হিন্দুদের বারো মাসে তেরো পার্বনের মধ্যে জন্মাষ্টমী অন্যতম। শ্রীকৃষ্ণের জন্ম তিথিতে দেশ জুড়ে পালিত হয় জন্মাষ্টমী। গোপালের জন্মদিনে ঘরে ঘরে আজ মিষ্টি তৈরির ধুম। আসলে যে দেবতা যে ভোগে সন্তুষ্ট হন তাঁকে সেই ভোগ নিবেদন করার চল রয়েছে। যেমন গণেশ পুজোয় মোদক দেওয়া হয়, আবার লক্ষ্মী পুজোয় নাড়ু। তেমনই জন্মাষ্টমীতেও শ্রীকৃষ্ণের প্রিয় খাবার তালের বড়া নিবেদন করা হয়। শোনা যায়, বাসুদেব কৃষ্ণকে নন্দরাজের কাছে রেখে আসার পর গোকুলে কৃষ্ণের আবির্ভাব উপলক্ষে নন্দ উৎসবেই প্রথম খাওয়া হয়েছিল তালের বড়া। তবে শুধু তালের বড়াই নয়, গোপালকে সন্তুষ্ট করতে আরও অনেক ভোগ দিতে পারেন। জেনে নিন সেই বিষয়ে-
* ক্ষীর- শ্রীকৃ্ষ্ণের পছন্দের খাবারের মধ্যে রয়েছে ক্ষীর। তাই জন্মদিনে গোপালের সামনে কাজু, পেস্তা ছড়ানো ক্ষীরের পায়েস বানিয়ে দিতেই পারেন। ক্ষীর সাধারণত দুধ জ্বাল দিয়ে ঘন করে, তাতে চাল এবং চিনি যোগ করে তৈরি করা হয়। কখনো কখনো এতে এলাচ বা অন্যান্য মশলা যোগ করা হয় স্বাদ বাড়ানোর জন্য।
* মালপোয়া - ভাজা মিষ্টির দুনিয়ায় মালপোয়ার কদরই আলাদা। তাতে বাড়তি মাহাত্ম্য যোগ করে বিভিন্ন ধর্মের উৎসবেও মালপোয়া খাওয়ার চল।খাদ্যরসিক গোপালের প্রিয় খাবারের তালিকায় রয়েছে মালপোয়াও। পুরাণ অনুসারে, মালপোয়া খেতে খুবই ভালোবাসতেন গোপাল। সেই কারণে জন্মাষ্টমীতে কৃষ্ণকে মালপোয়া নিবেদন করলে প্রসন্ন হন তিনি। বংশীধরের কৃপা পেতে জন্মাষ্টমীতে তাঁকে মালপোয়া নিবেদন করতে ভুলবেন না।
* নাড়ু- কৃষ্ণকে আদর করে নাড়ুগোপাল বলার চল রয়েছে। নাড়ু হল শ্রীকৃষ্ণের খুব প্রিয় একটি খাবার, বিশেষ করে লাড্ডু গোপালের জন্য এটি একটি বিশেষ ভোগ। তাই জন্মদিনে গোপালকে নাড়ু ভোগ হিসাবে নিবেদন করতে পারেন।

* রাবড়ি- জন্মাষ্টমীর দিনে গোপালকে রাবড়ি নিবেদন করা একটি জনপ্রিয় প্রথা। দুধ, দই, মাখনের মতো শ্রীকৃষ্ণের প্রিয় খাবার হল রাবড়ি।তাই জন্মদিনে এই খাবার বাদ দেবেন না কিন্তু। দুধ জ্বাল দিয়ে ঘন করে তৈরি একটি মিষ্টি খাবার হল রাবড়ি। সঙ্গে দিতে পারেন কৃষ্ণের আর একটি প্রিয় খাদ্য মালাই।
* পনজিরি- শ্রীকৃষ্ণের অতি প্রিয় খাবার হল পনজিরি। এই ঐতিহ্যবাহী ভারতীয় মিষ্টি ময়দা, ঘি, চিনি ও বাদাম দিয়ে প্রস্তুত করা হয়। জন্মাষ্টমীতে পনজিরি নিবেদন করার প্রথা রয়েছে। এই ভোগ পেলে শ্রীকৃষ্ণ সহজেই প্রসন্ন হন বলে মনে করা হয়।
আরও পড়ুনঃ বাঁসী রুটির অবিশ্বাস্য উপকারিতা! আয়ুর্বেদে প্রাচীন স্বাস্থ্যরহস্য, আধুনিক জীবনে নতুন গুরুত্ব
* মোহনভোগ- শ্রীকৃষ্ণের আর একটি প্রিয় খাবার হল মোহনভোগ। এটি হল ভাজা সুজির হালুয়া। এর সঙ্গে লুচি ভোগে রাখা রেওয়াজ। কথিত রয়েছে, মোহনভোগ নিবেদন না করলে শ্রীকৃষ্ণের পুজো সম্পূর্ণ হয় না। তাই জন্মাষ্টমীতে গোপালের পুজোর ভোগে মোহনভোগ অবশ্যই রাখুন।
