এসআইআর আতঙ্কে আবারও আত্মঘাতী হওয়ার অভিযোগ উঠল রাজ্যে। এবার ঘটনাস্থল দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ভাঙড়। ভাঙড়ের জয়পুর এলাকার যুবক সফিকুল গাজি (৩৫) এসআইআর আতঙ্কে আত্মঘাতী হয়েছেন বলে তাঁর পরিবারের দাবি। তাঁরা স্ত্রী জানান, গত কয়েক দিন ধরে আতঙ্কে ছিলেন স্বামী। বার বার বলছিলেন, তাঁর কোনও পরিচয়পত্র নেই। ভাই-বাপ কেউ নেই। কী হবে! স্ত্রী বার বার সাহস দেওয়ার চেষ্টা করলেও বুধবার সকালে এই ঘটনা ঘটল। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,ভাঙড়ের জয়পুরে সফিকুল গাজি নামে এক ব্যক্তি গলায় গামছার ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরিবার সূত্রে জানা যায়, এসআইআর-এর বিষয়টি ঘোষণার পরেই সফিকুল আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে রওনা হয়েছেন ক্যানিং পূর্ব বিধানসভার বিধায়ক তথা ভাঙড় বিধানসভা কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক শওকত মোল্লা। ইতিমধ্যেই মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। পাশাপাশি মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখছে তারা।
শওকত মোল্লা বলেন, “আমি শুনেছি ওর বাবা-মায়ের বৈধ কাগজপত্র রয়েছে। যেখানে বাড়ি, সেখানে কাগজ রয়েছে। কিন্তু ওর নিজের কোনও কাগজ নেই। জমি-জায়গারও দলিল নেই। সেই হতাশা থেকেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। বিজেপিকে এর জবাব দিতে হবে। গতকাল পর্যন্ত সাত জন, আজ ৮! বিজেপিকে এই মৃত্যু মিছিলের দায় নিতে হবে।এর জন্য সাইবার ক্যাফেতেও সাধারণ মানুষের ভিড় দেখা গিয়েছে। তবে নথি না জমা দিলে দেশ ছাড়া হতে হবে, এই ভয়ে রয়েছেন অনেকেই। আর সেই কারণেই গত কয়েক দিনে অনেক মানুষের মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। সব ক’টিতেই পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছে, এসআইআর-এর কারণেই মৃত্যু হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, বিহারের পর বাংলাতেও চালু হয়েছে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর প্রক্রিয়া। যার জেরে অনেকের মধ্যেই আতঙ্ক লক্ষ্য করা গিয়েছে। অনেকেই ইতিমধ্যে ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নিজের নাম খোঁজার পাশাপাশি এই সম্পর্কিত অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নথি জোগাড় করছেন। এর জন্য সাইবার ক্যাফেতেও সাধারণ মানুষের ভিড় দেখা গিয়েছে। নথি না জমা দিলে দেশ ছাড়া হতে হবে, এই ভয়ে রয়েছেন অনেকেই! সম্প্রতি রাজ্য জুড়ে কয়েকটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় মৃতের পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছে, এসআইআর-এর কারণেই মৃত্যু হয়েছে।
