আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিশ্বব্রহ্মাণ্ড নিয়ে মানুষের আগ্রহের কোনও অন্ত নেই। এই ব্রহ্মাণ্ডে কি আমরা নিতান্তই একা? নাকি অন্য কোনও নক্ষত্রের চারপাশে ঘুরতে থাকা অচেনা কোনও গ্রহে লুকিয়ে আছে অন্য কোনও প্রাণ? এই প্রশ্ন বহু যুগ ধরে মানুষ তার মনে লালন করে চলেছে। পৃথিবীর বাইরে প্রাণের অস্তিত্ব মিলবে কি মিলবে না সে কথা সময় বলবে। কিন্তু অজানাকে জানার আগ্রহ এবং বিজ্ঞানীদের উৎসাহ, দুইয়ের সম্মিলিত প্রয়াসে ইতিমধ্যেই বহুবার মহাকাশে পৌঁছেছে মানুষ। আমেরিকার-রাশিয়া-ভারত-চীনের মতো বহু দেশের বিভিন্ন মহাকাশচারী বিভিন্ন সময়ে মহাকাশে সময় কাটিয়েছেন। তবে জানেন কি মহাকাশচারী নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটি বিশেষ নিয়ম রয়েছে নাসার। কোনও দম্পতি একত্রে মহাকাশে যেতে পারেন না।

আরও পড়ুন: পুরুষের ওই বিশেষ লোমে কুকুরের থেকেও বেশি জীবাণু থাকে! ঠিকভাবে পরিষ্কার করবেন কীভাবে? জেনে নিন ৬ টিপস
কেন এমন অদ্ভুত নিয়ম? সরকারিভাবে না বললেও আসলে মহাকাশচারীরা যাতে মহাকাশযানের ভিতর সঙ্গম না করেন তার জন্যই এই নিয়ম তৈরি। ১৯৯২ সালে একটি মহাকাশ অভিযানে যাওয়ার আগে ট্রেনিং ক্যাম্পে দেখা হয় দুই নভোশ্চর মার্ক লি এবং জ্যান ডেভিসের। প্রেমে পড়ে যান দু’জন। গোপনে বিয়ে করেন দু’জনে। নাসা যখন শেষ পর্যন্ত বিয়ের কথা জানতে পারে ততক্ষণে বহু দেরি হয়ে গিয়েছে। আর মহাকাশচারী বদলের সময় নেই। তাই এরপর থেকে আগেভাগেই দম্পতিরা একত্রে মহাকাশে যেতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেয় নাসা। এমনকী এত বছরের মহাকাশযাত্রার ইতিহাসে সরকারি ভাবে অন্তত কোনও মহাকাশচারী মহাশূন্যে মহাকাশযানের ভিতর সঙ্গম করেননি।
আরও পড়ুন: পুরুষের ওই বিশেষ লোমে কুকুরের থেকেও বেশি জীবাণু থাকে! ঠিকভাবে পরিষ্কার করবেন কীভাবে? জেনে নিন ৬ টিপস

বিষয়টি কিন্তু কাকতালীয় নয়। এই নিষেধাজ্ঞার নেপথ্যে রয়েছে সুস্পষ্ট বৈজ্ঞানিক কারণ।

মাধ্যাকর্ষণ শক্তির অভাব
জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত পৃথিবীর সব জীব গ্র্যাভিটি তথা মাধ্যাকর্ষণ বল অনুভব করে। তাই বিষয়টি আমাদের কাছে এতই স্বাভাবিক মনে হয় যে এই বল না থাকলে কী ঘটতে পারে তা কল্পনা করা কঠিন। মহাশূন্যে নড়াচড়া করা ভয়ানক কঠিন। গতিপথ একটু এদিক-ওদিক হলেই ঘটে যেতে পারে বিপদ। তাছাড়া সঙ্গমের সময় দেহ তরলের যে আদান-প্রদান হয় তা নিয়ন্ত্রণ করা কার্যত অসম্ভব। মহাশূন্য এক বিন্দু জলকণাও নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন।

গর্ভাবস্থা
সঙ্গমের ফলে যদি কোন মহাকাশচারী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন, তখন কি হবে তা নিয়ে নিশ্চিত নন বিজ্ঞানীরা। কারণ ভ্রূণের উপর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাব আছে কিনা সে কথা এখনো নিশ্চিত ভাবে জানা নেই। তাছাড়া মহাকাশে বিভিন্ন ধরনের তড়িৎ চুম্বকীয় বিকিরণ কাজ করে সেই বিকিরণ বা রেডিয়েশনের কি প্রভাব ভ্রূণের উপর পড়বে তাও অজানা বিজ্ঞানীদের। মাধ্যাকর্ষণ শক্তি ব্যতীত গ্রহণের দেহের হাড়, পেশি কিংবা অন্যান্য অঙ্গ সঠিকভাবে গঠিত হবে কিনা জানা নেই তাও।

শারীরিক চাপ
নাসার প্রাক্তন স্বাস্থ্য অধিকর্তা সারালিন মার্ক এই বিষয়ে একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে জানান, যৌনতা এবং যৌনস্বাস্থ্য সামগ্রিকভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় কিন্তু একথাও মাথায় রাখতে হবে কোন পরিস্থিতিতে নভোশ্চরদের থাকতে হয়। সঙ্গমের ক্ষেত্রে তৈরি হওয়া শারীরিক উত্তেজনা পৃথিবীতে থাকাকালীন নিয়ন্ত্রণ করা সহজ। রক্তচাপ কিংবা হরমোনের উত্থানপতন - সবই কাজ করে শরীরের নিজস্ব নিয়মে। কিন্তু মহাকাশে সেগুলি কতটা নিরাপদ তা নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন রয়েছে।