বাংলা - ১ (রবি হাঁসদা)
কেরল - ০
আজকাল ওয়েবডেস্ক: আট বছর পর শাপমুক্তি। রবি হাঁসদার একমাত্র গোলে সন্তোষ ট্রফি জয় বাংলার। মৃদুল ব্যানার্জির পর সঞ্জয় সেন। আবার সুদিন ফিরল বাংলার ফুটবলের। ৩৩তম বার সন্তোষ ট্রফি জিতল বাংলা। নব্বই মিনিটের খেলা শেষ। ম্যাচ শেষ হতে আর কয়েক মিনিট বাকি। সবাই ধরেই নিয়েছে খেলা এক্সট্রা টাইমে গড়াবে। এমন সময় পরিত্রাতা রবি হাঁসদা। ৯০+১ মিনিটে জয়সূচক গোল করেন বাংলার সেরা ফুটবলার। সন্তোষে নিজের ১২তম গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা রবি হাঁসদা। পেরিয়ে গেলেন মহম্মদ হাবিবকে। মাঝে দু'বার ফাইনালে উঠলেও, কেরলের কাছে হারতে হয়েছে। তারমধ্যে একবার ঘরের মাঠে। শেষমেষ প্রতিশোধের পালা শেষ। এই নিয়ে মোট ৪৭ বার সন্তোষ ট্রফির ফাইনালে উঠেছিল বাংলা। তারমধ্যে ৩৩ বার চ্যাম্পিয়ন। শেষবার ২০১৬-১৭ মরশুমে ট্রফি এসেছিল। এরপর ২০১৭-১৮ এবং ২০২১-২২ মরশুমে ফাইনালে কেরলের কাছে হারতে হয়। সেবার টাইব্রেকারে হারে বাংলা। শেষ দু'বার টুর্নামেন্টের মূলপর্বে উঠতে পারেনি। কিন্তু সঞ্জয় সেনের হাত ধরে সন্তোষ জিতল বাংলা। ম্যাচ শেষে উচ্ছ্বাসে ভাসে বাংলায় ফুটবলাররা। কোচ সঞ্জয় সেনকে কোলে তুলে চলে সেলিব্রেশন। বছর শেষের রাতে বিশেষ প্রাপ্তি বাংলার ফুটবলের।
চলতি সন্তোষ ট্রফিতে সবচেয়ে বেশি গোল করেছে এই দুই দল। তাই আগ্রাসী ফুটবল আশা করা গিয়েছিল। কিন্তু দুই দলই রক্ষণ গুছিয়ে আক্রমণে যায়। নরহরি শ্রেষ্ঠাকে প্রথম একাদশে রাখেননি সঞ্জয় সেন। অন্যদিকে হ্যাটট্রিক করা মহম্মদ রোশালও কেরলের প্রথম দলে ছিলেন না। শুরুতে একটা ঝাপটা দেওয়ার চেষ্টা করে বাংলা। কিন্তু ম্যাচের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাশ নিজেদের হাতে নেওয়ার চেষ্টা করে কেরল। টানা ছ'বার জেতার নজির রয়েছে বাংলার। একটানা পাঁচবারও জিতেছে। টুর্নামেন্টের সবচেয়ে সফল দল। কিন্তু ফাইনাল ম্যাচ ৫০-৫০ ছিল। প্রথমার্ধে দুই দলই সুযোগ পায়। ম্যাচের ১৮ মিনিটে কেরলের মুশারফের শট বাইরে যায়। তার মিনিট পাঁচেক পরই গোলের সুযোগ এসেছিল বাংলার সামনে। ম্যাচের ২৩ মিনিটে রবি হাঁসদার শট বক্সের ওপর দিয়ে ভেসে যায়। প্রথমার্ধে বেশ কয়েকবার বিপদ সৃষ্টি করায় চেষ্টা করেন মুশারফ। কিন্তু বাংলার রক্ষণ ভাঙতে পারেননি। ডিফেন্সে অনবদ্য জুয়েল মজুমদার। শেষ কোয়ার্টারে গোলের সুযোগ পায় কেরল। গিলবার্টের ক্রস থেকে মহম্মদের শট বাঁচান বাংলার কিপার সৌরভ সামন্ত।
প্রথম ৪৫ মিনিট দুই দলই সমান সুযোগ পায়। বাংলার রক্ষণের প্রশংসা করতেই হবে। বিরতির পর শুরুর দিকে দুই দলের খেলায় তেমন ঝাঁঝ ছিল না। বল মূলত মাঝমাঠেই ঘোরাফেরা করে। দুই দলের ফুটবলারদেরই ক্লান্ত দেখায়। পরপর ম্যাচ খেলার প্রভাব পড়ে ফুটবলারদের ওপর। দ্বিতীয়ার্ধের একটা সময় পর্যন্ত ম্যাচ নির্বিষ ছিল। কোনও দলই তেমন পজিটিভ সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। কিন্তু আসল সময় জ্বলে ওঠে বাংলায় ছেলেরা। ম্যাচের শেষ কোয়ার্টারের আক্রমণের চাপ বাড়ায়। শেষদিকে বাংলার সামনে গোলের জোড়া সুযোগ এসেছিল। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেনি। তবে অতিরিক্ত সময় কোনও ভুলত্রুটি করেননি রবি হাঁসদা। ঠান্ডা মাথায় একজন সুযোগ সন্ধানী স্ট্রাইকারের মতো বল গোলে ঠেলেন। বর্ষবরণের রাতে বাংলার ফুটবলপ্রেমীদের দেন সেরা উপহার।
