আজকাল ওয়েবডেস্ক:‌ ভারতের ক্রীড়াক্ষেত্রে বড় পদক্ষেপ। লোকসভায় পাস হয়ে গেল স্পোর্টস বিল। এটা ঘটনা, দীর্ঘ সময় ধরেই চেষ্টা চলছিল। অবশেষে লোকসভায় পাশ হল জাতীয় স্পোর্টস গভর্নেন্স বিল। কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী মনসুখ মান্ডব্যর মতে, স্বাধীনতার পর ভারতীয় ক্রীড়াক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সংস্কার। পাশাপাশি জাতীয় মাদক–বিরোধী বিলও পাশ হয়েছে লোকসভায়। কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী মনসুখ মান্ডব্য বলেন, ‘স্বাধীনতার পর এটাই ভারতীয় ক্রীড়ায় সবচেয়ে বড় সংস্কার। এই বিলের ফলে প্রত্যেকে দায়িত্বশীল হবে। প্রতিটি ক্রীড়া সংস্থা সরকারের এক ছাতার তলায় থাকবে। ভারতীয় ক্রীড়ার ইকোসিস্টেমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। দুঃখের বিষয়, এতদিন এর বিরোধিতা হয়ে আসছিল।’


ভারতীয় ক্রীড়াক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, দায়িত্বশীলতা এবং বিশ্বমানের পরিকাঠামোর জন্য এই বিল পাশ হওয়া জরুরি ছিল বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী। ২০৩৬ সালে অলিম্পিক আয়োজনের লক্ষ্য ভারতের। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া ইভেন্ট আয়োজনের ক্ষেত্রে সঠিক পরিকাঠামো প্রয়োজন। এর জন্য এই বিল পাশ হওয়া গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ক্রীড়ামন্ত্রী আরও বলেন, ‘এর আগে ১৯৭৫ সালেও এই চেষ্টা হয়েছিল। এরপর ১৯৮৫ সালেও। খসড়া প্রস্তুত ছিল। কিন্তু ক্রীড়াক্ষেত্রে রাজনীতির অবাধ প্রবেশ এবং ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য এই বিল নিয়ে অনেকেই বিরোধিতা করে এসেছে। ২০১১ সালে আমরা ন্যাশনার স্পোর্টস কোড আনি। এই বিল পাশের আরও একটা উদ্যোগ তখন থেকেই শুরু হয়েছিল।’


এটা ঘটনা এই বিল পাস হওয়ার ফলে জাতীয় স্তরের ক্রীড়া সংস্থাগুলি এক ছাতার তলায় থাকবে। কেন্দ্রীয় সরকারের অনুদান পাবে। সেই তহবিল দিয়ে সঠিক পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে কি না, স্বচ্ছতা বজায় থাকছে কি না, সবটাই সরকারের নজরে থাকবে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড অবশ্য বাদিকের তুলনায় কিছুটা স্বাধীন ভাবে কাজ করতে পারবে। যেমন আরটিআই প্রয়োগ হবে শুধুমাত্র সরকারী তহবিলে চলা ক্রীড়া সংস্থাগুলির উপর। 


এটা ঘটনা, আগেই জানা গিয়েছিল প্রস্তাবিত জাতীয় ক্রীড়া বিলে দু’টো সংশোধন হয়েছে। 


১) ভারত সরকার থেকে যে সমস্ত সংস্থা অনুদান বা আর্থিক সাহায্য নেবে, তারাই শুধুমাত্র ‘রাইট টু ইনফরমেশন অ্যাক্ট’ বা আরটিআই–এর আওতায় আসবে। কিন্তু যে সমস্ত সংস্থা ভারত সরকারের অনুদান নেবে না, তাদের আরটিআই-এর আওতায় পড়ার ব্যাপারও নেই।


২) জাতীয় ক্রীড়া সংস্থার প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারি জেনারেল বা কোষাধ্যক্ষ হতে গেলে এখন তিনটে রাস্তা খোলা পদপ্রার্থীর সামনে। হয় ‘স্পোর্টসপার্সন অফ আউটস্ট্যান্ডিং মেরিট’ হতে হবে তাঁকে। কিংবা জাতীয় ক্রীড়া সংস্থার এক্সিকিউটিভ কমিটিতে ন্যূনতম একটা টার্ম পূর্ণ করতে হবে। বা নিজ রাজ্যের অনুমোদিত সংস্থার প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারি জেনারেল বা কোষাধ্যক্ষ হতে হবে।


আর এই দুই সংশোধনের পর রীতিমতো নড়েচড়ে বসে ভারতীয় ক্রিকেটমহল। প্রথমত, তারা স্বস্তিতে এটা ভেবে যে, বোর্ডকে আরটিআই–এর আওতায় পড়তে হচ্ছে না। তা ছাড়া ভারতীয় বোর্ডের পদাধিকারী হওয়ার রাস্তা তুলনায় সহজতর হয়ে পড়ছে এই সংশোধনের ফলে। কারণ, প্রস্তাবিত বিলে জাতীয় ক্রীড়া সংস্থার পদাধিকারী হতে গেলে এক্সিকিউটিভ কমিটিতে দু’টো টার্ম থাকার ব্যাপার ছিল। কিন্তু সংশোধনের পর এখন সেটা বদলে গিয়ে দু’টোর বদলে একটা টার্ম হচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা, সেটা না থাকলেও চলবে। নিজের রাজ্য সংস্থার প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারি জেনারেল বা কোষাধ্যক্ষ হলেও চলবে।