ইস্টবেঙ্গল - ৩ (নাসিব, বিষ্ণু, গুইতে)
ইউনাইটেড কলকাতা এসসি - ০
আজকাল ওয়েবডেস্ক: বৃহস্পতি বিকেলে লাল হলুদ গ্যালারিতে জ্বলল মশাল। কলকাতা লিগের প্রিমিয়ার ডিভিশনের সুপার সিক্সের প্রথম ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের কাছে ০-৩ গোলে হার ইউনাইটেড কলকাতা স্পোর্টস ক্লাবের। লাল হলুদের গোলদাতা নসিব রহমান, পিভি বিষ্ণু এবং গুইতে ভ্যানলালপেকা। তবে শতাব্দীপ্রাচীন ক্লাবের বিরুদ্ধে লড়াই করে হার বছর দু'য়েকের ক্লাবের। শেষমেষ তিন গোল হজম করলেও, লড়াই মনে রাখার মতো। প্রথমার্ধে দুই দলের মধ্যে তুল্যমূল্য লড়াই হয়। দুটো দলই গোলের সুযোগ পায়। কিন্তু সিটার মিস করেন সমীর বায়েন। এই গোলটি হয় গেলে ম্যাচের রেজাল্ট অন্যরকম হলেও হতে পারত।
বিরতির ঠিক আগে গোল হজম করার পর ম্যাচ থেকে হারিয়ে যায় ইউনাইটেড কলকাতা। চলতি মরশুমে ময়দানে প্রথম ম্যাচ। ইস্টবেঙ্গল মাঠেও। যে পরিমাণে দর্শক হওয়া উচিত ছিল, সেটা হয়নি। তবে ঢাক-ঢোল নিয়ে হাজির ছিল সমর্থকের দল। ঘরের মাঠে প্রথম জয় তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করে সমর্থকরা। তবে সুপার সিক্সের প্রথম ম্যাচ নিরপেক্ষ ভেন্যুতে হলে রেজাল্ট কী হত বলা মুশকিল। নবাগত দল হিসেবে যথেষ্ঠ দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করে ইউকেএসসি।
আরও পড়ুন: পুরনো 'শত্রু'র বিরুদ্ধে অবশেষে প্রতিশোধ নিলেন সৌরভ, জেনে নিন আসল ঘটনা
কলকাতা লিগের শুরুটা দারুণ করেছিল ইউনাইটেড। প্রথম আট ম্যাচের মধ্যে ৬টি জয়, ২টি ড্র দিয়ে শুরু করে ইয়ান লয়ের দল। কিন্তু পরের দিকে ছন্দপতন। লিগ পর্বের শেষ পাঁচ ম্যাচে মাত্র পাঁচ পয়েন্ট। মাত্র একটি জয়। সুপার সিক্সেও হার দিয়েই শুরু হল। ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে তাঁদের ঘরের মাঠে জেতা যে সহজ হবে না জানাই ছিল। কিন্তু শুরুতে ইউনাইটেডের মাঝমাঠ যথেষ্ঠ ভাল খেলে। এদিন প্রথম একাদশে ছিলেন না রাহুল ভিপি। জীতেন মুর্মু এবং সমীর বায়েনকে রেখে শুরু করেন ইয়ান ল। অন্যদিকে ইস্টবেঙ্গলের ফরোয়ার্ড লাইনে ছিলেন ডেভিড এবং অমন সিকে। ম্যাচের প্রথম কোয়ার্টারে এগিয়ে যেতে পারত ইস্টবেঙ্গল।
জাস্টিনের গোল ফাউলের জন্য বাতিল হয়ে যায়। ম্যাচের ২৬ মিনিটে সুযোগ ইউকেএসসির। দেবায়ন হাজরার শট ক্রসপিসের ওপর দিয়ে ভেসে যায়। তার তিন মিনিট পর ম্যাচের ২৯ মিনিটে আবার সুযোগ। ওপেন গোল মিস সমীর বায়েনের। ইউকেএসসির জার্সিতে এদিন অভিষেক হয় তাঁর। সাদার্ন সমিতি থেকে আসা স্ট্রাইকার সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি। এই গোলটি পার্থক্য গড়ে দিতে পারত। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে কিছু ট্যাকটিক্যাল পরিবর্তন করেন ইয়ান ল। কিন্তু বিরতির পর খুব বেশি সুবিধা করতে পারেনি ইউনাইটেড।
ম্যাচের ৩৭ মিনিটে নিশ্চিত গোল মিস ইস্টবেঙ্গলের। বাইরে মারেন বিষ্ণু। বাঁ দিক থেকে গতি বাড়িয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন। কিন্তু শরীরের ভারসাম্য ধরে রাখতে পারেননি। বিরতির আগেই পিছিয়ে পড়ে ইউকেএসসি। ম্যাচের ৪৬ মিনিটে এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। অমনের বাড়ানো বল থেকে হেডে গোল করেন নসিব রহমন। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ইউনাইটেড ম্যাচে ফেরার আগেই ব্যবধান বাড়ায় ইস্টবেঙ্গল। ম্যাচের ৪৮ মিনিটে ২-০। দুরন্ত সোয়ার্ভিং ফ্রিকিক থেকে গোল করেন পিভি বিষ্ণু।
দ্বিতীয়ার্ধে বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি ইউনাইটেড। জোড়া গোল হজমের পর ম্যাচ থেকে ক্রমশ হারিয়ে যায়। ম্যাচের ৬৯ মিনিটে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে তৃতীয় গোল করেন পরিবর্ত ফুটবলার গুইতে। প্রয়াত বাবাকে গোল উৎসর্গ করেন। ২০২১ সালে বাবাকে হারান। তিনি গুইতেকে ফুটবলার হিসেবে দেখতে চেয়েছিলেন। এদিন ব্যবধান আরও বাড়তে পারত। কিন্তু বিষ্ণুর শট গোললাইন থেকে ফেরত পাঠান শুভ বিশ্বাস। দ্বিতীয়ার্ধে মাত্র একটি সুযোগ ইউনাইটেড কলকাতার। তবে হারলেও ইয়ান লয়ের দলের ফুটবলের প্রশংসা করতে হবে।
