আজকাল ওয়েবডেস্ক: বাংলার ফুটবলের মুকুটে যুক্ত হল নতুন পালক। এবার শুরু হতে চলেছে বাংলার আইএসএল। মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হল বেঙ্গল সুপার লিগের পথ চলা। এদিন শহরের একটি পাঁচতারা হোটেলে টুর্নামেন্টের লোগো উন্মোচন হয়। বেল বাজিয়ে লিগের শুভ সূচনা হয়। আইএফএ এবং শ্রাচী স্পোর্টস যৌথভাবে এই লিগ পরিচালনা করবে। এককথায়, বাংলার ফুটবলের বাণিজ্যিকীকরণ। আইএফএর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যাটন তুলে দেওয়া হয় শ্রাচী স্পোর্টসের হাতে। কলকাতা লিগে অংশ নেয় শহরের ক্লাবগুলো। কিন্তু বেঙ্গল সুপার লিগে ফোকাস করা হবে রাজ্য স্তরে। বিভিন্ন রাজ্য থেকে মোট আটটি ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে শুরু হবে বিএসএল। খেলা হবে চারটে স্টেডিয়ামে। প্রাথমিকভাবে কয়েকটা স্টেডিয়াম শর্টলিস্ট করা হয়েছে। এই তালিকায় রয়েছে শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম, দুর্গাপুরের ভগত সিং স্টেডিয়াম, ব্যারাকপুর স্টেডিয়াম, বহরমপুর স্টেডিয়াম, নৈহাটি স্টেডিয়াম, কৃষ্ণনগর স্টেডিয়াম, ডিএসএ মালদা, হলদিয়ায় দুর্গাচক স্টেডিয়াম এবং বারাসাত স্টেডিয়াম। এগুলোর মধ্যে থেকে চারটে স্টেডিয়াম বেছে নেওয়া হবে।
প্রাথমিকভাবে আট দল নিয়ে শুরু হবে বিএসএল। মোট ৬১টি ম্যাচ। হোম এবং অ্যাওয়ে ফরম্যাটে ৫৬টি ম্যাচ হবে। দুটো সেমিফাইনাল হবে হোম এবং অ্যাওয়ে ভিত্তিক। একটা ফাইনাল। প্রত্যেক দলে অন্তত ২৫ জন ফুটবলার রাখতে হবে। একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক জেলার ফুটবলার রাখা বাধ্যতামূলক। দুই মাস ধরে চলবে এই লিগ। দিওয়ালির পর শুরু হবে বেঙ্গল সুপার লিগ। আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্ত বলেন, 'বাংলার ফুটবল কলকাতা ভিত্তিক, আমরা জেলাতে পৌঁছতে পারিনি। পাশ্ববর্তী জেলায় কলকাতা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ দেখা যায়। কিন্তু শুধু কলকাতার কাছাকাছি জেলা নিয়ে করলে হবে না। পুরুলিয়া, মুর্শিদাবাদ, দার্জিলিং এবং অন্যান্য জায়গাও আছে। জেলার মানুষদের মধ্যে ফুটবলপ্রীতি বেশি। সেখান থেকেই বেঙ্গল সুপার লিগ। আশা করছি এটা সেতু হিসেবে কাজ করবে। জেলা লিগের ফুটবলাররা নিজেদের তুলে ধরতে পারবে বাংলার মানুষের কাছে। বাংলার ফুটবল জেলার প্লেয়াররা এগিয়ে নিয়ে চলেছে। জেলার ভাল প্লেয়ারদের একটা মঞ্চ করে দেবে নিজেদের পারদর্শিতা তুলে ধরার। জেলার দলগুলো লড়াইয়ে নামলে জেলার মানুষরা দল বেঁধে মাঠ ভরাবে। সেটাই মূলত বেঙ্গল ফুটবল হবে। জেলার ফুটবলারদের সঠিক মঞ্চ আমরা দিতে পারিনি। এই লিগ বাংলার ফুটবলকে অনেকটা এগিয়ে নিয়ে যাবে।'
আইএফএর পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি অজিত ব্যানার্জি, চেয়ারম্যান সুব্রত দত্ত, সচিব অনির্বাণ দত্ত সহ অন্যান্য কর্তারা। শ্রাচী স্পোর্টের পক্ষ থেকে ছিলেন দুই ডিরেক্টর রাহুল টোডি এবং তমাল ঘোষাল। শ্রাচী স্পোর্টসের কর্ণধার রাহুল টোডি বলেন, 'বাংলার এবং ভারতীয় ফুটবলের ঐতিহাসিক দিন। পুরো বাংলার ফুটবল মহল এখানে হাজির। আমি সবসময় এমন সব প্রজেক্ট চেয়েছি যেখানে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করা যাবে। বিএসএলের লক্ষ্য শুধু বাংলা নয়, ভারত থেকে প্রতিভা তুলে আনা।'
লিগের অফিসিয়াল ব্রডকাস্টিং পার্টনার জি স্পোর্টস। চ্যানেলের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সম্রাট ঘোষ এবং ভবেশ জানওয়ালকার। বেঙ্গল সুপার লিগের আনুষ্ঠানিকভাবে পথ চলার দিন চাঁদের হাট। আটের দশকের ফুটবলার থেকে শুরু করে বর্তমান প্রজন্ম, সবাই হাজির ছিলেন এক ছাদের তলায়। এই তালিকায় ছিলেন ভাস্কর গাঙ্গুলি, সাব্বির আলি, মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য, শ্যাম থাপা, সমরেশ চৌধুরী, প্রশান্ত ব্যানার্জি, বিকাশ পাজি, মিহির বসু, মানস ভট্টাচার্য, বিদেশ বসু, জামশিদ নাসিরি, বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য, সুমিত মুখার্জি, রহিম নবি, অ্যালভিটো ডি কুনহা, দুলাল বিশ্বাস, দীপঙ্কর রায়, অসীম বিশ্বাস প্রমুখ। সবাইকে সংবর্ধিত করা হয়।
