রক্তচাপ, ডায়াবিটিসের মতো তরুণ তুর্কিদের মধ্যে ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যাও আজকাল আর খুব একটা অস্বাভাবিক নয়। এদিকে সময় থাকতেই ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে না রাখলে বাড়তে পারে একাধিক শারীরিক সমস্যা। আসলে ইউরিক অ্যাসিড হল একটি রাসায়নিক যৌগ, যা শরীরে প্রোটিন বিপাকের ফলে তৈরি হয়। সাধারণত কিডনি ইউরিক অ্যাসিড ফিল্টার করে প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বার করে দেয়। কিন্তু শরীর খুব বেশি ইউরিক অ্যাসিড তৈরি করলে বা কিডনি যথেষ্ট পরিমাণে বার না করলে রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যায়। এই অবস্থাকে হাইপারইউরিসেমিয়া বলে যা চলতি কথায় ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যাওয়া হিসাবে পরিচিত। শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে ত্বকের মাধ্যমে শরীরে সংকেত দিতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই লক্ষণগুলো সময়মতো শনাক্ত করলে প্রাথমিক পর্যায়েই চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব। 

১. ত্বকে নিচে শক্ত গুটিঃ ইউরিক অ্যাসিডের স্ফটিক ত্বকের নিচে জমে গেলে ছোট ছোট গুটি তৈরি হয়, যা সাধারণত সাদা, হলুদ বা ত্বকের রঙের হয়। এগুলো প্রায়ই আঙুল, কনুই বা পায়ের আঙুলের চারপাশে দেখা যায়। চিকিৎসা না করলে এগুলো ব্যথাযুক্ত বা আলসার সৃষ্টি করতে পারে।

২. লালভাব ও ফোলাভাবঃ জয়েন্টের চারপাশের ত্বক লালচে, ফোলা, গরম ও চকচকে হয়ে যায়। সাধারণত পায়ের আঙুল, গোড়ালি বা হাঁটুর চারপাশে এই লক্ষণ দেখা যায় এবং বেশিরভাগ সময়ে তীব্র ব্যথা হয়। 

আরও পড়ুনঃ যতই পুষ্টিগুণে ঠাসা হোক, অতিরিক্ত চিয়া সিড খেলেই বিপদ! জানেন কাদের এই বীজ এড়িয়ে চলা উচিত?

৩. ঝকঝকে বা শক্ত ত্বকঃ প্রদাহের কারণে ত্বক ফুলে যাওয়ায় এটি টাইট বা ঝকঝকে দেখাতে পারে। বিশেষ করে রাতে বা সকালে এই লক্ষণ বেশি চোখে পড়ে এবং ত্বকের চারপাশে চাপ বা ব্যথা অনুভূত হয়।

৪. ত্বকের রং পরিবর্তনঃ দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ বা টিস্যুর চাপের কারণে জয়েন্টের চারপাশের ত্বকের রং পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। এটি ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যাওয়ার একটি লক্ষণ। 

৫. ত্বক খসখসে বা খোসা ছাড়ানোঃ গাউটের আক্রমণ কমে গেলে বা সেরে উঠার সময় আক্রান্ত জয়েন্টের চারপাশের ত্বক খসখসে বা খোসা ছাড়তে পারে। এটি প্রদাহ কমে যাওয়ার পরবর্তী পর্যায়ের লক্ষণ।

বিশেষজ্ঞদের মতে. এই লক্ষণগুলো সাধারণত কনুই, আঙুল, গোড়ালি, হিল বা হাঁটুর চারপাশে দেখা যায়। এই ধরনের কোনও লক্ষণ অনুভব করলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা শুরু করলে গাউট বা অন্যান্য জটিলতা প্রতিরোধ করা সম্ভব। নিয়মিত ডায়েট ও জীবনধারার পরিবর্তন উচ্চ ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।