেলেন। তাও আবার মাত্র দু'দিন প্র্যাকটিস করে। এটাই স্বস্তি দেবে মোলিনাকে। ম্যাচের ১৯ মিনিটে মোহনবাগানকে এগিয়ে দেন অনিরুদ্ধ থাপা। ডায়মন্ড হারবারের গোলকিপারের মিস পাস থেকে বল পান সাহাল। তার পাস থেকে কোনাকুনি শটে নিখুঁত ফিনিশ থাপার। তবে বেশিক্ষণ লিড ধরে রাখতে পারেনি বাগান। ম্যাচের ২৪ মিনিটে রক্ষণের ভুলে গোল হজম করে সবুজ মেরুন। জবি জাস্টিনের পাস থেকে ১-১ করেন লুকা। অফসাইড ট্র্যাপ করতে গিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গোল হজম করান দীপক টাংরি। প্রথম দিকেই একটি সুযোগ পেয়েছিলেন ম্যাকলারেন। ম্যাচ ফিট থাকলে তখনই স্কোরশিটে নাম তুলতে পারতেন। কিন্তু কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। ম্যাচের ৩৫ মিনিটেই মরশুমের প্রথম গোল পান অস্ট্রেলিয়ান বিশ্বকাপার। লালিয়ানসাঙ্গা বল ধরার আগেই সেটা ছিনিয়ে নিয়ে জেমিকে বাড়ান সাহাল। ডান পায়ের আলতো টাচে বিপক্ষের গোলকিপার সুসনাতো মালিকের পায়ের তলা দিয়ে জালে রাখেন। চিনিয়ে দিলেন জাত।

প্রথম দুই ম্যাচের সেরা লিস্টনকে এদিন বোতলবন্দি করে ফেলেন কিবু। তাঁকে খেলা তৈরি করার জায়গা দেয়নি। তাঁর সঙ্গে ডাকটিকিটের মতো সেঁটে থাকেন নরেশ সিং। যার ফলে প্রথমার্ধে বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি লিস্টন। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে সেটাই কাল হয়। লিস্টনকে ফাউল করেন নরেশ। পেনাল্টি দেন রেফারি। ৫০ মিনিটে স্পট কিক থেকে ৩-১ করেন লিস্টন। প্রায় ৪০ মিনিট দশজনে খেলে ডায়মন্ড। তাতেই লকগেট খুলে যায়। আরও দু'গোল হজম করে। ৬৫ মিনিটে বক্সের মধ্যে কামিন্সের মাইনাস রবিলাল মান্ডির পায়ে লেগে বল পান সাহাল। তেকাঠিতে রাখতে ভুল করেননি। বিরতির পর ম্যাকলারেনের পরিবর্তে নামেন কামিন্স। ওজন বেড়ে গেলেও গোলের আপ্রাণ চেষ্টা করেন। ফলও পান। ম্যাচের ৮০ মিনিটে নিজের প্রথম এবং মোহনবাগানের পঞ্চম গোল কামিন্সের।