আজকাল ওয়েবডেস্ক: ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ইউক্রেন দেশটির বিস্তীর্ণ অঞ্চলকে ধ্বংস করে দিয়েছে। লক্ষ লক্ষ ইউক্রেনীয় গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। আক্রমণকারী রাশিয়ান সেনাবাহিনীকে প্রতিহত করতে এবং যুদ্ধাপরাধ থেকে তাঁদের বিরত রাখতে সাধারণ নাগরিকদের তাঁদের মাতৃভূমির রক্ষক হতে হয়েছে। হাতে তুলে নিতে হয়েছে অস্ত্র।

সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বব্যাপী দৃষ্টি আকর্ষণকারী এরকমই অস্ত্র হাতে তুলে নেওয়া নাগরিকদের একটি দল হল ‘বুচা উইচেস’। এটি স্বেচ্ছাসেবকদের একটি সম্পূর্ণ মহিলা দল। ইউক্রেনের শহর কিয়েভের বুচা শহরতলিতে রাশিয়ান বাহিনীর দ্বারা কথিত যুদ্ধাপরাধের পরেই এই দলের আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল।

‘বুচা উইচেস’, ইউক্রেনের প্রথম সম্পূর্ণ মহিলা দল যাদের উপর রয়েছে আকাশপথে রাশিয়ান ড্রোন ধ্বংস করার দায়িত্ব। দলের মহিলাদের বেশিরভাগই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে প্রিয়জনকে হারিয়েছেন অথবা ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।

মহিলা স্বেচ্ছাসেবকরা ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের বুচা শহরতলির বাসিন্দা। যা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধাপরাধের প্রাথমিক কেন্দ্রস্থল বলে জানা গিয়েছে। বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়ান সৈন্যরা ৩৩ দিন বুচা নিজেদের দখলে রাখার সময় পুরুষ, মহিলা এবং শিশু-সহ ৪৫০ জনেরও বেশি সাধারণ নাগরিককে হত্যা করেছি। এছাড়াও হাজার হাজার মানুষকে নির্যাতন, ধর্ষণ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ।

রাশিয়ার ভয়াবহ যুদ্ধাপরাধের পর বুচার মহিলারা ইউক্রেনের প্রথম সম্পূর্ণ মহিলা আকাশ প্রতিরক্ষা দল ‘বুচার উইচেস’ গঠনের জন্য এগিয়ে আসেন। দলের মহিলাদের কারও বয়স ১৯ তো কারও ৬০ বছরেরও বেশি। তাঁদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাশিয়ান ড্রোন, বিশেষ করে ইরানের তৈরি শাহেদ এবং রাশিয়ান গেরান ড্রোন প্রতিহত করা। এই ইউনিটের কেউই পেশাদার সৈনিক নন, তবে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে তাঁদের অনেকেই ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীতে চাকরির জন্য আবেদন করেছেন।

উল্লেখযোগ্যভাবে, দলের কোনও মহিলারই পূর্বে কোনও সামরিক প্রশিক্ষণের অভিজ্ঞতা নেই।  যে কারণে তাদের 'মর্ডর' নামক একটি জায়গায় কঠোর প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এই বাহিনীর সৈন্যরা এখন ম্যাক্সিম এম১৯১০ মেশিনগান দিয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। যা উড়ন্ত ড্রোনগুলিকে গুলি করে ধ্বংস করার জন্য পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে।