মিল্টন সেন, হুগলি: ডিভিসির ছাড়া জলে জেলায় তৈরি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। ঘটে চলেছে একের পর এক বিপত্তি। শুরুতে প্লাবিত হয়েছে আরামবাগ মহকুমা। জলে ডুবেছে ৩৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা। গঙ্গার জল উপচে প্লাবিত হয়েছে হুগলি চুঁচুড়া পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড। এবার গঙ্গা উপচে প্লাবিত বলাগড়ের একাধিক গ্রাম। জলের তোড়ে ভেঙেছে গ্রামে ঢোকার কালভার্ট। বিচ্ছিন্ন হয়েছে যোগাযোগ। প্রশাসনের উদ্যোগে ৬০টি পরিবারকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অতি বৃষ্টির ফলে ক্রমাগত জল ছেড়ে চলেছে ডিভিসি। ইতিমধ্যেই ছাড়া জলে রাজ্যের একাধিক এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। হুগলির আরামবাগে বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে এসে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ম্যান মেড বন্যার অভিযোগ তুলেছেন। চড়া সুরে আক্রমণ করেছেন কেন্দ্রকে এবং ঝাড়খন্ড সরকারকে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ডিভিসির ছাড়া জলে প্লাবিত হয়েছে বলাগড়ের জিরাট পঞ্চায়েতের চর খয়রামারি এলাকা। বাঁধের ছাড়া জলে ফুলে–ফেঁপে উঠেছে গঙ্গা। জোয়ারের জলে আগেই প্লাবিত হয়েছিল বলাগড়ের চর খয়রামারি বিস্তীর্ণ এলাকা।
জোয়ারের জলের তোড়ে ভেঙে গেছে খয়রামারি এবং জিরাট সংযোগকারী একমাত্র কালভার্ট। সম্পূর্ণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে খয়রামারি গ্রাম। হুহু করে জল ঢুকছে গ্রামে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় গ্রামে গৃহবন্দি কয়েক হাজার মানুষ। জলে ডুবে রয়েছে কয়েক একর কৃষি জমি। তারই মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে চলছে পারাপার। গ্রামে বসবাসকারী পরিবারের সংখ্যা প্রায় আড়াইশো। তার মধ্যে ইতিমধ্যেই প্রশাসনিক উদ্যোগে ৬০টি পরিবারকে উদ্ধার করে স্থানীয় আশুতোষ নগর প্রাইমারি বিদ্যালয়ে অস্থায়ী ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি পরিদর্শন করেছেন সদর মহকুমা শাসক স্মিতা সান্যাল শুক্লা এবং বলাগড় বিডিও সুপর্ণা বিশ্বাস। আপাতত যাতায়াতের জন্য ভেঙে যাওয়া কালভার্টের পরিবর্তে নতুন কাঠের সেতু নির্মাণ করার আশ্বাস দিয়েছেন মহকুমা শাসক। প্রশাসনের তরফে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া সকলের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শুধু খয়রামারি নয়, শুক্রবার সকাল থেকে জল ঢুকতে শুরু করেছে বলাগড়ের শ্রীপুরের বাবুচর, সিজা কামালপুর পঞ্চায়েতের বানেশ্বর পুর, আশ্রম ঘাট সহ বেশ কয়েকটি এলাকায়। জলমগ্ন কৃষি জমি। মূলত কৃষি প্রধান এলাকা বলাগড়ের অধিকাংশ কৃষকই সবজি চাষের উপর নির্ভরশীল। ফলে ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আতঙ্কিত কৃষকরা।
ছবি: পার্থ রাহা
