আজকাল ওয়েবডেস্ক: ওভাল টেস্ট গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। ইংল্যান্ডের জিততে প্রয়োজন ৩৫ রান। ভারতের দরকার ৪ উইকেট। ক্রিজে আছেন জেমি ওভার্টন এবং জেমি স্মিথ। দু'জনেই সবে নেমেছেন। জো রুট জানিয়ে দিলেন, প্রয়োজনে পঞ্চম দিন ব্যাট করতে নামতে পারেন ক্রিস ওকস। চোটের জন্য বল করতে পারেননি ইংল্যান্ডের পেসার। কিন্তু দলের স্বার্থে ব্যাট হাতে নামতে প্রস্তুত। প্রথম দিন ফিল্ডিং করার সময় কাঁধে চোট পান ওকস। তারপর আর ম্যাচে অংশ নেননি। কিন্তু কোনও রাখঢাক না করেই রুট জানিয়ে দিলেন, প্রয়োজনে নামতে রাজি তারকা পেসার। তিনি বলেন, 'ক্রিস ওকস যন্ত্রণায় কাতর। এই সিরিজে আমরা ঋষভ পন্থকে ভাঙা পায়ের পাতা নিয়ে ব্যাট করতে দেখেছি। এবার ইংল্যান্ডের হয়ে নিজেকে উজাড় করে দিতে তৈরি ওকস।' 

বৃষ্টি এবং খারাপ আলোর জন্য চতুর্থ দিনের খেলা তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায়। নয়তো রবিবারই টেস্টের ফয়সালা হয়ে যেতে পারত। চলতি অ্যান্ডারসন-তেন্ডুলকর সিরিজের প্রত্যেক টেস্ট পঞ্চম দিনেই শেষ হয়েছে। বৃষ্টির জন্য ওভাল টেস্টও শেষ দিন পর্যন্ত গড়াল। চতুর্থ দিন ইংল্যান্ডের ব্যাটিং দেখে মনে হয়, অনায়াসে ৩৭৪ রান তাড়া করে জিতবে। নিজের ৩৯তম টেস্ট শতরান করে দলকে জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয় জো রুট। ১৫২ বলে ১০৫ রান করেন ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক। অন্য প্রান্তে শতরান করেন হ্যারি ব্রুকও। ৯৮ বলে ১১১ রান করেন। লাল বলের ক্রিকেটে তাঁর দশম শতরান। ১৯৫ রানের পার্টনারশিপ রুট এবং ব্রুকের মধ্যে। এই জটিই ইংল্যান্ডকে আশা দেখায়। জোড়া রেকর্ডের মুখে দাঁড়িয়ে হোম টিম। টেস্টের ইতিহাসে ইংল্যান্ডের সর্বকালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের হাতছানির সুযোগ রয়েছে। দ্বিতীয়ত, ওভালে টেস্টে এত রান তাড়া করে কোনও দল এর আগে জেতেনি। তবে যখন মনে হয়েছিল ইংল্যান্ডের জয় নিশ্চিত, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণর বলে আউট হন রুট এবং জেকব বেথেল। আবার একটা সুযোগ তৈরি হয় ভারতের জন্য। মেঘলা আকাশের নীচে জেমি স্মিথ এবং জেমি ওভার্টনকে বিপদে ফেলে দেয় ভারতীয় বোলাররা। আরও টুইস্টের সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু তার আগেই বৃষ্টি নামে। ড্রেসিংরুমে বাঁ হাত স্লিংয়ে ঝুলিয়ে উদ্বিগ্ন মুখে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় ওকসকে। এই অবস্থায় কীভাবে ব্যাট করবেন জানা নেই। তবে আরও একটা রুদ্ধশ্বাস ফিনিশিংয়ের অপেক্ষায় বিশ্বক্রিকেট। 

টসে জিতে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠান অস্থায়ী অধিনায়ক অলি পোপ। প্রথম ইনিংসে ২২৪ রানে অলআউট হয়ে যায় টিম ইন্ডিয়া। সর্বোচ্চ রান করুণ নায়ারের। ৫৭ রান করেন। বাকি ভারতীয় ব্যাটাররা ডাহা ব্যর্থ। পাঁচ উইকেট নেন গাস আটকিনসন। যদিও ভারতীয় দলকে অল্প রানে গুটিয়ে ফেলার ফায়দা তুলতে পারেনি ইংল্যান্ড। ২৪৭ রানে শেষ হয় তাঁদের ইনিংস। জ্যাক ক্রলি এবং হ্যারি ব্রুক ছাড়া বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি কেউই। দু'জনেই অর্ধশতরান করে। দ্বিতীয় ইনিংসে যশস্বীর হাত ধরে বড় টার্গেট সেট করে ভারতীয় দল। ১৬৪ বলে ১১৮ করেন তরুণ ওপেনার। একাধিক রেকর্ড করেন। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দেন আকাশ দীপ। বাংলার ক্রিকেটার করেন ৬৬ রান। শেষদিকে রবীন্দ্র জাদেজা এবং ওয়াশিংটনের সুন্দরের অর্ধশতরান ভারতকে ৪০০ রানের কাছাকাছি পৌঁছে দেয়। পাঁচ উইকেট নেন জস টং। দ্বিতীয় ইনিংসে জো রুট এবং হ্যারি ব্রুকের সুবাদে সিরিজ জয়ের মুখে ইংল্যান্ড। অবশ্য শেষ বল না হওয়া পর্যন্ত আগাম ভবিষ্যদ্বাণী করা যাবে না।