আজকাল ওয়েবডেস্ক: এশিয়া কাপের আগেই ক্রিকেটের ২২ গজে ভারত- পাকিস্তান মহারণ নিয়ে বড় বিৃবতি দেওয়া হল সরকারের তরফে। তবে ভারত সরকারের নয়া এই ঘোষণা পহেলগাঁওয়ের ঘটনার আগের মতোই। জানানো হয়েছে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কোনও দ্বিপাক্ষিক সিরিজ অনুষ্ঠিত করা হবে না। তবে বহুজাতিক টুর্নামেন্টে একে অপরের মুখোমুখি হতে পারবে দুই দল। ফলে, ভারতীয় ক্রিকেট দল আসন্ন এশিয়া কাপে অংশ নেবে বলে ক্রীড়া মন্ত্রকের একটি সূত্র বৃহস্পতিবার নিশ্চিত করেছে। ভারত সরকার বরাবরই পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক ক্রীড়া সম্পর্কের ক্ষেত্রে কঠোর নীতি মেনে এসেছে। ক্রীড়া মন্ত্রক জানিয়েছে, ভারতীয় দল পাকিস্তানে যাবে না, তেমনই পাকিস্তানি দলকেও ভারত সফরের অনুমতি দেওয়া হবে না।

তবে এই নিষেধাজ্ঞা বহুজাতিক টুর্নামেন্টগুলির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। বিশ্বকাপ, অলিম্পিক কিংবা এশিয়া কাপের মতো আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় উভয় দেশই অংশ নেয় আন্তর্জাতিক ক্রীড়া সংস্থার নিয়মে। এসব প্রতিযোগিতা সাধারণত নিরপেক্ষ ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হয়, ফলে কোনও দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা থাকে না এবং রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ পরিবেশ বজায় থাকে। ক্রীড়া মন্ত্রকের একটি সূত্র সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডেকে জানিয়েছে, এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল আয়োজিত এশিয়া কাপে ভারতকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলতে বাধা দেওয়া হবে না। সংযুক্ত আরব আমিরশাহির দুবাইয়ে আগামী ১৪ ও সম্ভবত ২১ সেপ্টেম্বর ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নির্ধারিত করা হয়েছে। ফাইনাল হবে ২৯ সেপ্টেম্বর।

এবারে এশিয়া কাপের আসর বসবে টি–টোয়েন্টি ফরম্যাটে, যা আগামী বছরের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবেও ধরা হচ্ছে। ২০১২-১৩ মরশুমের পর থেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কোনও দ্বিপাক্ষিক ক্রিকেট সিরিজ হয়নি। তারপর থেকে দুই দেশের পুরুষ ও মহিলা দল কেবলমাত্র বহুজাতিক টুর্নামেন্ট এবং আইসিসি আয়োজিত ইভেন্টেই একে অপরের মুখোমুখি হয়েছে। উল্লেখ্য, এর আগে ২০২৩ সালে ভারত নিরাপত্তার কারণে পাকিস্তানে গিয়ে এশিয়া কাপে খেলতে অস্বীকার করেছিল। ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ক্ষেত্রেও একই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফলত ওই প্রতিযোগিতাগুলি নিরপেক্ষ ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হয়।

সম্প্রতি পাকিস্তানের হকি দলও ভারতে এশিয়া কাপ হকিতে অংশ নিতে আসতে অস্বীকার করেছে। ওই টুর্নামেন্ট ২৮ সেপ্টেম্বর রাজগীরে শুরু হবে। প্রসঙ্গত, পহেলগাঁও জঙ্গি হামলায় ২৬ জন পর্যটকের মৃত্যুর ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ার পর একাধিক প্রাক্তন ক্রিকেটার ভারতকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এশিয়া কাপে না খেলার আহ্বান জানিয়েছিলেন। হামলার পর ভারত সীমান্তের ওপারে জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করতে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মাধ্যমে পাল্টা হামলা করে।

এই পরিস্থিতিতে এশিয়া কাপের আগে ক্রীড়া মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘পাকিস্তানের সঙ্গে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে ভারতের অবস্থান তার সামগ্রিক নীতির প্রতিফলন। দ্বিপাক্ষিক সিরিজের ক্ষেত্রে ভারতীয় দল পাকিস্তানে যাবে না, পাকিস্তানিও ভারতে এসে খেলতে পারবে না। তবে আন্তর্জাতিক ও বহুজাতিক প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে ভারত আন্তর্জাতিক ক্রীড়া সংস্থার নিয়ম ও নিজের খেলোয়াড়দের স্বার্থ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে। ভারত বর্তমানে ক্রীড়া জগতে অন্যতম আয়োজক দেশ হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেছে’। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘ভারতীয় খেলোয়াড় ও দল বহুজাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে যেখানে পাকিস্তানি খেলোয়াড় বা দলও থাকবে। একইভাবে, ভারতে অনুষ্ঠিত এমন টুর্নামেন্টে পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হবে’।