নিত্যদিন রূপচর্চার দুনিয়ায় আসছে নতুন ট্রেন্ড। ত্বক হোক কিংবা চুল, বরাবরই তারকাদের পরিচর্যাকে অনুসরণ করেন আমজনতা। সম্প্রতি প্রিয়াঙ্কা চোপড়া থেকে আলিয়া ভাট সহ অনেক সেলিব্রিটির এক স্কিনকেয়ার ট্রিটমেন্ট নজরে এসেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছে সেই শিট মাস্ক। সাধারণত শুটিংয়ের ফাঁকে কিংবা ঘরে বসে রিল্যাক্স করার সময়ে তারকাদের এই মাস্ক ব্যবহার করতে দেখা যায়। কিন্তু কেনই বা এই মাস্ক এখন বিউটি ও স্কিনকেয়ার দুনিয়ার নতুন ‘হট টপিক’? এই পদ্ধতি আসলে কীভাবে কাজ করে এবং ত্বকের জন্য কতটা কার্যকর, আসুন জেনে নেওয়া যাক-
শিট মাস্ক হল পাতলা সেলুলোজ বা ফাইবারের তৈরি এক ধরনের মুখোশ, যা বিশেষ সিরামে ভিজিয়ে রাখা থাকে। এই সিরামে থাকে হায়ালুরনিক অ্যাসিড, নাইসিনামাইড, ভিটামিন সি, পেপটাইড, সিকা বা অ্যালোভেরা—যেসব উপাদান ত্বকে দ্রুত আর্দ্রতা ও পুষ্টি জোগায়। মাস্কটি মুখে এমনভাবে লেগে থাকে যে সিরাম বাষ্পীভূত হওয়ার সুযোগ পায় না। বরং ত্বকের ভেতরের স্তরে ঢুকে ত্বককে মসৃণ ওউজ্জ্বল করে তোলে। এই পুরো প্রক্রিয়া অনেকটা 'মিনি স্টিম রুম এফেক্ট' তৈরি করে, যা ত্বকের শোষণক্ষমতা বাড়ায়। ফলে মাত্র ১৫–২০ মিনিটেই ক্লান্ত, নিষ্প্রভ ত্বক পেয়ে যায় এক সতেজ দীপ্তি।
সেলিব্রিটিদের মধ্যে শিট মাস্ক জনপ্রিয় হওয়ার বড় কারণ হল, এটি একেবারে ঝক্কিহীন। মাখতে বা ধুতে হয় না, কোনও গন্ধ নেই, আর ফল তাৎক্ষণিক। জেটল্যাগ, লম্বা শুটিং, মেকআপের আগে বা কোনও বড় ইভেন্টের আগে ত্বকে অতিরিক্ত গ্লো আনতে এই মাস্কের তুলনা নেই। প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ও আলিয়া ভাটের মতো তারকাদের ব্যস্ত শিডিউল ত্বকে প্রভাব ফেলে। তাই দ্রুত সুফল পেতে তাঁরা শিট মাস্কের উপর ভরসা করেন।
ত্বক বিশেষজ্ঞদের মতে, নিজের ত্বকের ধরন অনুযায়ী মাস্ক বেছে নেওয়া জরুরি। শুষ্ক ত্বকের জন্য হায়ালুরনিক অ্যাসিড, সেরামাইড ও গ্লিসারিন ভাল। উজ্জ্বলতা চাইলে নাইসিনামাইড বা ভিটামিন সিযুক্ত মাস্ক উপযোগী। সেনসিটিভ ত্বকের জন্য সিকা বা ক্যামোমাইলের মতো উপাদান দরকার। আবার বয়সের ছাপ কমাতে পেপটাইড বা রেটিনল-যুক্ত মাস্ক ব্যবহার করা যায়। ব্রণপ্রবণদের জন্য টিট্রি বা গ্রীন টি-ভিত্তিক মাস্ক কার্যকর হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শিট মাস্ক স্কিনকেয়ারের বিকল্প নয়, এটি একটি অতিরিক্ত “বুস্টার ট্রিটমেন্ট” মাত্র। সপ্তাহে ২–৩ বার ব্যবহার করলে ভাল ফল পাওয়া যায়। আর মাস্ক তোলার পর অবশ্যই ময়শ্চারাইজার লাগাতে হবে, এতে প্রভাব ভালভাবে থাকে। অর্থাৎ শিট মাস্কের সহজ ব্যবহার, তাৎক্ষণিক ফল এবং ত্বকে জৌলুস আনার ক্ষমতাই এটিকে তারকা থেকে আমজনতা, সকলের স্কিনকেয়ার রুটিনে জনপ্রিয় করে তুলেছে।
