আজকাল ওয়েবডেস্ক: আইসিসির সামনে বড় সঙ্কট দেখা দিয়েছে ২০২৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মাত্র দু’মাস আগে।

রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের নিয়ন্ত্রণাধীন জিওহটস্টার আইসিসিকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে, তারা বিদ্যমান মিডিয়া রাইটস চুক্তি থেকে সরে দাঁড়াতে চায়।

চার বছরের চুক্তির এখনও দু’বছর বাকি থাকা সত্ত্বেও বিপুল আর্থিক ক্ষতির কারণে এই পদক্ষেপ নিয়েছে রিলায়েন্সের অধীনে থাকা এই সংস্থা।

সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী এমনটাই জানা গিয়েছে। জিওস্টারের নোটিশ পাওয়ার পর আইসিসি নতুন করে ২০২৬–২৯ সাল পর্যন্ত ভারতের মিডিয়া রাইটস বিক্রির প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, আইসিসি এই কয়েক বছরের জন্য ২.৪ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করতে চাইছে। ২০২৪–২৭ সালের চুক্তির সময় এই মূল্য ছিল ৩ বিলিয়ন ডলার।

যেখানে প্রতি বছর অন্তত একটি করে পুরুষদের আইসিসি টুর্নামেন্ট অন্তর্ভুক্ত ছিল। জানা গেছে, আইসিসি ইতিমধ্যেই সোনি পিকচার্স নেটওয়ার্ক ইন্ডিয়া (এসপিএনআই), নেটফ্লিক্স এবং অ্যামাজন প্রাইম ভিডিওর সঙ্গে কথা বলেছে।

কিন্তু টাকার অঙ্কের কারণে কেউই আগ্রহ দেখায়নি। ফলে ভারতীয় বাজারে নতুন ব্রডকাস্ট পার্টনার খুঁজতে গিয়ে আইসিসি কঠিন অবস্থায় পড়েছে।

তবে জানা গিয়েছে, আইসিসি নতুন কোনও সম্প্রচারকারী সংস্থা খুঁজে না পায়, তবে জিওহটস্টারকেই বাধ্য হয়ে ২০২৭ সাল পর্যন্ত চুক্তি চালিয়ে যেতে হবে।

প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, ২০২৪–২৫ অর্থবর্ষে জিওহটস্টার ক্রীড়া চুক্তির সম্ভাব্য ক্ষতির জন্য সংরক্ষিত অর্থ দ্বিগুণ করেছে।

আগের বছরের তুলনায় ১২,৩১৯ কোটি টাকা বৃদ্ধির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫,৭৬০ কোটি টাকায়। সংস্থার অডিটেড স্ট্যান্ডঅ্যালোন আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, দীর্ঘমেয়াদি স্পোর্টস ও কনটেন্ট রাইটস থেকে প্রত্যাশিত আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি হওয়ায় এই চাপ তৈরি হয়েছে।

ভায়াকম১৮-এর সঙ্গে এক হওয়ার আগে স্টার ইন্ডিয়া ২০২৩–২৪ অর্থবর্ষে ১২,৫৪৮ কোটি টাকার নেট লোকসান দেখিয়েছিল।

যার প্রায় পুরোটা ১২,৩১৯ কোটি আইসিসির ব্যয়বহুল মিডিয়া রাইটস চুক্তির জন্য সংরক্ষিত ছিল। অন্যদিকে, ২০২৪ সালে আইসিসি ৪৭৪ মিলিয়ন ডলারের আয় দেখিয়েছে।

যার কারণে বিশ্বজুড়ে ক্রিকেটের অর্থনৈতিক দিক তুলে ধরেছিল ক্রিকেট বিশ্বের কাছে। কিন্তু এই একই সময়ে চরম ক্ষতির মুখে পড়তে হল জিওহটস্টারকে।

সংস্থার আর্থিক সংকট আরও বেড়ে যায় ভারত সরকারের অনলাইন মানি গেমিং বন্ধের সিদ্ধান্তের পর। ড্রিম ইলেভেন এবং মাই ইলেভেন সার্কেলের মতো রিয়েল-মানি গেমিং ও ফ্যান্টাসি অ্যাপগুলি বাজার থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় প্রায় ৮৪০ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৭,০০০ কোটি টাকার বিজ্ঞাপনে ঘাটতি হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।

অন্যদিকে, নেটফ্লিক্স এখনও পর্যন্ত ক্রিকেটে প্রবেশ করেনি। বর্তমানে শুধুমাত্র ডব্লিউডব্লিউই-র স্পোর্টস এন্টারটেইনমেন্ট কনটেন্ট রয়েছে তাদের প্ল্যাটফর্মে।

অ্যামাজন প্রাইম ভিডিওর রয়েছে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের সঙ্গে ২০২৬ পর্যন্ত অংশীদারিত্ব। অস্ট্রেলিয়ার বাজারে ২০২৭ পর্যন্ত আইসিসি রাইটস রয়েছে।

কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেটের বাজারে অতিরিক্ত বিনিয়োগ করতে তারা আগ্রহী নয় বলেই জানা গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিশ্বকাপের আগে আইসিসি নতুন মিডিয়া রাইটস অন্য কোনও সংস্থাকে দেয় কিনা সেদিকেই নজর রয়েছে সকলের।