আজকাল ওয়েবডেস্ক:‌ লোকসভার পর রাজ্যসভাতেও পাস হয়ে গেল স্পোর্টস বিল। সোমবার লোকসভায় পাস হয়েছিল জাতীয় ক্রীড়া বিল। মঙ্গলবার তা রাজ্যসভাতেও পাস হয়ে গেল। এখন শুধু ক্রীড়া বিলের আইনে পরিণত হওয়া বাকি। অর্থাৎ, ভারতীয় ক্রীড়া প্রশাসনে ঐতিহাসিক বদল আসা এখন সময়ের অপেক্ষা। বিভিন্ন ক্রীড়া সংস্থা থেকে জাতীয় ক্রীড়া বিলকে সাধুবাদ জানানো শুরু হয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে, আবারও বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পথ খোলা থাকছে রজার বিনির জন্য।


জাতীয় স্পোর্টস বিল একবার আইন হয়ে গেলে একজন প্রশাসক পঁচাত্তর বছর পর্যন্ত ক্রীড়া প্রশাসনে থাকতে পারবেন। সত্তর বছর হয়ে যাওয়ায় লোধা আইন অনুসারে সরে যেতে হয়েছিল ভারতীয় বোর্ড প্রেসিডেন্ট বিনিকে। কিন্তু নতুন আইনে বিনি আরও একটা টার্ম পেতে পারেন। বিনি সরে যাওয়ার পর বোর্ডের অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্টের দায়ভার সামলাচ্ছিলেন রাজীব শুক্লা। কিন্তু এখন যদি অনুমোদিত সদস্যরা রাজি থাকেন, তা হলে আগামী সেপ্টেম্বরে বোর্ড নির্বাচন পর্যন্ত বিনিই প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে থাকতে পারবেন। বলা হচ্ছে, সেপ্টেম্বরের নির্বাচনের পর তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ করে যাবেন কি না, নতুন ‘টার্ম’ পাবেন কি না, সেটা সদস্যরা এবং ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রভাবশালী মহল ঠিক করবে।


এরপরেই প্রশ্ন উঠেছে, বোর্ড নির্বাচন কি তা হলে সেপ্টেম্বরে ক্রীড়া বিলের নিয়ম মেনে হবে? কারণ তা যদি না–ই হয়, সেপ্টেম্বরের পর বিনির নতুন ‘টার্ম’ পাওয়ার প্রসঙ্গ আসছে কী করে? লোধা আইন অনুযায়ী, টার্ম দূরস্থান, তাঁর থাকারই আর কথা নয়। একমাত্র পাস হওয়া ক্রীড়া বিল আইন হয়ে গেলে, সেই আইন অনুযায়ী নির্বাচন হলে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে নতুন ‘টার্ম’ পাবেন রজার বিনি। যেহেতু সংসদের দুই কক্ষেই ক্রীড়া বিল পাস হয়ে গিয়েছে, ফলে দ্রুতই তা আইনে পরিণত হয়ে যাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। শুধু রাষ্ট্রপতি সই করলেই হল। ফলে সেপ্টেম্বরে বোর্ডের নির্বাচনের সময় কার্যকর হয়ে যেতে পারে নতুন ক্রীড়া আইন।


এটা ঘটনা স্পোর্টস বিল লোকসভায় পাস হওয়ার পর কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য বলেছিলেন, স্বাধীনতার পর ভারতীয় ক্রীড়াক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সংস্কার। কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য বলেন, ‘স্বাধীনতার পর এটাই ভারতীয় ক্রীড়ায় সবচেয়ে বড় সংস্কার। এই বিলের ফলে প্রত্যেকে দায়িত্বশীল হবে। প্রতিটি ক্রীড়া সংস্থা সরকারের এক ছাতার তলায় থাকবে। ভারতীয় ক্রীড়ার ইকোসিস্টেমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। দুঃখের বিষয়, এতদিন এর বিরোধিতা হয়ে আসছিল।’


ভারতীয় ক্রীড়াক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, দায়িত্বশীলতা এবং বিশ্বমানের পরিকাঠামোর জন্য এই বিল পাস হওয়া জরুরি ছিল বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী। ২০৩৬ সালে অলিম্পিক আয়োজনের লক্ষ্য ভারতের। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া ইভেন্ট আয়োজনের ক্ষেত্রে সঠিক পরিকাঠামো প্রয়োজন। এর জন্য এই বিল পাস হওয়া গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ক্রীড়ামন্ত্রী আরও বলেন, ‘এর আগে ১৯৭৫ সালেও এই চেষ্টা হয়েছিল। এরপর ১৯৮৫ সালেও। খসড়া প্রস্তুত ছিল। কিন্তু ক্রীড়াক্ষেত্রে রাজনীতির অবাধ প্রবেশ এবং ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য এই বিল নিয়ে অনেকেই বিরোধিতা করে এসেছে। ২০১১ সালে আমরা ন্যাশনার স্পোর্টস কোড আনি। এই বিল পাশের আরও একটা উদ্যোগ তখন থেকেই শুরু হয়েছিল।’