আজকাল ওয়েবডেস্ক: আগের মরশুম শেষে তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার কথা উঠেছিল। মাঝ মরশুম কেটে গেলেও নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। পারফরম্যান্স গ্রাফ ক্রমশ নীচে নামছিল। ক্লাব ম্যানেজমেন্টের একাংশ তাঁকে নিয়ে হতাশ ছিল। এই চিত্র অবশ্য মরশুম শেষের আগে বদলে যায়। ছন্দে ফেরেন লিস্টন কোলাসো। একইসঙ্গে কাটে গোলের খরা। কিন্তু সেই কঠিন সময়টা গোয়ান তরুণের মনে দাগ কাটে। একটা সময় ব্যর্থতা কুড়ে কুড়ে খেত তাঁকে। বরাবরই সেটপিস বিশেষজ্ঞ। বিশেষ করে ফ্রিকিক। একাধিক গোল রয়েছে। কিন্তু সেই পারদর্শিতা যেন হঠাৎ করেই তাঁর পা থেকে উধাও হয়ে গিয়েছিল। পরের বছর তার পুনরাবৃত্তি চাননি। তাই মরশুম শেষ হলেই নিজেকে কঠোর পরিশ্রমে ডুবিয়ে দেন। তার ফল মেলে।
মরশুমের প্রথম ম্যাচেই মাঠে ঝড় তোলেন লিস্টন। দুটো গোল করেন, একটি করান। তারমধ্যে রয়েছে ফ্রিকিকে অনবদ্য গোল। মরশুমের শুরুতেই সাফল্যের চাবিকাঠি কী? প্রাক মরশুমে পরিশ্রমের কথা উল্লেখ করেন বাগানের তারকা মিডফিল্ডার। লিস্টন বলেন, 'অফ সিজনে আমি কঠোর পরিশ্রম করেছি। মরশুমের প্রথম ম্যাচে ফ্রিকিক থেকে গোল পেয়ে আমি খুবই খুশি। আমি পরিশ্রম, আত্মনিবেদনে বিশ্বাসী। জানতাম আগের মরশুমের থেকে এবার আমাকে আরও বেশি ফিট থাকতে হবে। বিরতিতে আমি নিজের ভুলত্রুটি বুঝতে পেরেছি। সেগুলো শুধরে ফেলার চেষ্টা করেছি। সময়টাকে কাজে লাগিয়েছি। জানতাম এবার আমাকে ভাল খেলতেই হবে। প্রথম ম্যাচে গোল আমাকে মোটিভেট করবে। নিজের পারফরম্যান্সে খুশি। ধীরে ধীরে আমরা আরও উন্নতি করব। আশা করছি গোটা মরশুমে আমরা ফর্ম ধরে রাখতে পারব।'
মরশুম শেষে বিয়ে করেছেন। তারপরই কি ভাগ্যের চাকা ঘুরতে শুরু করেছে? প্রশ্ন শুনেই লাজুক হাসি লিস্টনের। বলেন, 'লেডিলাক অবশ্যই কাজ করছে।' মরশুমের প্রথম গোল স্ত্রী এবং পরিবারকে উৎসর্গ করেন। দ্বিতীয় গোল মোহনবাগান ফ্যানদের নামে। প্রথমার্ধের শেষে আপুইয়া লালকার্ড দেখায় বাকি সময়টা দশজনে খেলতে হয়। নির্ধারিত সময়ের ৪৭ মিনিট এবং সংযুক্তি সময় একজন কম ম্যান নিয়ে খেলেও দাপুটে জয়। দশজনে হয়ে যাওয়ায় পর ড্রেসিংরুমে কী বলেছিলেন বাস্তব রায়? লিস্টন বলেন, 'কোচ আমাদের মাথা ঠাণ্ডা রাখতে বলেছিলেন। বলেন, আমাদের মধ্যে কোয়ালিটি আছে। বল ধরে খেলার পরামর্শ দেন।' আগের দু'বছর ১৭ নম্বর জার্সিতে খেলেন। এবার ৭ নম্বরে দেখা যায় লিস্টনকে। জার্সি বদলে শুরুতেই সাফল্য। বাগানে দু'বছর কাটানোর পর কেন হঠাৎ জার্সি বদল? লিস্টন বলেন, 'গত বছর ৭ নম্বর জার্সি পাওয়া যায়নি। এবার ক্লাব বলল আছে। তাই আমি জার্সি বদলাতে রাজি হয়ে যাই। আগের বছর শুরুতে গোল আসছিল না। এবার প্রথম ম্যাচে গোল পেয়ে ভাল লাগছে। গোটা মরশুম এভাবেই চালিয়ে যেতে চাই।' সবে মরশুম শুরু হয়েছে। প্রথম ম্যাচে সাফল্যের বন্যায় গা ভাসাতে চান না। বরং, আরও বেশি সতর্ক। বড় জয় দিয়ে ডুরান্ড কাপ শুরু করতে পেরে সন্তুষ্ট। মেনে নিলেন মোটিভেশন বাড়বে। তবে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, সবে শুরু। মিনি ডার্বি জয় বেশি উদ্বেলিত হওয়ার কারণ নেই।
