আজকাল ওয়েবডেস্ক: যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে লিওনেল মেসির কলকাতা সফরের সময় যে ঘটনা ঘটে তার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
মঙ্গলবার তদন্ত কমিটির নির্দেশে শোকজ নোটিশ পাঠানো হল রাজীব কুমার এবং সিপি বিধাননগর মুকেশ কুমারকে। জানা গিয়েছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শোকজ নোটিশের জবাব দিতে হবে রাজীব কুমারকে।
জবাব তলব করা হয়েছে সিপি মুকেশ কুমারের কাছেও। মুখ্যমন্ত্রীর তৈরি করা তদন্ত কমিটি সিট গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল এদিন।
তারপরেই চার আইপিএসের নেতৃত্বে সিট গঠন করা হয়। আরও জানা গিয়েছে, বিধাননগরের ডিসিপি অনীশ সরকারের বিরুদ্ধে বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। ক্রীড়া দপ্তরের প্রধান সচিব রাজেশ কুমার সিনহাকেও নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, চার আইপিএসের নেতৃত্বে গঠিত সিটে রয়েছেন জাভেদ শামিম, সুপ্রতিম সরকার, পীযূষ পাণ্ডে এবং মুরলীধর। অন্যদিকে, দায়িত্বে গাফিলতির অভিযোগে বিধাননগরের ডিসিপি অনীশ সরকারের বিরুদ্ধে বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ।
যুবভারতীর দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে স্টেডিয়ামের সিইও দেবুকমার নন্দনকেও। উল্লেখ্য, গত শনিবার ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে অপেক্ষা করার পরেও মানুষের ভিড় মেসিকে ঘিরে থাকায় ভক্তরা আর্জেন্টিনার ফুটবল তারকাকে এক ঝলকও দেখতে পারেননি।
যার ফলে স্টেডিয়ামে বিশৃঙ্খলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। যে অনুষ্ঠানটি দুই ঘণ্টাব্যাপী হওয়ার কথা ছিল এবং যেখানে মেসির অভিনেতা শাহরুখ খান, সৌরভ গাঙ্গুলি এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল।
কিন্তু অনুষ্ঠানটি আধ ঘণ্টারও কম সময়ে শেষ হয়ে যায়। যা ভক্তদের হতাশ করে। এর পরেই রণক্ষেত্রে পরিণত হয় যুবভারতী।
মাঠে পৌঁছতেই মেসিকে বেশ কয়েকজন ব্যক্তি ও রাজনীতিবিদরা ঘিরে ধরেন। এর ফলে গ্যালারিতে থাকা দর্শকরা তাঁকে ঠিকমতো দেখতে পাচ্ছিলেন না।
এর ফলে ক্ষুব্ধ দর্শকরা কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে আওয়াজ দিতে থাকেন। মাঠের দিকে চেয়ার ও বোতল ছুঁড়ে নিজেদের অসন্তোষ প্রকাশ করতে থাকেন।
বিশৃঙ্খলার মধ্যে মেসির স্টেডিয়াম প্রদক্ষিণ সংক্ষিপ্ত করা হয় এবং নিরাপত্তা কর্মীরা তাঁকে স্টেডিয়াম থেকে সরিয়ে নিয়ে যান। ৩৮ বছর বয়সী মহাতারকা মাত্র ২০ মিনিটের জন্য স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন। ১১টা ৫৩ মিনিটে মাঠ থেকে বেরিয়ে যান তিনি।
গ্যালারির ফেন্সিং টপকে মাঠে ঢুকে পড়লেন অগুণতি দর্শক। ভাঙচুর করা হল ডাগ আউটে। শামিয়ানা উল্টে দেওয়া হয়। গ্যালারি থেকে চেয়ার এবং জলের বোতল ছুঁড়ে মারা হয়।
গোলপোস্ট ভেঙে ফেলা হয়। ক্ষুব্ধ জনতাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে ব়্যাফ নামানো হয়। বেশ খানিকক্ষণ পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। স্টেডিয়ামের বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন আগত দর্শকরা। তাঁরা একটাই দাবি ছিল, টাকা ফেরত চাই।
যুবভারতীর পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন ডিজি রাজীব কুমার এবং এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জাভেদ শামিম। দু’জনেই জানান, যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আয়োজকদের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হবে। আয়োজকদের লিখিত জানাতে হবে যে, টিকিটের মূল্য ফেরত দিতে হবে। নইলে আইনি ব্যবস্থা।
ডিজি এবং এডিজি প্রথমে জানান মূল উদ্যোক্তা শতদ্রু দত্তকে আটক করা হয়েছে। কিন্তু পরে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
