আজকাল ওয়েবডেস্ক: চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দীর্ঘদিন ধরে জনসাধারণের দৃষ্টির আড়ালে। সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা ইঙ্গিত দিচ্ছে যে সম্ভবত জিনপিং ধীরে ধীরে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোতে তাঁর ক্ষমতা বণ্টনের দিকে অগ্রসর হচ্ছেন অথবা সম্ভাব্য উত্তরসূরির জন্য পথ তৈরি করছেন। গত ১২ বছরে প্রথম বার ২০২৫ সালের ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেননি তিনি। দীর্ঘ অনুপস্থিতির কারণে প্রশ্ন উঠছে, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিসিপি) অন্দরমহলে সব ঠিকঠাক তো?

গত ২০ জুন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লুক্সনের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের একটি ভিডিও প্রচারের পর ২৪ জুন সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লরেন্স ওং-এর সঙ্গে তাঁর কথোপকথনের একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়। এর আগে, ৪ জুন থেকে তিনি রাষ্ট্রীয় মিডিয়া কভারেজ থেকে অনুপস্থিত ছিলেন। সে দিনই তিনি ঝোংনানহাইতে বেলারুশের রাষ্ট্রপতি আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে দেখা করেছিলেন।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চীনের সামরিক বাহিনীতে ব্যাপক শুদ্ধিকরণ চলছে। এর পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ রদবদলও হচ্ছে। বেশ কয়েকজন শীর্ষ জেনারেল এবং প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাকে ইতিমধ্যেই বহিষ্কার করা হয়েছে।

২০২৭ সালে চীনের কংগ্রেস সভা অনুষ্ঠিত হতে চলেছে, যেখানে একজন নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। কিন্তু ২০১৮ সালে জিনপিং দেশের সংবিধান পরিবর্তন করেন। সংশোধনীতে বলা হয়েছিল যে এক ব্যক্তি দু’বারের বেশি প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না। এরপর দেশের মানুষ ধরেই নিয়েছিলেন যে জিনপিং আজীবন প্রেসিডেন্ট পদে থাকতে চান। 

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের একটি প্রতিবেদনে, একজন চীনা বিশ্লেষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন যে ‘এই নিয়মগুলি সম্ভবত আনা হচ্ছে কারণ ক্ষমতা হস্তান্তরের সময় এসেছে।‘ তাহলে প্রশ্ন হল, ২০২৭ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট পদে কি নতুন কেউ বসতে চলেছেন? সেই প্রক্রিয়া কি শুরু হয়ে গিয়েছে?

সাম্প্রতিক কিছু ঘটনাবলি হু জিনতাও ব্লকের পুনরুজ্জীবিত হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। প্রাক্তন চীনা রাষ্ট্রপতি হু জিনতাও-কে অপ্রত্যাশিতভাবে গ্রেট হল অফ দ্য পিপল থেকে বার করে দেওয়া হয়েছিল। চীনা গণমাধ্যম জানিয়েছিল যে স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারণে হু পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু বিভিন্ন ফুটেজে অন্য ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। ফুটেজে দেখা যাচ্ছে হু দ্বিধাগ্রস্তভাবে কাগজপত্রের জন্য হাত বাড়াচ্ছেন, শি অন্যদিকে তাকিয়ে আছেন এবং কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসছেন না। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে, সংস্কারমনস্ক টেকনোক্র্যাট ওয়াং ইয়াং, যিনি একসময় পলিটব্যুরোর স্ট্যান্ডিং কমিটিতে ছিলেন, তাঁকে শি-এর সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। তিনি আবার হু ব্লকের। এই সমস্ত কারণে শি-এর অনুপস্থিতি নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।