আজকাল ওয়েবডেস্ক: ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওভাল টেস্টে বেন ডাকেটকে আউট করার পর দেওয়া বিতর্কিত ‘সেন্ড-অফ’ নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন ভারতীয় পেসার আকাশ দীপ। খেলা চলাকালীন দেখা গিয়েছিল ওই সময় আকাশ ডাকেটের কাঁধে হাত রেখে কিছু কথা বলেছিলেন। যা দেখে অনেকেই আইসিসির হস্তক্ষেপের দাবি তুলেছিলেন। এমনকি সতীর্থ কেএল রাহুলকে হস্তক্ষেপ করে আকাশকে সরিয়ে নিতে হয়, যাতে বড় কোনও ঝামেলা না হয়। কিন্তু আদতে সেরকম কিছুই ঘটেনি। সিরিজ শেষের পর অবশেষে রেভস্পোর্টজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেই কথপোকথন ফাঁস করলেন আকাশদীপ।

তিনি জানান, ডাকেট নাকি ব্যাট করার সময় তাঁকে বলেছিলেন তিনি তাঁকে আউট করতে পারবেন না। এটাই ছিল তাঁর প্রতিক্রিয়ার মূল কারণ। আকাশের কথায়, 'আমার ডাকেটের বিরুদ্ধে ভাল রেকর্ড আছে, কয়েকবার আউট করেছি। বাঁহাতি ব্যাটারদের বিরুদ্ধে আমি সবসময় আত্মবিশ্বাসী, সে-ও আলাদা কিছু নয়।' তিনি বলেন,'ওই দিন ও আমাকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছিল, অনেক অপ্রচলিত শট খেলছিল। তখনই ও বলল, আজ আমার দিন, তুমি আমাকে আউট করতে পারবে না। সত্যি বলতে, যখন কোনও ব্যাটার ক্রিজে নড়াচড়া করে এবং অপ্রচলিত শট খেলে, তখন লাইন-লেংথ ঠিক রাখা কঠিন হয়। ইংল্যান্ড দ্রুত রান তুলছিল, আমাদের উইকেট দরকার ছিল।'

প্রসঙ্গত, ডাকেট সেদিন ৩৮ বলে ৪৩ রান করছিলেন। অবশেষে তাঁকে আউট করার পর আকাশ ডাকেটকে বলেন, 'ইউ মিস, আই হিট। সব সময় তুমি জিতবে না, এবার আমি জিতলাম। এটা আসলে ও যা বলছিল, তারই উত্তর ছিল, আর সবটাই ভাল এবং খেলোয়ারসুলভ মনোভাবের মধ্যেই হয়েছে।' অবশ্য, এই ঘটনার পর ধারাভাষ্যে থাকা পন্টিংয়ের মতো কয়েকজন ক্রিকেটার প্রশ্ন তুললেও আইসিসি হস্তক্ষেপ করেনি। ডাকেট এবং ক্রলির সেই বিধ্বংসী ওপেনিং জুটির পরেও দুর্দান্ত বল করে ম্যাচে ফেরে ভারত। এমনকি, ওভাল টেস্ট জিতে সিরিজ ড্র করে।

সিরিজ শেষে আকাশ দীপের এই বক্তব্য প্রমাণ করে দিল মাঠের ওই মুহূর্ত যা নিয়ে এত বিতর্ক সেটা আসলে ছিল মূলত ব্যাটার এবং বোলারের ঠাট্টা-মশকরা। যার বড় কোনও নেতিবাচক অর্থ ছিল না। প্রসঙ্গত, ওভাল টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে আকাশ দীপ ব্যাট করার সময় তাঁর হাতে একই ভঙ্গিমায় হাত রাখেন ডাকেট। সেই জড়িয়ে ধরায় রয়েছে বন্ধুত্ব। নেই কোনও অশুভ অভিসন্ধি। আথারটনও সেই কথা জানান ধারাভাষ্য দেওয়ার সময়। কিন্তু ইংল্যান্ডের সহকারী কোচ মার্কাস ট্রেসকোথিক একহাত নেন আকাশকে।

তিনি বলেন, ‘বেন ডাকেট কিছু বলেনি। কিন্তু অন্য কোনও প্লেয়ার হলে আকাশদীপের মুখে কনুই চালিয়ে দিত। কাউকে আউট করার পরে কোনও বোলার এমন আচরণ আগে করেছে কি না মনে পড়ছে না’। আবার রিকি পন্টিং বলেন, ‘তাঁর সঙ্গে এহেন আচরণ করা হলে তিনি ঘুষি মেরে দিতেন’। এখানেই থেমে থাকেননি পন্টিং। তিনি বলেন, ‘ঘটনাটা যখন আমি প্রথম দেখলাম, তখন মনে হয়েছিল ওরা বুঝি বন্ধু। একে অপরের বিরুদ্ধে খেলছে বহুদিন ধরে। প্রতিদিন এমন ঘটনা দেখা যায় না। স্থানীয় খেলার মাঠে বা পার্কে এগুলো হয়তো দেখা যায় কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটের মতো আসরে এমন দৃশ্য দেখা যায় না। বেন ডাকেট যে ভাবে ক্রিকেট খেলেছে তাতে আমি খুশি। এখন থেকে আমি ওকে আরও বেশি করে পছন্দ করব কারণ ডাকেট কোনও প্রতিক্রিয়াই দেখায়নি।’