আজকাল ওয়েবডেস্ক: ঘরের মাঠে চেন্নাইয়ের কাছে হেরে সুপার সিক্সের আশা শেষ। শেষ পাঁচ ম্যাচ কার্যত গুরুত্বহীন। ১৯ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের ১১নম্বরে ইস্টবেঙ্গল। খুব বেশি হলে, কয়েক ধাপ ওপরে শেষ করতে পারবে। আদতে যার কোনও মূল্য নেই। এই অবস্থায় রবিবার মিনি ডার্বি। প্রতিপক্ষ মহমেডান। তথৈবচ সাদা কালো ব্রিগেড। সমসংখ্যক ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের তলানিতে। শেষ তিন ম্যাচে হারের হ্যাটট্রিক। এরকম একটি ম্যাচের আগে দলকে উদ্বুদ্ধ করা সত্যিই কঠিন। চেন্নাই ম্যাচকেই ফাইনাল হিসেবে ধরেছিলেন অস্কার ব্রুজো। হারের পর জানিয়ে দেন, এবার ফোকাস এএফসি এবং সুপার কাপে। এই অবস্থায় তথাকথিত ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গলের টার্গেট কী? পয়েন্ট টেবিলে তুলনামূলকভাবে ভাল জায়গায় শেষ করা? নাকি বাকি ম্যাচগুলোতে পরীক্ষার পথে হেঁটে এএফসির প্রস্তুতি সারা? ইস্টবেঙ্গল কোচ জানিয়ে দিলেন, রবিবারের ডার্বি সম্মানের লড়াই। অস্কার বলেন, 'রবিবারের ডার্বি মর্যাদায় লড়াই। আমার, প্লেয়ারদের, বাকি কোচদের, কর্তাদের দলের সঙ্গে যারা যুক্ত আছে তাঁদের সকলের সম্মানের লড়াই। আমাদের এটা দুঃস্বপ্নের মরশুম। খুবই খারাপ বছর। একাধিক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। বেশিরভাগ প্রতিপক্ষ আমাদের থেকে এগিয়ে। আমরা ১১ নম্বরে আছি। লিগ টেবিলে আরও উন্নতি করার লক্ষ্য নিয়ে নামতে হবে। প্রথম ছয় ম্যাচ বাদ দিলে, বাকিগুলোর রেজাল্ট বিচার করা হলে আমাদের সুযোগ ছিল। কিন্তু আমরা পারিনি। প্রায় প্রত্যেক ম্যাচে আমাদের সামনে বাধা থাকে। এই সপ্তাহেও নতুন কিছু না। আমাদের পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। নিজেদের মানের পরিচয় দিতে হবে। তুলনায় ভাল জায়গায় থেকে মরশুম শেষ করার চেষ্টা করতে হবে।' 

চেন্নাই ম্যাচের আগে রক্ষণের প্রশংসা করেছিলেন ব্রুজো। জানিয়েছিলেন, যে তিনটে দল সবচেয়ে কম গোল খেয়েছে, তারমধ্যে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু চেন্নাই ম্যাচে সপাটে চড় খান অস্কার। তিন গোল হজম করে তাঁর দল। তারওপর মুড়ি মুড়কির মতো গোল মিস। সেদিনের বিভীষিকা যেন এখনও ভুলতে পারছেন না ব্রুজো। আফশোস রয়ে গিয়েছে। কেন মুহুর্মুহু গোল মিস হচ্ছে, তার কোনও ব্যাখ্যা নেই ইস্টবেঙ্গলের কোচের কাছে। তবে মেসি বাউলির সংযোজনে কিছুটা আশার আলো দেখছেন। মনে করছেন, ক্যামেরুনের স্ট্রাইকার ডিয়ামানটাকোসকে সাহায্য করতে পারবে। তাই মহমেডানের বিরুদ্ধে প্রথম একাদশেই থাকছেন মেসি। তবে চোটের জন্য চার বিদেশি নিয়ে নামা হবে না ইস্টবেঙ্গলের। নেই ক্লেইটন, চুংনুঙ্গা।‌অনিশ্চিত মহেশ, জিকসন। সামনে এএফসি থাকায় কোনওরকম ঝুঁকি নিতে চান না অস্কার। 

ইস্টবেঙ্গল প্লে অফ থেকে ছিটকে যাওয়ার পর বিক্ষোভ দেখায় সমর্থকরা। তাতে কোনও দোষ দেখছেন না ব্রুজো। লাল হলুদের স্প্যানিশ কোচের দাবি, তাঁদের সেই অধিকার আছে। এতে হতাশ হওয়ার পরিবর্তে, মোটিভেশন হিসেবে নিতে চান। অস্কার বলেন, 'ফ্যানদের সেই অধিকার আছে। ওদের আশা করা অস্বাভাবিক নয়। আমাদের আত্মদর্শন করতে হবে। যদি আমরা সেটা না করতে পারি, তাহলে আমাদের এই ক্লাবে থাকার অধিকার নেই। এটা কোচ, প্লেয়ার, কর্তা, ম্যানেজমেন্ট, সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। বাস্তবটা মেনে নিতেই হবে। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের থেকে প্রত্যাশা থাকবেই। সেটা আমাদের সবাইকেই বুঝতে হবে। সমর্থকদের ক্ষোভ প্রকাশে হতাশ না হয়ে, সেটাকে মোটিভেশন হিসেবে নিতে পারলে ভাল।' অস্কার নিজে বলছেন, এবার ফোকাস এএফসিতে। কিন্তু বাস্তবের মাটিতে পা স্প্যানিশ কোচের। ক্লেইটনকে সম্ভবত চলতি মরশুমে আর পাওয়া যাবে না। তাঁর পরিবর্ত ফুটবলার নেওয়ারও সুযোগ নেই। সুতরাং এএফসিতে বিদেশি সমস্যায় পড়তে হবে। তাই মরশুমের বাকি টুর্নামেন্ট নিয়েও খুব একটা আশাবাদী শোনাল না অস্কারকে।