আজকাল ওয়েবডেস্ক: জানিক সিনারের কাছে উইম্বলডন সেমিফাইনালে অসহায় আত্মসমর্পণ করলেও থামতে রাজি নন ৩৮ বছরের নোভাক জকোভিচ। জোর গলায় জানাচ্ছেন ২০২৬ উইম্বলডনেও খেলতে চান।
খেলা শেষে জকোভিচ বলেছেন, ‘খারাপ লাগছে। তবে আশা করছি এটাই আমার সেন্টার কোর্টে শেষ ম্যাচ নয়। এখনই অবসরের পরিকল্পনা নেই। আমি আরও অন্তত একবার উইম্বলডনে ফিরে আসবই।’
এটা ঘটনা, ২০২৩ সালের ইউএস ওপেনের পর আর গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিততে পারেননি জকোভিচ। শুক্রবার হারের পর জোকার মেনে নিয়েছেন, বয়স তাঁর খেলায় প্রভাব ফেলছে। শরীর আগের মতো সঙ্গ দিচ্ছে না। সিনার বা কার্লোস আলকারাজদের মতো তরতাজা তরুণ খেলোয়াড়দের সঙ্গে লড়াইয়ে পিছিয়ে পড়ছেন। তিনি বলেছেন, ‘এটা দুর্ভাগ্য নয়। নেতিবাচক ভাবে দেখি না। বয়স বাড়ছে। শরীরের ধকল বাড়ছে। যতটা সম্ভব শরীরের যত্ন নেওয়ার চেষ্টা করছি। তবু গত দেড় বছরের মতো কঠিন সময় কখনও কাটাইনি। সত্যি বলতে এটা আমার পক্ষে মেনে নেওয়া কঠিন। কারণ তরতাজা এবং ফিট থাকলে এখনও যথেষ্ট ভাল টেনিস খেলতে পারছি। এ বছরে সেটা প্রমাণও করেছি।’ জোকার আরও বলেছেন, ‘এ বছর বিশ্বের সেরা পাঁচ জনের বিরুদ্ধে খেলতে হয়েছে। যেটা আমার শরীরের পক্ষে যথেষ্ট ধকলের ছিল। প্রতিযোগিতা যত বড় হয়, ধকলও তত বেশি হয়। তবে এ বছর প্রতিটি গ্র্যান্ড স্ল্যামের সেমিফাইনালে উঠতে পেরেছি। আমাকে সিনার বা আলকারাজের মতো তরুণদের সঙ্গে খেলতে হচ্ছে। ওরা ফিট, তীক্ষ্ণ। মনে হচ্ছে, অর্ধেক খালি ট্যাঙ্ক (শারীরিক সক্ষমতা) নিয়ে খেলতে নামছি। কঠিন ম্যাচগুলি এ ভাবে জেতা যায় না।’

এটা ঘটনা ৩৮ বছরের জকোভিচ একটা পর্যায়ের পর আটকে যাচ্ছেন। বার বার। সেরা তরুণ খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে পিছিয়ে পড়ছেন। তবু আরও কিছু দিন লড়ে যেতে চান কোর্টে। রজার ফেডেরারের আট বার উইম্বলডন জেতার রেকর্ড স্পর্শ করতে জকোভিচের প্রয়োজন আর একটি খেতাব।
প্রসঙ্গত জকোভিচ সেমিফাইনালে দাঁড়াতেই পারেননি জানিক সিনারের কাছে। সিনার জিতেছেন ৬–৩, ৬–৩, ৬–৪ গেমে। রবিবার উইম্বলডন ফাইনালে সিনারের সামনে আলকারাজ।
জকোভিচের বিরুদ্ধে আগের চারটি সাক্ষাতেই জিতেছিলেন সিনার। এবার নিয়ে হল টানা পাঁচ জয়। শুক্রবার জকোভিচ সার্ভিস করে খেলা শুরু করেন। সহজেই নিজের সার্ভিস ধরে রাখেন তিনি। সিনারও সার্ভিস ধরে রাখেন। তবে তৃতীয় গেমেই জকোভিচকে ব্রেক করে দেন সিনার। টানা চারটি পয়েন্ট জিতে সিনার সেই গেম জিতে নেন। পরের সার্ভিস হোল্ড করে তিনি এগিয়ে যান ৩–১ গেমে। সেমিফাইনালে এর থেকে ভাল শুরু আর হত না। সিনার সেটাকেই গোটা ম্যাচে ধরে রাখেন।
আরও পড়ুন: কার্যত আত্মসমর্পণ করলেন জোকার, উইম্বলডন ফাইনালে আলকারাজের সামনে সিনার ...
কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্ল্যাভিও কোবোল্লিকে হারানোর ম্যাচে শেষ দিকে কোর্টে পিছলে পড়ে যান জকোভিচ। শুক্রবারও প্রথম সেটেই তাঁকে পিছলে পড়তে দেখা যায়। জকোভিচকে দেখে বোঝাই যাচ্ছিল তিনি ছন্দে নেই। আধ ঘণ্টায় তাঁকে প্রথম সেট হারাতে হয়। মনে করা হয়েছিল দ্বিতীয় সেটে ঘুরে দাঁড়াবেন। সেই আশাও মিটে যায় শুরুতেই। দ্বিতীয় গেমেই জকোভিচকে ব্রেক করেন সিনার। বোঝা যাচ্ছিল, তাঁর চোট পুরোপুরি সারেনি। উল্টো দিকে থাকা সিনার অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। গোটা ম্যাচেই তা দেখা গেল।
এদিকে, এক সেট খুইয়ে উইম্বলডন ফাইনালে উঠে গেলেন কার্লোস আলকারাজ। শুক্রবার প্রথম সেমিফাইনালে আমেরিকার টেলর ফ্রিৎজকে হারালেন ৬–৪, ৫–৭, ৬–৩, ৭–৬ গেমে। আগের দু’বার সেন্টার কোর্টে ট্রফি জিতেছেন আলকারাজ। রবিবার স্পেনের খেলোয়াড় নামবেন হ্যাটট্রিক করতে।
