আজকাল ওয়েবডেস্ক: শনিবারটা সাধারণত ছুটির দিন হিসেবে ধরা হলেও অনেক অফিসই এদিন খোলা থাকে। ফলে, অফিস টাইমে সকাল থেকে ট্রেনে ভিড় লক্ষ্য করা যায়।
এদিনও তার অন্যথা হয়নি। কিন্তু ভিড়টা নিত্যযাত্রীদের থেকেও অনেক বেশি নীল সাদা জার্সির। বিধাননগর স্টেশনে নেমে অন্যদিন বেশির ভাগ ছোটেন কেউ সেক্টর ফাইভের দিকে, কেউ বিকাশ ভবনের দিকে, কেউ আবার বেলেঘাটার দিকে।
এদিন অধিকাংশরই গন্তব্য সল্টলেক স্টেডিয়াম। কলকাতা ডার্বি ছাড়া সচরাচর এই ছবিটা দেখা যায়না। বিধাননগর স্টেশনে নেমেই স্টেডিয়াম-স্টেডিয়াম করে হাঁক শোনা গেল অটোওয়ালা, বাস কন্ডাক্টরদের।
যুবভারতীতে লিও মেসি তাঁর ভক্তদের সঙ্গে দেখা করবেন সকাল ১০.৩০ নাগাদ। তারপর একাধিক অনুষ্ঠান রয়েছে। কিন্তু ভক্তরা ভিড় করতে শুরু করে দিয়েছেন সকাল থেকেই।
প্রায় ৭টা থেকে যুবভারতীর সামনে লম্বা লাইন। ফ্রি-সিটিং যেহেতু বেশিরভাগেরই সামনে বসার লক্ষ্য থেকে তাড়াতাড়ি বেরিয়েছেন বাড়ি থেকে।
যতটা সামনে থেকে চাক্ষুষ করা যায় বিশ্বকাপজয়ী মেসিকে এই আর কী। বেশির ভাগেরই পরনে আর্জেন্টিনার জার্সি, হাতে ভারতের পতাকা। অনেকে আবার গায়ে চাপিয়েছেন মেসির মুখ আঁকা টি-শার্ট।
সেলফি তুলে মেসির নামে স্লোগান দিতে দিতে স্টেডিয়ামের উদ্দেশ্যে ছুটছেন ভক্তরা। উল্লেখ্য, শুক্রবার রাত আড়াইটে নাগাদ দমদম বিমানবন্দরে নামেন ফুটবলের ম্যাজিশিয়ান।
২০১১ সালের পর আবার ২০২৫। ১৪ বছর পর ফের কলকাতায় আর্জেন্টাইন তারকা। রাত ১২.৫০ মিনিটের প্রাইভেট জেটে আসার কথা ছিল মেসির।
আড়াইটে নাগাদ কলকাতায় পা রাখেন। নীল ট্রাউজারের ওপর নীল ব্লেজার। ভেতরে গোল গলা সাদা টি-শার্ট। হাতে একটি কালো ছোট ব্যাগ। মুখে লেগে ট্রেডমার্ক লাজুক হাসি।
ঘড়ির কাটায় তখন আড়াইটে বেজে গিয়েছে। কিন্তু একগাল হাসি নিয়েই বিমানবন্দর থেকে বেরোতে দেখা যায় বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন অধিনায়ককে।
মেসির এক ঝলক পেতে বিমানবন্দরের বাইরে কাতারে কাতারে মানুষ অপেক্ষা করছিল। মেসি বেরোনো মাত্র উপচে পড়ে ভিড়।
ভারত এবং আর্জেন্টিনার পতাকা নিয়ে উচ্ছ্বাসে মাততে দেখা যায় মেসি ভক্তদের। সঙ্গে একনাগাড়ে চলে মেসি, মেসি ধ্বনি।
১৪ বছর আগে তারকা ফুটবলার যখন প্রথমবার কলকাতায় এসেছিলেন, সেদিনও বিমানবন্দরে রাত জেগেছিল ভক্তরা। মধ্যরাতে নামার কথা ছিল মেসির।
রাত বারোটা থেকে বিমানবন্দর চত্বরে উৎসুক জনতা ভিড় জমালেও, মেসির দর্শন পাওয়া যায়নি। পুরোনো বিমানবন্দরের পেছনের গেট দিয়ে বের করা হয়েছিল মেসিকে।
হতাশ হয়েই মাঝরাতে বাড়ি ফিরতে হয় কলকাতার ফুটবলপ্রেমীদের। এদিন অবশ্য ব্যতিক্রম। ভক্তদের বিমানবন্দরে যাওয়া সার্থক।
বিমানবন্দরের ভিআইপি গেট দিয়েই বেরোন আর্জেন্টাইন তারকা। বিলাসবহুল গাড়ির প্রথম সিটে বসে হাসিমুখেই বিমানবন্দর ছাড়েন মেসি।
তিনদিনের ভারত সফরে চার শহরে যাবেন বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক। শুরু কলকাতা দিয়ে। তিলোত্তমায় মাত্র ১২ ঘণ্টার ঝটিকা সফর। বিশ্রাম নেওয়ারও সুযোগ পাবেন না মেসি।
শনিবার ঠাসা সূচি। যার শুরুটা যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন সংলগ্ন পাঁচতারা হোটেল দিয়ে। প্রথমেই স্পনসরদের প্রোগ্রাম। মিট অ্যান্ড গ্রিট মেসি।
সেখানেই ১০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তারকা ফুটবলারের সঙ্গে ছবি তোলার সুযোগ পাবে ভক্তরা। তারপর সাড়ে দশটা থেকে ভার্চুয়ালি লেকটাউনে নিজের মূর্তি উন্মোচন করবেন।
১১.১৫ নাগাদ যুবভারতীর উদ্দেশে রওনা দেবেন। সাড়ে এগারোটায় যুবভারতীতে উপস্থিত হবেন শাহরুখ খান। থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এবং সৌরভ গাঙ্গুলি।
তারপর সংবর্ধনা দেওয়া হবে মেসিকে। মোহনবাগান অলস্টার এবং ডায়মন্ড হারবার অলস্টার দলের প্লেয়ারদের সঙ্গে পরিচয় সারবেন মেসি।
ফুটবল ম্যাজিশিয়ানের পাশাপাশি থাকবেন দুই আর্জেন্টাইন তারকা লুই সুয়ারেজ এবং রডরিগো ডি পল। দুপুর দুটোয় প্রাইভেট জেটে হায়দরাবাদের উদ্দেশে রওনা হবেন মেসি।
