যে কোনও আনন্দ উৎসবের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। বিশেষ করে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ যেন কব্জি ডুবিয়ে ভূরিভোজ না করলে সম্পূর্ণই হয় না। সকালে বিরিয়ানি তো রাতে চাইনিজ। আর এসবের মধ্যেই মিষ্টির জায়গা কিন্তু কেউ নিতে পারে না। বিশেষ করে রাখির মতো অনুষ্ঠানে মিষ্টি খাওয়ানোর রীতি রয়েছে। এদিকে ডায়াবেটিস থাকলে মিষ্টি খাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা! তবে জানেন কি বোন-দিদির হাতে মিষ্টি খেয়েও সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। যার জন্য শুধু মেনে চলতে হবে কয়েকটি সহজ টিপস।
মিষ্টি বা চিনি খেলে ডায়াবিটিস হয় এমন ধারণা প্রচলিত রয়েছে। তাই অনেকেই ডায়াবিটিস হবে, এই ভয়ে মিষ্টি খাওয়া থেকে বিরত থাকেন। কিন্তু মিষ্টি খেলেই সুগার বেড়ে যাবে, এই ধারণা কি আদৌ ঠিক? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডায়াবেটিস মানে জীবন থেকে পছন্দের সব বাদ চলে গেল, এমনটা নয়। কিন্তু রক্তে শর্করা বাড়তে শুরু করলে তখন মিষ্টি খাওয়ায় রাশ টানতে হবে বই কি! গবেষণা বলছে, চিনি বা চিনি জাতীয় খাবার থেকে রক্তে শর্করা বেশি মাত্রায় বাড়ে ঠিকই। তবে বেশি চিনি শুধু ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য নয়, যে কারও জন্যই বিষ। তাই ডায়াবেটিসের ভয়ে মিষ্টি-প্রেমীরা একেবারেই বঞ্চিত থাকার প্রয়োজন নেই। রাখির মতো উৎসবের দিনে মিষ্টিমুখ না করলেই নয়, তাই ডায়াবেটিসের রোগীরা কয়েকটি নিয়ম মেনে চললেই চিন্তামুক্ত থাকতে পারবেন। যেমন-
আরও পড়ুনঃ মাঝেমাঝেই কাঁপছে চোখের পাতা? শুভ-অশুভ ছাড়ুন, আসল কারণ জানলে আঁতকে উঠবেন
• বোন বা দিদি রাখি পরানোর পর মিষ্টি খাওয়া হয়েই যায়। সেক্ষেত্রে ডায়াবিটিস রোগীরা ভাজা মিষ্টি এড়িয়ে চলুন। কারণ এই ধরনের মিষ্টি ব্লাড সুগারের মাত্রা অনেকটা বাড়িয়ে দিতে পারে। ঠিক একইভাবে খাওয়া যাবে না রসের মিষ্টি। তার বদলে খেতে পারেন হালকা মিষ্টিযুক্ত সন্দেশ। যদি রসালো মিষ্টিও খেতে খুবই ইচ্ছে করে তাহলে দিনে একটা খান। এখন বেশিরভাগ দোকানেই সুগার ফ্রি দেওয়া মিষ্টি বানায়। খেতেও দারুণ। তেমন মিষ্টি খেতে পারেন।
• মিষ্টি খাওয়া একটু বেশি হয়ে গেলে ভয় পেয়ে লাভ নেই। বরং এদিন কার্বোহাইড্রেট কম খান। ভাত-রুটি পরিমাণে কম কিংবা একেবারে বাদ দিতে পারেন। কার্বোহাইড্রেট বাদ দিলেও ব্যালান্স ঠিক থাকবে। ফাইবার, ভিটামিন খনিজ সমৃদ্ধ ফল খেতে পারেন।

• ডায়াবেটিস রোগীদের পরিমিতি বোধ থাকাটা খুবই জরুরি। অর্থাৎ দোকানের মিষ্টি খান বা বাড়ির, দিনে একটার বেশি খাওয়া চলবে না। রাখির মতো দিনে মিষ্টি খাওয়া হলে ওইদিন চা ও কফিতে চিনি ও দুধ মেশানো বন্ধ রাখুন। বদলে গ্রিন টি কিংবা ভেষজ চা খেতে পারেন। চকোলেট, আইসক্রিম, চাটনির মতো কোনও মিষ্টি খাবারও যতটা সম্ভব কম খান।
• মিষ্টি খেলেও ঘাম ঝরিয়ে খানিকক্ষণ হেঁটে নিন। বিশেষ করে পরদিন ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা জরুরি। আর যাঁরা ব্যায়াম করেন না, তাঁরা ৪৫ মিনিট অবশ্যই হাঁটুন। এছাড়াও সময় মতো খান ওষুধ।
• উৎসবের দিন হোক বা অন্যদিন সুগার বেড়ে যাওয়ার কোনও রকম লক্ষণ অনুভব করলে অবশ্যই সচেতন থাকুন। সময় মতো চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
