আজকাল ওয়েবডেস্ক: পুরুষ দলের জাতীয় নির্বাচক কমিটিতে দুটি শূন্যপদ এবং মহিলাদের নির্বাচক প্যানেলে চারটি শূন্যপদ পূরণ করার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করল ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড বিসিসিআই। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের তরফে শুক্রবার ঘোষণা করা হয়েছে, পুরুষ দলের জাতীয় নির্বাচক কমিটিতে দুটি শূন্যপদ এবং মহিলাদের নির্বাচক প্যানেলে চারটি শূন্যপদ পূরণ করতে আবেদনপত্র জমা নেওয়া হচ্ছে। যোগ্যতার নিয়মাবলি আগের মতোই অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। আবেদনকারীদের অন্তত ৭টি টেস্ট ম্যাচ বা ৩০টি প্রথম-শ্রেণির ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। বিকল্পভাবে, অন্তত ১০টি একদিনের আন্তর্জাতিক (ওডিআই) বা ২০টি প্রথম-শ্রেণির ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা থাকলেও আবেদন করা যাবে। বিসিসিআইয়ের এক কর্তা পিটিআই-কে জানিয়েছেন, ‘নির্বাচকদের চুক্তি প্রতিবছর নবীকরণ করা হয়। এখনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি কোন নির্বাচকদের পরিবর্তন করা হবে। খুব শিগগিরই সেই প্রক্রিয়া শুরু হবে’। বর্তমান পুরুষদের নির্বাচক কমিটির প্রধান প্রাক্তন ভারতীয় পেসার অজিত আগারকার।
তাঁর সঙ্গে রয়েছেন এস এস দাস, সুব্রত ব্যানার্জি, অজয় রত্রা ও এস শরৎ। সম্প্রতি তাঁরাই আগামী মাসে হতে চলা এশিয়া কাপের জন্য দল বেছে নিয়েছেন। এছাড়া বিসিসিআই পুরুষ জুনিয়র নির্বাচক কমিটির সদস্য পদেও আবেদনপত্র চেয়েছে। এই কমিটি মূলত অনূর্ধ্ব-২২ পর্যন্ত বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দলের ক্যাম্প, সফর ও টুর্নামেন্টের জন্য স্কোয়াড নির্বাচন করে থাকে। ধারণা করা হচ্ছে, এই পদটি মূল নির্বাচক বা চিফ সিলেক্টরের। অন্যদিকে, মহিলাদের জাতীয় নির্বাচক কমিটির চারটি শূন্যপদও পূরণ করা হবে। বর্তমানে এই প্যানেলের চেয়ারপার্সন নীতু ডেভিডের সঙ্গে রয়েছেন রেনু মার্গারেট, আরতি বৈদ্য, কল্যাণী ভেঙ্কটাচার। উল্লেখ্য, এশিয়া কাপের দল নির্বাচনের পর শ্রেয়াস আইয়ারকে দলে রাখা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। বৃহস্পতিবার বোর্ডের এক সূত্র দাবি করেন, এশিয়া কাপের দল থেকে বাদ পড়লেও একদিনের ক্রিকেটে রোহিত শর্মার উত্তরসূরি ভাবা হচ্ছে শ্রেয়সকে।
শোনা যাচ্ছে, কেরিয়ারের সায়াহ্নে পৌঁছে যাওয়া রোহিতকে, অধিনায়কের চাপ থেকে মুক্ত করতে চাইছে বোর্ড। কিন্তু যাবতীয় গুঞ্জন উড়িয়ে দিলেন বিসিসিআই সচিব। দাবি করেন, বিসিসিআইয়ের কর্তাদের মধ্যে এই নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। সাইকিয়া বলেন, 'এটা আমার কাছে খবর। এই নিয়ে কোনও আলোচনাই হয়নি।' এশিয়া কাপের দলে জায়গা না পাওয়ার পর থেকে খবরের শিরোনামে শ্রেয়স। দল ঘোষণার পর এই প্রসঙ্গে অজিত আগরকর বলেন, 'এতে শ্রেয়সের কোনও দোষ নেই, আমাদেরও না। আমরা মাত্র ১৫ জনকে নিতে পারব। এই মুহূর্তে ওকে সুযোগের অপেক্ষা করতে হবে।' চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ রান ছিল শ্রেয়সের। সার্বিকভাবে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন। পাঁচ ম্যাচে ২৪৩ রান করেন। গড় ৪৮.৬০। তারমধ্যে ছিল দুটো অর্ধশতরান। সর্বোচ্চ রান ৭৯। আইপিএলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান। ব্যক্তিগতভাবে কোটিপতি লিগে তাঁর সেরা মরশুম। ১৭ ম্যাচে ৬০৪ রান করেন। গড় ৫০.৩৩। স্ট্রাইক রেট ১৭৫.০৭। তারমধ্যে ছিল ৬টি অর্ধশতরান।
সর্বোচ্চ রান ৯৭। টি-২০ বিশ্বকাপ জয়ের পর মুম্বইয়ের ব্যাটার ২৬ টি-২০ ম্যাচ খেলেন। করেন ৯৪৯ রান। গড় ৪৯.৯৪। স্ট্রাইক রেট ১৭৯.৭৩। তারমধ্যে রয়েছে একটি শতরান এবং সাতটি অর্ধশতরান। সর্বোচ্চ রান ১৩০। এমন পারফরমেন্স সত্ত্বেও দলের বাইরে রাখা হয় তাঁকে। প্রসঙ্গত, শ্রেয়সের বাদ পড়া নিয়ে অনেকেই গৌতম গম্ভীরকে কাঠগড়ায় দাঁড় করায়। কিন্তু শোনা যাচ্ছে, তারকা ক্রিকেটারকে বাদ দেওয়ার পেছনে কোনও ভূমিকা নেই টিম ইন্ডিয়ার হেড কোচের। এমনই দাবি বোর্ডের এক সূত্রের। কলকাতা নাইট রাইডার্সের আইপিএল জয়ী অধিনায়কের বাদ পড়া নিয়ে চর্চা চরমে। অনেকেই টিম ইন্ডিয়ার হেড কোচকে দায়ী করেন। কিন্তু জানা গিয়েছে, এতে কোনও হাত নেই গম্ভীরের। মুম্বইয়ে দল নির্বাচনের বৈঠকে তিনি ছিলেন না। এটা সবাই জানে। কিন্তু শোনা গিয়েছিল, ভিডিও কলের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেন গম্ভীর। কিন্তু বোর্ডের এক সূত্রের দাবি, বৈঠকের অঙ্গ ছিলেন না টিম ইন্ডিয়ার হেড কোচ। মঙ্গলবার বিসিসিআইয়ের ক্রিকেট সেন্টারে হাজির ছিলেন বোর্ড সচিব দেবজিৎ সাইকিয়া, মুখ্য নির্বাচক অজিত আগরকর, শিব সুন্দর দাস, সুব্রত ব্যানার্জি, অজয় রাত্রা এবং শ্রীধরন শরৎ। এছাড়াও ছিলেন টি-২০ অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। গৌতম গম্ভীরের সঙ্গে সেদিন দল নির্বাচন প্রসঙ্গে কোনও কথা হয়নি নির্বাচকদের। গত মঙ্গলবারই এই কমিটি ঘরোয়া মাটিতে আগামী মাসে শুরু হতে চলা মহিলাদের ওডিআই বিশ্বকাপের জন্য দল ঘোষণা করেছে।
