আজকাল ওয়েবডেস্ক: আরও বড় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রাহুল দ্রাবিড় সরে যাওয়াই শ্রেয় বলে মনে করেন।

শনিবার ফ্র্যাঞ্চাইজির পক্ষ থেকে এমনই ঘোষণা করা হল। নিয়মিত রিভিউয়ের পর দ্রাবিড়কে আরও বড় ভূমিকায় চেয়েছিল রাজস্থান। কিন্তু ভারতের প্রাক্তন হেড কোচ সেটা প্রত্যাখান করেন। একটি বিবৃতিতে ফ্র্যাঞ্চাইজির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ''গত কয়েক বছরে রাজস্থান রয়্যালসের যাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা নেন রাহুল দ্রাবিড়। তাঁর নেতৃত্ব একটা প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করেছে। দলের মধ্যে নীতি তৈরি করেছে। ফ্র্যাঞ্চাইজির মধ্যে একটা সংস্কৃতি তৈরি করেছে। রাজস্থান রয়্যালসের প্লেয়ার থেকে শুরু করে ফ্যানরা দ্রাবিড়ের কাছে কৃতজ্ঞ। এতদিন ধরে ফ্র্যাঞ্চাইজির স্বার্থে নিজেকে সঁপে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।''

আরও পড়ুন: 'কারও গলগ্রহ হয়ে বাঁচার থেকে মরে যাওয়া ভাল', মোহনবাগানের ডিফেন্ডার এখন আট হাজার টাকার কেয়ারটেকার...

কিন্তু তাঁকে সরতে হল কেন? গতবারের আইপিএলে রাজস্থান রয়্যালস ব্যর্থ হয়েছিল। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ভারত জিতেছিল রাহুল দ্রাবিড়ের কোচিংয়ে। তার আগে ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ ভারত রানার্স আপ হয়েছিল তাঁরই কোচিংয়ে। সেই কারণেই দ্রাবিড়কে হেড কোচ করে আনা হয়েছিল রাজস্থান রয়্যালসে। শোনা যাচ্ছে রাজস্থানের ব্যর্থতার পর রাহুল দ্রাবিড়কে শাস্তিমূলক পদোন্নতি দেওয়া হয়েছিল। সেটাই দ্রাবিড় মানেননি। গত আইপিএল চলাকালীন তাঁর কিছু সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেনি রাজস্থান ম্যানেজমেন্ট। সেই কারণে তাঁর উপরে আরও কিছু দায়িত্ব চাপানো হয়েছিল

২০২৫ সালটা ভাল যায়নি রাজস্থানের। দশ ম্যাচের মধ্যে মাত্র চারটে ম্যাচ জেতেপয়েন্ট টেবিলে নবম স্থানে শেষ করে। যা চেন্নাই সুপার কিংসের একধাপ ওপরে। গত বছর সেপ্টেম্বরে একাধিক বছরের চুক্তিতে রাজস্থান রয়্যালসের হেড কোচ করা হয় দ্রাবিড়কেটিম ইন্ডিয়ার হেড কোচ হিসেবে তিন বছরের চুক্তি শেষ করার পর রাজস্থানে যোগ দেন। এর আগে ২০১২ এবং ২০১৩ আইপিএলে রাজস্থান রয়্যালসের অধিনায়ক ছিলেন। তারপর ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে দলের মেন্টর ছিলেন। এবার ফের রাজস্থানের হেড কোচ হিসেবে দ্রাবিড় ফেরায়, দ্বিতীয় আইপিএল জেতার আশায় ছিল সমর্থকরা। কিন্তু নবম স্থানে শেষ করে রাজস্থান। ১৪ ম্যাচের মধ্যে মাত্র চারটেতে জেতে। চোটের জন্য মাত্র ন'টি ম্যাচে খেলেন সঞ্জু স্যামসন। দলের অস্থায়ী অধিনায়ক ছিলেন রিয়ান পরাগ। কিন্তু এবার রাজস্থানের সঙ্গে সম্পর্ক বেশিদিন স্থায়ী হল না দ্রাবিড়ের। এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে হেড কোচের দায়িত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন।

রাজস্থান রয়্যালসে একাধিক তরুণ প্রতিভার পাশে দাঁড়ান দ্রাবিড়। তাঁদের তৈরি করেন। অনূর্ধ্ব-১৯ দলের কোচ হিসেবে ঋষভ পন্থ, শুভমন গিল, পৃথ্বী শ, যশস্বী জয়েসওয়ালদের উঠে আসার নেপথ্যে রয়েছেন দ্রাবিড়। এবার তাঁর হাত ধরেই বিশ্বমঞ্চে অভিষেক আরও এক তরুণ বৈভব সূর্যবংশীর। রাতারাতি স্টার হয়ে হয়ে যান তিনি। কী বিশেষ গুণ তাঁকে বাকিদের থেকে আলাদা করে, সেই বিষয়ে জানিয়েছিলেন সদ্য প্রাক্তন হওয়া রাজস্থানের হেড কোচ? দ্রাবিড় বলেন, 'ওর মধ্যে কোনও ভয় নেই। বড় মঞ্চে ভয় পায় না। এত অল্প বয়সীদের মধ্যে যা পাওয়া যায় না। হাতে বিভিন্ন শট আছে। আগামী দিনে এর থেকে আরও ভাল হবে। ও এখনও পুরোপুরি তৈরি হয়নি। দলগুলো ওর বিরুদ্ধে স্মার্ট ক্রিকেট খেলবে। টি-২০ এমনই একটা ফরম্যাট, যেখানে সব ম্যাচে রান পাবে না।' সূর্যবংশীর শটের বৈচিত্রের প্রশংসা করেন রাজস্থানের হেড কোচ। ইতিহাসের পাতায় নাম তোলার পর দ্রাবিড়ের নাম উল্লেখ করেছিলেন উঠতি তারকা। জানান, গত তিন মাসে তাঁর তত্ত্বাবধানে থেকে অনেকটাই উন্নতি করেছেন। কিন্তু কৃতিত্ব নিতে চান না দ্রাবিড়। তিনি জানান, নিজের কৃতিত্ব এবং প্রতিভাই তাঁকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছে। এবার হয়ত আইপিএলের অন্য কোনও দলের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেবেন ভারতীয় ক্রিকেটের 'দ্য ওয়াল।' 

আরও পড়ুন: ধোনিকে বিরাট দায়িত্ব বোর্ডের, কিন্তু কাঁটা যে গম্ভীর...মাহি কী করবেন?