আজকাল ওয়েবডেস্ক:‌ ভারতকে খোঁচাতে গিয়ে টাকার তুলনায় দুর্বল হল ডলারের দাম। ভারতের সঙ্গে শুল্ক যুদ্ধে আখেরে আমেরিকারই যে ক্ষতি হবে তা সম্প্রতি জানিয়েছিল স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (‌এসবিআই)‌ একটি রিপোর্ট। বলা হয়েছিল, এর ফলে প্রভাব পড়বে মার্কিন অর্থনীতিতে। 


স্টেট ব্যাঙ্কের দাবি ছিল, এর জন্য মার্কিন অর্থনীতির মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বা জিডিপি (গ্রস ডোমেস্টিক প্রোডাক্টস) বৃদ্ধির হার হ্রাস পাওয়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি, পাল্লা দিয়ে বাড়বে মুদ্রাস্ফীতি। এ ছাড়া দুর্বল হতে পারে ডলার। আর সেটাই হল।


ভারতীয় পণ্যের উপর ট্রাম্প ৫০ শতাংশ কর চাপাতেই টাকার তুলনায় দুর্বল হল ডলারের দাম। ভারতীয় টাকার দাম ৩ পয়সা বেড়েছে। ফলে ১ ডলারের দাম ভারতীয় মুদ্রায় হয়েছে ৮৭.‌৬৯ টাকা।

 

আরও পড়ুন:‌  ইংল্যান্ডে এই পারফরম্যান্স ধরে রাখতে হলে কি দরকার?‌ গম্ভীরকে পরামর্শ একদা তাঁরই সতীর্থের...


প্রসঙ্গত, রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করার জন্য বুধবারই ভারতীয় পণ্যে আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপানোর কথা ঘোষণা করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাড়তি ২৫ শতাংশের ফলে আগামী ২৭ আগস্ট থেকে ভারতকে আমেরিকায় পণ্য রপ্তানি করতে হলে ৫০ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে। পরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রাখা হলে দেশগুলির উপর ‘আরও অনেক’ বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে। তবে এর জবাবও দিয়েছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছেন, জাতীয় স্বার্থ এবং আন্তর্জাতিক বাজারদরের কথা মাথায় রেখে ভারত তার বাণিজ্যনীতি নির্ধারণ করে থাকে। অর্থাৎ, বাজারে কে কত দাম নিচ্ছে, তাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। রাশিয়া সস্তায় তেল বিক্রি করে বলেই ভারত তা কিনে থাকে। ভারত ট্রাম্পের শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্তকে ‘অন্যায্য’ বলে দাবি করেছে। আর ভারতের বিবৃতির পরেই মুখ খুলেছে রাশিয়া। ক্রেমলিনে রুশ প্রশাসনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘‌আমরা (ট্রাম্পের) অনেক বিবৃতির কথাই শুনছি, যেগুলি আসলে হুমকি। বিভিন্ন দেশকে রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে বাধ্য করা হচ্ছে। আমরা এই বিবৃতিগুলিকে বৈধ এবং ন্যায্য বলে মনে করছি না।’‌ একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‌আমরা বিশ্বাস করি যে কোনও সার্বভৌম দেশের স্বাধীন ভাবে বাণিজ্যসঙ্গী বেছে নেওয়ার অধিকার রয়েছে। নির্দিষ্ট কোনও দেশের জাতীয় স্বার্থ অনুযায়ী এই বাণিজ্যিক এবং অর্থনৈতিক বোঝাপড়া হয়ে থাকে।’‌ পেসকভের বক্তব্যে কোথাও ভারতের নাম না করা হলেও ভ্লাদিমির পুতিনের দেশ যে ট্রাম্পের এই শুল্ক নীতির বিরুদ্ধে ভারতের পাশে দাঁড়াচ্ছে, তা স্পষ্ট।

এদিকে, মার্কিন শুল্ক নীতিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অ্যালুমিনিয়াম, সার, রেলপথ এবং খনির প্রযুক্তিতে সহযোগিতা আরও গভীর করার জন্য একটি প্রোটোকল স্বাক্ষর করেছে ভারত ও রাশিয়া। এরই সঙ্গে রেয়ার আর্থ খনিজ পদার্থ নিয়েও পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির সুযোগ নিয়েও চুক্তি হয়েছে দুই দেশের। এর পাশাপাশি ট্রাম্পের শুল্ক নীতির কড়া সমালোচনাও করেছে আমেরিকা। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকও বিবৃতি দিয়ে এটিকে ‘‌অন্যায্য’‌ বলে দাবি করেছে।