আজকাল ওয়েবডেস্ক: দুবাইয়ে আবার স্পিনারদের দাপট। নিউজিল্যান্ডের দুই সেরা ব্যাটারকে আউট করে ভারতকে ম্যাচে ফেরান কুলদীপ যাদব। বাকি কাজটা সারেন বরুণ চক্রবর্তী। ৫০ ওভারের শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে নিউজিল্যান্ডের রান ২৫১। জয়ের জন্য টিম ইন্ডিয়ার প্রয়োজন ২৫২ রান। যা করে ফেলা উচিত রোহিতদের। ফাইনালে নেই কিউয়িদের সেরা পেসার ম্যাট হেনরি। তারওপর দলে কোনও রিস্ট স্পিনার নেই। সুতরাং, যে ফর্মে আছে ভারতীয় ব্যাটাররা, মিচেল স্যান্টনার, মাইকেল ব্রেসওয়েলকে সামলাতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তবে শুরুতে ম্যাচের টেম্পো তুলে দিতে হবে রোহিতকে।
টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন মিচেল স্যান্টনার। চোটের জন্য শেষপর্যন্ত খেলতে পারেননি ম্যাট হেনরি। তাঁর জায়গায় সুযোগ পান নাথান স্মিথ। ফাইনালের আগে যা নিউজিল্যান্ডের কাছে বড় ধাক্কা। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভাল করে নিউজিল্যান্ড। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে যেখানে শেষ করেছিলেন, ঠিক সেখান থেকে শুরু করেন রাচিন রবীন্দ্র। মারমুখী মেজাজে পাওয়া যায় বাঁ হাতি ওপেনারকে। প্রথম সাত ওভার দ্রুত রান তোলে নিউজিল্যান্ড। অবশ্য ভারতীয় বংশোদ্ভুত কিউয়ি তারকা দু'বার জীবন ফিরে পায়। একবার নিজের বলে ক্যাচ ফেলেন মহম্মদ সামি। দ্বিতীয়বার বরুণের বলে ক্যাচ ফস্কান শ্রেয়স আইয়ার। শুরুতে পেসারদের বিরুদ্ধে স্বচ্ছন্দে ব্যাট করছিলেন দুই কিউয়ি ওপেনার। বিনা উইকেট হারিয়ে ৫০ রান অতিক্রম করে নিউজিল্যান্ড। পার্টনারশিপ ভাঙতে পাওয়ার প্লের মধ্যেই বরুণ চক্রবর্তীকে নিয়ে আসেন রোহিত শর্মা। তাতেই প্রাথমিক ধাক্কা খায় নিউজিল্যান্ড। উইল ইয়ংকে ফেরান রহস্য স্পিনার। তবে ম্যাচের আসল টার্নিং পয়েন্ট ১১তম ওভারে।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির গ্রুপ পর্বে এবং সেমিফাইনালে তেমন নজর কাড়তে পারেননি কুলদীপ যাদব। কিন্তু রবিবার ম্যাচের মোড় ঘোরান তিনি। নিজের প্রথম বলেই রাচিন রবীন্দ্রকে বোল্ড করেন। পরের ওভারের দ্বিতীয় বলেই ফেরান কেন উইলিয়ামসনকে। কুলদীপের হাতেই ধরা পড়েন তিনি। মাত্র ১৮ রানে তিন উইকেট হারানোর পর কিউয়িদের রান তোলার গতি মন্থর হয়ে যায়। পাওয়ার প্লের শেষে ১ উইকেট হারিয়ে ৬৯ রান ছিল নিউজিল্যান্ডের। ২৯ বলে ৩৭ রান করে আউট হন রাচিন। ইনিংসে ছিল চারটি চার, একটি ছয়। পরের দশ ওভারে মাত্র ৩২ রান। মাঝের ওভারে চার স্পিনারের কৃপণ বোলিংয়ে রানের গতি কমে যায় কিউয়িদের। চার-ছয় দূর অস্ত, নিয়মিত স্ট্রাইক রোটেট করতেও ব্যর্থ হয়। অ্যাঙ্করের ভূমিকা পালন করেন ড্যারেল মিচেল। ১০১ বলে ৬৩ রান করে আউট হন। একদিনের কেরিয়ারে সবচেয়ে মন্থর অর্ধশতরান মিচেলের। ৯১ বলে ৫০ সম্পূর্ণ করেন। ১১ বছরে কিউয়ি ব্যাটারের সবচেয়ে স্লো অর্ধশতরান। নিউজিল্যান্ডের ইনিংসে ১৫৫টি ডট বল।
দারুণ বোলিং রোটেট করেন রোহিত শর্মা। কিউয়ি ব্যাটারদের থিতু হতে দেননি। কুলদীপ, বরুণের ঘূর্ণিতে ম্যাচের মোড় ঘুরে যায়। গ্লেন ফিলিপসের সঙ্গে জুটি বেঁধে মাঝের ওভারগুলোতে নিউজিল্যান্ডকে ম্যাচে টিকিয়ে রাখেন মিচেল। সেই সময় উইকেট হারালে সমস্যায় পড়তে পারত নিউজিল্যান্ড। ৫২ বলে ৩৪ রান করেন ফিলিপস। শেষদিকে গুরুত্বপূর্ণ রান যোগ করেন মাইকেল ব্রেসওয়েল। তাঁর কাঁধে ভর করেই ২৫০ রানের গণ্ডি পেরোয় নিউজিল্যান্ড। ৪০ বলে ৫৩ রানে অপরাজিত থাকেন কিউয়ি অলরাউন্ডার। ইনিংসে ছিল ৩টি চার, ২টি ছয়। শেষদিকে ব্রেসওয়েলের ইনিংসে অন্তত লড়াই করার মতো রানে পৌঁছয় নিউজিল্যান্ড। জোড়া উইকেট নেন কুলদীপ যাদব এবং বরুণ চক্রবর্তী। এদিন একেবারেই অফফর্মে ছিলেন মহম্মদ সামি। ৯ ওভারে ৭৪ রান দেন। একটি উইকেট সান্ত্বনা মাত্র।
