বলিউডের জনপ্রিয় পরিচালক, প্রযোজক করণ জোহর সম্প্রতি তাঁর নতুন লুক দিয়ে সকলকে চমকে দিয়েছেন। ৫৩ বছর বয়সে তাঁর চেহারার এই বদল দেখে সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। কেউ প্রশংসা করেছেন, কেউ আবার প্রশ্ন তুলেছেন, এত দ্রুত কীভাবে ওজন কমালেন? এবার করণের এই বদলের আসল রহস্য জানালেন এক পুষ্টিবিদ।
করণ নাকি গত সাত মাস ধরে ওম্যাড, অর্থাৎ সারাদিনে মাত্র একবার খাবার খাওয়ার নিয়ম মেনে চলেছেন। ভারতীয় পুষ্টিবিদ ও হেলথ কোচ প্রিয়াঙ্কা টি তাঁর ইনস্টাগ্রাম ভিডিওতে বলেন, করণ জোহর দিনে প্রায় ২৩ ঘণ্টা ফাস্টিং করতেন। শুধু এক নির্দিষ্ট সময়ে একবার খাবার খেতেন। বাকি সময় জল, ব্ল্যাক কফি বা চা ছাড়া আর কিছুই নয়।
এই ওম্যাড ডায়েট কীভাবে কাজ করে? প্রিয়াঙ্কার ব্যাখ্যা অনুযায়ী, দীর্ঘক্ষণ না খেলে বাইরে থেকে খাবার না পেয়ে শরীর জমে থাকা ফ্যাট শক্তি হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করে। ফলে দ্রুত ফ্যাট বার্ন হয়, ওজন কমতে থাকে। করণের আগের ও পরের ছবি দেখলেই তার পরিবর্তন স্পষ্ট।
কিন্তু পুষ্টিবিদ সতর্ক করে বলেন, এই ডায়েট যেমন কার্যকর, তেমনই খুব কঠিন এবং ঝুঁকিপূর্ণ। ২৩ ঘণ্টা না খেয়ে থাকা মানে শরীরকে প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রাখা। প্রিয়াঙ্কার কথায়, “এটা সবার পক্ষে সম্ভব নয়। এতে শরীরের হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে, মাসল লস হওয়ার আশঙ্কা থাকে, এনার্জি কমে যেতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে মাথা ঘোরা বা দুর্বলতাও দেখা দিতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ড দেখে কখনওই এমন ডায়েট শুরু করা উচিত নয়। করণ জোহর তাঁর ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যপরিস্থিতি বুঝে বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে এটা করেছেন। তাই সকলে যদি তাঁর মতো ওজন কমানোর আশায় ওম্যাড ডায়েট করতে শুরু করেন, তা বিপজ্জনক হতে পারে।
প্রিয়াঙ্কা বিকল্প হিসেবে পরামর্শ দিয়েছেন, দিনে তিনবার স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে, খাবার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, প্রোটিন, ফাইবার ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাটযুক্ত খাবার খেতে হবে, খাওয়ার নির্দিষ্ট রুটিন মানতে হবে। এই পদ্ধতিগুলোই দীর্ঘমেয়াদে নিরাপদে ওজন কমাতে সাহায্য করে।
করণের এই পরিবর্তন নিঃসন্দেহে অনুপ্রেরণা জোগায়। কিন্তু পুষ্টিবিদদের মতে, ওম্যাড কোনও ম্যাজিক ফর্মুলা নয়, এটি খুব কঠিন এবং সকলের শরীরের জন্য উপযুক্তও নয়। তাই এ ধরনের ফাস্টিং শুরু করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
