বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের নানা অঙ্গের মতো ত্বকেও আসে পরিবর্তন। ত্বক ধীরে ধীরে পাতলা হয়ে যায়, প্রাকৃতিক তেল কমে যায়, আর্দ্রতা ধরে রাখার ক্ষমতাও কমে। এই সময় যদি আগের মতোই অতিরিক্ত গরম জল, সাবান বা দীর্ঘসময় স্নান করার অভ্যাস থাকে, তাহলে ত্বক আরও শুষ্ক ও সংবেদনশীল হয়ে উঠতে পারে। বিশেষ করে বয়স্কদের ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষায় স্নানের সঠিক নিয়ম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি ফ্রান্সের এক গবেষণায় উঠে এসেছে সেই তথ্য।
গবেষণায় বলা হয়েছে, ৬৫ বছরের পর প্রতিদিন স্নান করার প্রয়োজন নেই। বরং প্রতি ২–৩ দিনে একবার স্নান ত্বকের জন্য আদর্শ। কারণ ত্বক বারবার জল, বিশেষত গরম জলের সংস্পর্শে এলে তার প্রাকৃতিক তেল দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। এতে ত্বক খসখসে, রুক্ষ-শুষ্ক হয়ে উঠতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞরা গরম নয়, ঈষদুষ্ণ জলে ৫ থেকে ১০ মিনিট স্নান করার পরামর্শ দেন। তবে যদি আবহাওয়া উষ্ণ থাকে তাহলে প্রতিদিন স্নান করাই শ্রেয়।
এছাড়া ত্বকের ক্ষতি কমাতে রাসায়নিকযুক্ত সাবান বা স্ক্রাব এড়িয়ে চলা উচিত। গবেষকরা জানান, বয়স্কদের ত্বক নরম থাকে এবং সহজেই ক্ষত তৈরি হতে পারে। তাই সুগন্ধহীন, মৃদু ক্লেনজার বা বডিওয়াশ ব্যবহার করাই নিরাপদ। এতে ত্বকের প্রাকৃতিক সুরক্ষা দেওয়াল অক্ষুণ্ণ থাকে।
স্নানের পরপরই যখন ত্বক সামান্য ভেজা থেকে তখন ময়েশ্চারাইজার লাগালে আর্দ্রতা ভালভাবে ধরে রাখা যায়। বয়স বাড়লে ত্বক দ্রুত শুকিয়ে যায়, তাই নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার লাগানো ত্বককে নরম ও আরামদায়ক রাখে। বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি ভাল হালকা লোশন বা ক্রিম প্রতিদিন ব্যবহার করলে শুষ্কতা, চুলকানি, ফাটা ত্বক এবং ত্বক-সংক্রান্ত সংক্রমণ থেকেও সুরক্ষা পাওয়া যায়।
তবে প্রতিদিন স্নান না করলেও ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা জরুরি। মুখ, হাত, গোড়ালি ও গোপনাঙ্গ-এই সব জায়গা হালকা সাবান বা ওয়াইপ দিয়ে পরিষ্কার করা উচিত। এতে পরিচ্ছন্নতাও বজায় থাকবে এবং ত্বকও সুরক্ষিত থাকবে।
গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, বয়স্কদের স্নানের রুটিন শুধুমাত্র পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপার নয়, বরং ত্বকের স্বাস্থ্যের সঙ্গেও গভীরভাবে যুক্ত। অতিরিক্ত স্নান ত্বককে দুর্বল করে দিতে পারে, আবার স্নান না করার ফলেও ত্বকে সমস্যা হতে পারে। তাই সবচেয়ে আদর্শ উপায় হল- নিয়মমাফিক স্নানের রুটিন।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, বয়সের সঙ্গে যেমন দেহের চাহিদা বদলায়, ত্বকেরও তাই। তাই ৬৫ বছরের পর থেকে স্নানের অভ্যাসও ধীরে ধীরে বদলানো প্রয়োজন। সঠিক রুটিন অনুসরণ করলে ত্বক থাকবে কোমল সুস্থ এবং জেল্লাদার।
