আজকাল ওয়েবডেস্ক: বেগুন শব্দটা শুনলে প্রথমেই মনে পড়ে বেগুনি, বেগুনভাজা, বেগুন পোড়া, বেগুনের ভর্তা। বিশেষ করে ময়দায় চুবিয়ে ডুবো তেলে ভাজলে তো আর কথাই নেই। যাঁরা ভাজাভুজি পছন্দ করেন না, তাঁদের জন্য রয়েছে কালোজিরে আর ইলিশ দিয়ে বেগুনের পাতলা ঝোল। সব মিলিয়ে বেগুনের গুণগান করেন না, এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া কঠিন। তবে শুধু স্বাদ নয়, স্বাস্থ্যগুণের দিক থেকেও বেগুন যথেষ্ট সমৃদ্ধ। আধুনিক পুষ্টিবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, বেগুন শরীরের নানা জটিল সমস্যার সমাধান করতে পারে।
আরও পড়ুন: নিজে অক্ষম, স্ত্রীকে অন্তঃসত্ত্বা করতে প্রতিবেশীকে ভাড়া করলেন যুবক, ৭২ বার চেষ্টার পর কী হল ফলাফল?

প্রথমেই পুষ্টিগুণের কথা বলা যাক। বেগুনে প্রচুর ডায়েটারি ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স, ভিটামিন কে, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ক্যালসিয়াম থাকে। ক্যালোরি কম থাকায় ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে এটি খুবই উপকারী। যাঁরা ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তাঁদের জন্য বেগুন বিশেষভাবে কার্যকর। ফাইবার থাকলে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়তে পারে না এবং ইনসুলিনের কার্যকারিতা বজায় থাকে।

হৃদ্‌রোগ প্রতিরোধেও বেগুনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। বেগুনে থাকা ‘অ্যান্থোসায়ানিন’ নামক অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত বেগুন খেলে ধমনীর রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক থাকে, ফলে হৃদ্‌রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে।
আরও পড়ুন: নিজে অক্ষম, স্ত্রীকে অন্তঃসত্ত্বা করতে প্রতিবেশীকে ভাড়া করলেন যুবক, ৭২ বার চেষ্টার পর কী হল ফলাফল?

অন্যদিকে বেগুনের খোসায় আছে ‘নাসুনিন’ নামক বিশেষ অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। এটি মস্তিষ্কের কোষকে সুরক্ষা দেয় এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। আধুনিক গবেষণায় এমনও দাবি করা হয়েছে যে, নাসুনিন শরীরের অতিরিক্ত লোহা অপসারণে সহায়তা করে, যা ক্যানসারের ঝুঁকি হ্রাস করতে সাহায্য করে।

হজমশক্তি বাড়ানোতেও বেগুন সমান কার্যকর। এতে থাকা আঁশ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং অন্ত্রকে সুস্থ রাখে। নিয়মিত বেগুন খেলে লিভারের কার্যক্ষমতা বাড়ে এবং শরীর থেকে টক্সিন বেরিয়ে যায়।

ওজন কমানোর জন্য বেগুন এক অসাধারণ খাদ্য। যেহেতু এতে ক্যালোরি ও ফ্যাট কম, অথচ আঁশ বেশি, তাই এটি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরাট রাখে। ফলে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়।

রূপচর্চার ক্ষেত্রেও বেগুনের অবদান কম নয়। বেগুনে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ও ভিটামিন ত্বকের বার্ধক্য রোধ করে, বলিরেখা কমায় এবং ত্বককে উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে। চুল পড়া কমানো ও চুলের গোড়া মজবুত করতেও বেগুন উপকারী।

তবে কিছু সতর্কতাও আছে। যাঁরা অ্যালার্জির সমস্যায় ভোগেন, তাঁদের ক্ষেত্রে বেগুন খেলে চুলকানি বা হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আবার গেঁটে বাত বা কিডনির সমস্যায় ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে বেগুন সীমিত পরিমাণে খাওয়াই ভাল, কারণ এতে অক্সালেট থাকে যা এই সমস্যাগুলিকে বাড়িয়ে তুলতে পারে।

সব মিলিয়ে বলা যায়, বেগুন শুধু রান্নার স্বাদ বাড়ানোই নয়, শরীর সুস্থ রাখার জন্যেও গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক পরিমাণে বেগুন খাওয়া যেমন রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, তেমনি দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে বিভিন্ন রোগ থেকে সুরক্ষা দেয়।