আজকাল ওয়েবডেস্ক: মাণ্ডবী তীরে মহারণ শুক্রবার। সুপার কাপের বারুদে ঠাসা ম্যাচ। ইস্টবেঙ্গলের সামনে মোহনবাগান। সেই মহাম্যাচের আগে লাল-হলুদ কোচ অস্কার ব্রজোঁকে তাতাচ্ছে হাফ ডজন ম্যাচ। যে ম্যাচগুলো স্প্যানিশ মায়েস্ত্রোর রক্তের গতি বাড়িয়ে দেয়। যে ম্যাচগুলো অস্কার ব্রুজোঁকে তাতিয়ে দেয়। ভাল থেকে আরও ভাল, তার থেকেও ভাল করার 'জোশ' তাঁর মধ্যে বেড়ে যায় বহুগুণে। এই ম্যাচগুলোর কথা ভাবতে বসলে অস্কারের ভিতরের ছাইচাপা আগুন বেরিয়ে আসে। সেই আগুন পুড়িয়ে দিতে পারে যে কোনও প্রতিপক্ষকে। 

আরও পড়ুন: রোহিত–কোহলিরাও লাভের মুখ দেখাতে পারল না ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াকে, হয়ে গেল বিরাট লোকসান

অস্কার ব্রুজোঁ অদ্ভুত এক মানুষ। জিতলে তিনি একেবারেই খুশি হন না। জয় তাঁকে স্বস্তি দেয় মাত্র। ভিতরে ভিতরে বাড়তে থাকে জয়ের স্পৃহা। এর বেশি কিছু নয়। হার একদম হজম করতে পারেন না। ভিতরে ভিতরে তিনি রক্তাক্ত হন। ক্ষতবিক্ষত হন। 

ইস্টবেঙ্গল কোচের বাবা পেশাদার হকি খেলোয়াড় ছিলেন। তিনিই ছেলের ভিতরে লড়াইয়ের স্পৃহা, লড়াইয়ের আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন। সেই আগুন এখনও নেভেনি। 
জিতে তিনি নিষ্পৃহ থাকেন। পরের লড়াইয়ের জন্য তৈরি হন। জেতা ম্যাচ হাতছাড়া করলে নিজের ভিতরেই গুমড়ে মরেন। শিল্ড ফাইনালে হার এখনও তাঁর দুঃস্বপ্নে ধরা দেয়। তিনি জেগে উঠে নতুন দিনের জন্য তৈরি হন। শুক্রবার সেরকমই একটা নতুন দিন। শিল্ড ফাইনালের ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার সুযোগ থাকছে। সুপার কাপের সবথেকে মেগাম্যাচের আগে জোর দিয়ে বলে দেওয়াই যায় অস্কার শিল্ড ফাইনাল দূরে সরিয়ে রেখেছেন। তার পরিবর্তে তাঁর শয়নে, স্বপনে ও জাগরণে এখন শুক্রসন্ধ্যার ডার্বি। 

হারতে হারতে জয়ের সরণী ভুলে যাওয়া, চোট আঘাতে জর্জরিত, কাঁধ ঝুলে যাওয়া একটা দলের শরীরী ভাষায় হঠাৎই ঘুরে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার।  

হোসে মোলিনার মোহনবাগানের বিরুদ্ধে নামার আগে অস্কারকে শক্তি দিয়ে যায় এএফসি কাপে বসুন্ধরা কিংস বনাম মোহনবাগান ম্যাচ। সেই ম্যাচে তাঁর দুই প্রিয় শিষ্য রবসন রবিনহো ও মিগুয়েল স্প্যানিশ কোচের মুখে এনে দিয়েছিলেন হাজার ওয়াটের উজ্জ্বল এক হাসি। 

বাড়তি অ্যাড্রিনালিন ক্ষরণ করে এএফসি কাপের বসুন্ধরা-ওড়িশা এফসি ম্যাচও। সেই ম্যাচে অস্কারের বসুন্ধরা ১-০ গোলে জিতেছিল। 

উজ্জীবিত করার তালিকায় রয়েছে গতবারের আইএসএলে ইস্টবেঙ্গল-পাঞ্জাব এফসি ম্যাচও। পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে হাফ টাইমে ইস্টবেঙ্গল যখন ২-০ গোলে পিছিয়ে, তখন কেউ বিশ্বাসই করতে পারেননি লাল-হলুদ অসাধ্য সাধন করবে। হারা ম্যাচ এক হ্যাঁচকা টানে বের করে নেবে। খেলার ফল হবে ৪-২। সবাই কৌতূহলী বিরতির সময়ে কী এমন পেপ টক অস্কার ব্রুজোঁ দিয়েছিলেন যাতে গোটা দলটাই ঘুরে দাঁড়াল!

এখানেই শেষ নয়। আরও আছে অস্কারের ডায়রিতে। এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে তাঁর প্রাক্তন দল বসুন্ধরাকেই চার-চারটি গোলে মাটি ধরিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। নেজমেহ-র মতো শক্তিশালী দলকেও অস্কারের লাল-হলুদ ৩-২ গোলে হারায়। ডুরান্ড কাপের ডার্বির কথাই নিশ্চয় ভোলেননি স্প্যানিশ মায়েস্ত্রো? 
চলতি মরশুমে অন্ধকারের মেঘ কি একটু একটু করে কাটছে? আলোর দেখা কি মিলছে লেসলি ক্লডিয়াস সরণীর ক্লাবে? লাল-হলুদের শীর্ষকর্তা শিল্ড ফাইনালের পরে বলেছিলেন, একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ইস্টবেঙ্গল। গোটা ভারতের নজরে এখন গোয়া। এক যোদ্ধা আরও এক লড়াইয়ের জন্য নিজেকে তৈরি করছেন। নীরবে নিভৃতে সেই তিনিই নিজেকে 'ফাইটার' বলে উদ্দীপ্ত করছেন। হোসে মোলিনার শক্তিশালী মোহন-ব্রিগেডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে লাল-হলুদ কোচের  রক্তের গতি বাড়িয়ে দিচ্ছে কিন্তু এই হাফ ডজন ম্যাচ। 

আরও পড়ুন: বাণিজ্যনগরীতে জারি হলুদ সতর্কতা, ভারত–অস্ট্রেলিয়া সেমিফাইনাল ভেস্তে দেবে বৃষ্টি?‌ ...