আজকাল ওয়েবডেস্ক:‌ ম্যাচ শেষে সূর্যরা হাত মেলাননি পাক ক্রিকেটারদের সঙ্গে। যা নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে। তবে এটা ঘটনা, শুধু পাকিস্তান ক্রিকেটাররা নন, খেলা শেষে আরও দু’জনের দিকে তাকাননি সূর্যকুমার যাদবরা। পাক ক্রিকেটারদের পাশাপাশি আরও দু’জনের সঙ্গে হাত মেলাননি তাঁরা। সেই দু’জন হলেন ভারত–পাকিস্তান ম্যাচের দায়িত্বে থাকা দুই আম্পায়ার।


ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন বাংলাদেশের আম্পায়ার মাসুদুর রহমান ও শ্রীলঙ্কার আম্পায়ার রুচিরা পাল্লিয়াগুরুগে। পাকিস্তানকে হারিয়ে সোজা সাজঘরের দিকে হাঁটতে থাকেন সূর্যকুমার ও শিবম দুবে। পাক ক্রিকেটারদের সঙ্গে হাত মেলাননি তাঁরা। এমনকি, আম্পায়ারদের সঙ্গেও হাত না মিলিয়েই সাজঘরে ফিরে যান ভারতের দুই ক্রিকেটার।


এটা ঘটনা, ক্রিকেটে খেলা শেষে সাধারণত দু’দলের ক্রিকেটাররা একে অপরের সঙ্গে হাত মেলান। ম্যাচের আম্পায়ারদের সঙ্গেও হাত মেলান তাঁরা। দুই দলের কোচ, সাপোর্ট স্টাফরাও মাঠে নেমে একে অপরের সঙ্গে হাত মেলান। এটাই খেলোয়াড়ি মানসিকতা। কিন্তু ভারত–পাকিস্তান ম্যাচে সেই ছবি উধাও ছিল। খেলা শেষে সাজঘরে ফিরে দরজা বন্ধ করে দেয় ভারত। মাঠে হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা। পাকিস্তানের কোচ মাইক হেসন ভারতের সাজঘরের কাছেও যান। কিন্তু দরজা বন্ধ থাকায় ঢুকতে পারেননি তিনি।


ভারতের এই মানসিকতার সমালোচনা করেছে পাকিস্তান। প্রতিবাদে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বয়কট করেন পাকিস্তানের অধিনায়ক সলমন আলি আঘা। তিনি না যাওয়ায় অনুষ্ঠান ছোট করতে হয়। পরে সাংবাদিক বৈঠকে ভারতকে নিশানা করেন হেসন। জবাব দিয়েছেন ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, দেশবাসীর মুখে হাসি ফোটাতে এই ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন তাঁরা। সেটাই করে দেখিয়েছেন।


খেলা শেষে সাংবাদিক বৈঠকে সূর্যকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ভারত কি খেলোয়াড়ি মানসিকতা দেখায়নি? জবাবে ভারত অধিনায়ক বলেন, ‘‌কিছু কিছু বিষয় খেলোয়াড়ি মানসিকতার থেকেও বেশি হয়। আমরা পহেলগাঁও হামলায় নিহতদের পরিবারের পাশে রয়েছি। ভারতের সাহসী সেনাবাহিনীর পাশেও রয়েছি।’‌ সূর্যের কথা থেকে পরিষ্কার, ইচ্ছা করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।


কেন তাঁরা হাত মেলাননি, তার কারণও জানিয়েছেন সূর্য। তিনি বলেন, ‘‌আমরা এখানে আসার সময়ই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে খেলতেই আসছি। আমরা জবাব দিতে চেয়েছিলাম। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড ও কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আমরা একমত।’‌


এশিয়া কাপে ভারত–পাক ম্যাচ শুরুর আগে থেকেই আলোচনা শুরু হয়েছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকে দাবি জানিয়েছিলেন, ভারতের উচিত ম্যাচ বয়কট করা। সূর্যরা খেলেছেন। ভারত অধিনায়ক জানিয়েছেন, সমাজমাধ্যম থেকে দূরে ছিলেন তাঁরা। সূর্য বলেন, ‘‌আমরা ঠিক করেছিলাম সমাজমাধ্যম থেকে দূরে থাকব। দুবাইয়ে পা দেওয়ার পরেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। ফলে আমাদের কোনও সমস্যা হয়নি।’‌ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলেছেন তাঁরা। পাকিস্তানকে দুরমুশ করে দিয়েছেন জবাব। পাশাপাশি নিজেদের মতো করে প্রতিবাদও করেছেন সূর্যরা। তবে জানা গেছে টিম ইন্ডিয়ার হেড কোচ গৌতম গম্ভীর এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে ছিলেন।