আজকাল নিজেকে সুন্দর দেখাতে মানুষ নানা রকম পদ্ধতি ব্যবহার করে। যার মধ্যে কয়েকটি ট্রেন্ড বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। আবার সমাজমাধ্যম খুললেই এই সব নিত্যনতুন রূপচর্চার নানা নেতিবাচক দিকও চোখে পড়ে। এরই মধ্যে সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী ত্বকের পরিচর্যায় এক নতুন ট্রেন্ড ছড়িয়ে পড়েছে। যা হল স্যামন স্পার্ম ফেসিয়াল। নাম শুনেই অবাক হলেন তো? কিন্তু বাস্তবেই যে এই ফেসিয়াল প্রয়োগ করে অনেকে সুফল পেয়েছেন। বিশেষ করে পশ্চিমের দেশগুলিতে এর এখন বেশ রমরমা। 

এই ফেসিয়াল বা ইনজেকশনে ব্যবহার করা হয় স্যামনের শুক্রাণু থেকে প্রাপ্ত ডিএনএ বা পলিনিউক্লিওটাইড (পিডিআরএন), যা ত্বকের পুনর্গঠন ও ত্বক সচেজ রাখার জন্য পরিচিত। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি কোলাজেন ও ইলাস্টিন উৎপাদন বাড়িয়ে ত্বককে ঘন, নমনীয় এবং উজ্জ্বল করে।

এই থেরাপি প্রথমে কোরিয়ায় জনপ্রিয়তা পায়, পরে পশ্চিমের  দেশগুলোতে ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সারা বিশ্বে সেলিব্রিটি ট্রেন্ডে পরিণত হয়। কিম কার্দাশিয়ান সহ বেশ কয়েকজন তারকা ইতিমধ্যেই এটি ব্যবহার করেছেন বলে খবর। ব্যবহারকারীদের দাবি, এই ফেসিয়াল করার পর যেন মনে হয় ত্বকে নতুন করে প্রাণ ফিরেছে, ত্বকে সূক্ষ্ম লাইন ও বলিরেখা কমে যায়, এবং জেল্লা বাড়ে।

যদিও প্রচলিত বিজ্ঞাপন ও সমাজমাধ্যমের প্রচারে স্যামন শুক্রাণু ফেসিয়াল অত্যন্ত চমকপ্রদ মনে হতে পারে, তবে এর বৈজ্ঞানিক প্রমাণ কিন্তু এখনও সীমিত। ইনজেকশন বা ফেসিয়ালের জিনিসপত্রের মান ও স্যানিটেশনের নিশ্চয়তা না থাকায় ত্বকে অ্যালার্জি, লালভাব, ফুসকুড়ি বা সংক্রমণের ঝুঁকি থাকতে পারে। ত্বক সংবেদনশীল হলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা বাড়ে।

ইদানীং সেলিব্রিটিদের ব্যবহার এবং নতুনত্বের কারণে অনেকেই এই ফেসিয়ালের দিকে ঝুঁকছেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই থেরাপি ত্বকের জন্য সম্ভাব্য সহায়ক হতে পারে, তবে এটি এখনও 'পরীক্ষামূলক' ধাপে রয়েছে। তাই যে কোনও ইনজেকশন বা চিকিৎসা নেওয়ার আগে অবশ্যই পেশাদার ত্বকবিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। একইসঙ্গে স্বাস্থ্যকর, প্রমাণভিত্তিক ত্বকচর্চা যেমন সানস্ক্রিন ব্যবহার, নিয়মিত ময়েশ্চারাইজিং, পর্যাপ্ত জলপান ও সুষম খাবার খাওয়া দীর্ঘমেয়াদে নিরাপদ ও কার্যকর।