আজকাল ওয়েবডেস্কঃ আচ্ছা, দুধের রং কী? অতি সাধারণ এই প্রশ্ন অনেক সময়েই শিশুদের জিজ্ঞাসা করা হয়। স্বাভাবিকভাবেই উত্তর আসে 'সাদা'। কিন্তু জানেন দুধের রং শুধু সাদা নয়, কালোও হয়। শুনতে খানিকটা অদ্ভুত লাগলেও বাস্তবেই এক প্রাণীর থেকে কালো রঙের দুধ পাওয়া যায়।
আট থেকে আশি, সব বয়সের মানুষের মধ্যেই দুধ খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে। দুধ সুষম খাবার বলে বিবেচিত হয়। শিশু থেকে বৃদ্ধ সকল বয়সিদের ক্যালশিয়ামের ঘাটতি পূরণের জন্য দুধ খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। মূলত গরু, মহিষ, ছাগলের দুধ পান করার চল বেশি রয়েছে। অনেকে চা, কফিতেও দুধ ব্যবহার করে থাকেন। প্রাণীজ দুধ ছাড়াও ইদানীং আমন্ড মিস্ক, কোকোনাট মিল্ক, ওটস মিল্ক সহ বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিজ্জ দুধ খাওয়ার চলও দেখা যায়। তবে যে দুধই খান না কেন, পরিচিত সব দুধের রংই সাদা। কিন্তু এরই মধ্যে পৃথিবীতে এমন একটি প্রাণী রয়েছে যার দুধের রং কুচকুচে কালো। সন্তান প্রসবের পরেই কালো রঙের এই তরল ওই প্রাণীর শরীর থেকে নিঃসৃত হয়। এখন প্রশ্ন আসে, কেনই বা ওই প্রাণীর দুধের রং কালো?
আরও পড়ুনঃ বাবা-মায়ের ডায়াবেটিস থাকলে কি সন্তানেরও হতে পারে? কখন-কীভাবে সতর্ক হলে বশে রাখতে পারবেন ব্লাড সুগার
আসলে পৃথিবীর এই অনন্য প্রাণীটি হল কালো গন্ডার। যার দুধ কালো রঙের। এরা আফ্রিকান কালো গন্ডার নামেও পরিচিত। এই কালো গন্ডারের বিজ্ঞানসম্মত নাম ডাইসেরস বাইকর্নিস। তানজানিয়া, জিম্বাবুয়ে, দক্ষিণ আফ্রিকান দেশে পাওয়া যায় এই কালো গণ্ডার। কালো স্ত্রী গন্ডারের শরীর থেকেই কালো রঙের দুধের নিঃসরণ হয়। তবে উপাদানের নিরিখে সাদা দুধের সঙ্গে কালো দুধের কিন্তু অনেক পার্থক্য রয়েছে।
গবেষণার সময় দেখা গিয়েছে, দুধ সাদা করে এমন উপাদান কালো গন্ডারের দুধে কম পরিমাণে থাকে। যার কারণ এর কম ফ্যাট। এই কারণেই গন্ডারের দুধ কালো রঙের দেখায়। এগুলিতে মাত্র ০.২ শতাংশ ফ্যাট থাকে। বদলে কালো স্ত্রী গন্ডারের দুধে জলের পরিমাণ অত্যন্ত বেশি। ফলে সাদা দুধের চেয়ে এর ঘনত্ব অনেকটাই কম হয়।

আসলে এই দুধের কম ঘনত্ব এবং রং কালো হওয়ার সঙ্গে স্ত্রী গন্ডারের ধীর গতির প্রজননচক্র জড়িত। সাধারণত জন্মের পর চার থেকে পাঁচ বছর হওয়ার পর কালো স্ত্রী গন্ডারেরা সন্তান প্রসব করতে পারে। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কালো স্ত্রী গন্ডারেরা অন্তঃসত্ত্বা থাকে এবং এক বারে একটি মাত্র সন্তানেরই জন্ম দেয়। শুধু সন্তানধারণই নয়, সন্তান পালনের কালো স্ত্রী গন্ডারের বেশি সময় লাগে। সাধারণত সন্তান প্রসবের পর দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে সন্তান পালন করে এই প্রাণী। সন্তান প্রসবের পর থেকেই কালো রঙের দুধ সন্তানকে পান করানো শুরু করে কালো স্ত্রী গন্ডার। দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে সেই দুধ নিঃসৃত হতে থাকে।
গবেষকদের একাংশের দাবি, দীর্ঘ সময় ধরে কালো স্ত্রী গন্ডারের শরীর থেকে দুধ বার হওয়ার কারণে পুষ্টিগত দিক থেকে তা উন্নত হয় না। সে কারণেই কালো রঙের দুধে ফ্যাট এবং প্রোটিনের পরিমাণ অত্যন্ত কম থাকে।
