আজকাল ওয়েবডেস্ক:‌ রুদ্ধশ্বাস লড়াই। যেটা লর্ডসে হয়নি, সেটাই ম্যাঞ্চেস্টারে করে দেখালেন রবীন্দ্র জাদেজা। সঙ্গে ওয়াশিংটন সুন্দর। জোড়া শতরানের সুবাদে ম্যাচ বাঁচাল ভারত। সামনে আর একটিই টেস্ট ওভালে। যা শুরু হবে আগামী বৃহস্পতিবার থেকে। 


এটা ঘটনা, ২০২৭ সালের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সার্কেল চলছে। সেই লক্ষ্যেই দৌড় শুরু করেছে বিশ্বের ন’টা দল। তাতে রয়েছে ভারতও। ম্যাঞ্চেস্টারে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে লড়াই করে টেস্ট ড্র করেছে ভারত। ফলে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে পয়েন্ট বেড়েছে তাদের।


চারটে টেস্টের মধ্যে একটা জিতেছে ভারত। হেরেছে দুটো। একটা টেস্ট ড্র হয়েছে। ফলে ভারতের পয়েন্ট ১৬। শুভমন গিলদের পয়েন্টের শতাংশ ৩৩.৩৩। এই পয়েন্টের শতাংশের উপরেই নির্ভর করে কোন দুই দল ফাইনাল খেলবে। পয়েন্ট তালিকায় আপাতত চার নম্বরে রয়েছে ভারত।


পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে অস্ট্রেলিয়া। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তাদের দেশে তিনটে টেস্টেই হারিয়েছেন প্যাট কামিন্সরা। তাঁদের পয়েন্ট ৩৬। পয়েন্টের শতাংশ ১০০। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে শ্রীলঙ্কা। দুটো টেস্টের মধ্যে তারা একটা জিতেছে। অপর টেস্ট ড্র হয়েছে। তাদের পয়েন্ট ১৬। শ্রীলঙ্কার পয়েন্টের শতাংশ ৬৬.৬৭।
ভারতকে দুটো টেস্টে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। শ্রীলঙ্কার থেকে বেশি টেস্ট জিতলেও পয়েন্ট তালিকায় তিন নম্বরে রয়েছন বেন স্টোকসরা। কারণ, ইংল্যান্ড একটা টেস্ট হেরেছে। দুটো টেস্টে জয় ও একটা টেস্ট ড্রয়ের পর তাদের পয়েন্ট হওয়া উচিত ছিল ২৮। কিন্তু লর্ডসে মন্থর বোলিংয়ের জন্য ইংল্যান্ডের ২ পয়েন্ট কাটা গিয়েছে। ফলে তাদের পয়েন্ট ২৬। বেন স্টোকসদের পয়েন্টের শতাংশ ৫৪.১৬।


পাঁচ নম্বরে রয়েছে বাংলাদেশ। দুটো টেস্ট খেলে তারা একটা ড্র করেছে ও একটা হেরেছে। ৪ পয়েন্ট ও ১৬.৬৭ পয়েন্টের শতাংশ তাদের। তিনটে টেস্টই হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের পয়েন্ট ও পয়েন্টের শতাংশ শূন্য। গত বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা এ বার এখনও কোনও সিরিজ খেলেনি। নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তানও খেলা শুরু করেনি। ফলে তারা এখনও কোনও পয়েন্ট পায়নি।

এদিকে,  ঋষভ পন্থ মাঠে না থেকেও থাকবেন ওভালে। তাঁর ব্যাটিং গোটা বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছে। পায়ের পাতায় চিড় ধরা এক ব্যাটসম্যান খোঁড়াতে খোঁড়াতে নেমে পড়লেন মাঠে। 

এই দৃশ্য চমকে দেওয়ার মতো। এই দৃশ্য সাজঘরকে উত্তেজিত করার মতো। ক্রিস ওকসের ডেলিভারিটা আছড়ে পড়ে পন্থের বুটে। যন্ত্রণাকাতর পন্থকে দেখা যায় মাটিতে শুয়ে রয়েছেন। তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য মাঠে ঢুকে পড়েন ফিজিও। শেষমেশ অ্যাম্বুল্যান্স করে পন্থকে নিয়ে যাওয়া হয় মাঠের বাইরে।
পরের দিন দল যখন বিপন্ন, পন্থ হৃদয়ের ডাকে সাড়া দিয়ে ভাঙা পায়ে নেমে পড়েন ব্যাট করতে। 

ভারতের রান তখন ৬ উইকেটে ৩১৪। এই পরিস্থিতিতে ব্যাট করতে নামেন পন্থ। অন্য কেউ হলে এমন পরিস্থিতিতে নামার সাহসই হয়তো দেখাতেন না। কিন্তু তিনি তো ঋষভ পন্থ। মৃত্যুমুখ থেকে ফিরে আসা এক যোদ্ধা তিনি। অকুতোভয় তিনি। হেরে যাওয়ার ভয় তাঁর নেই।

ড্রেসিং রুম থেকে সিঁড়ি বেয়ে নেমে আনলেন ঋযভ পন্থ। দেখেই বোঝা যাচ্ছে তিনি ভাল করে হাঁটতে পারছেন না। খোঁড়াচ্ছেন। প্যাভিলিয়ন থেকে নেমে ক্রিজ পর্যন্ত পৌঁছতেই লেগে গেল অনেকটা সময়। তখনও তিনি জানেন না, সামনের পায়ে ডিফেন্স করতে পারবেন কিনা। তিনি জানেন না দ্রুত সিঙ্গলস নিতে পারবেন কিনা। তিনি জানেন না সহজাত আক্রমণাত্মক শট খেলতে পারবেন কিনা। ঋষভ পন্থ অভাবনীয় সব কাজ করেন।