আমাদের হাতের কাছে এমন অনেক উপাদান রয়েছে যা শুধু শরীর নয়, মনেরও খেয়াল রাখে। তাই তো ওষুধ ছাড়াও যুগ যুগ ধরে ঘরোয়া টোটকার উপরও ভরসা রাখেন অনেকে। বহু ভেষজ গুণে সমৃদ্ধ তুলসী পাতা তেমনই একটি উপাদান। ভারতে তুলসী পাতা খাওয়ার চল বহু পুরনো। আয়ুর্বেদে তুলসীকে বলা হয় ‘মহৌষধি’। প্রতিদিন সকালে কয়েকটি তুলসী পাতা চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস আপনাকে শুধু রোগমুক্ত রাখবেই না, ত্বক, চুল ও হৃদযন্ত্রের যত্নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এমনকী কোনও ওষুধ কিংবা থেরাপি ছাড়া মানসিক চাপও কমিয়ে দিতে পারে এই পাতা। তাহলে নিয়মিত তুলসী পাতা খেলে কী কী উপকার পাবেন, জেনে নিন- 

হজমে সহায়ক তুলসীঃ তুলসী পাতা পেটের নানা সমস্যা দূর করতে বিশেষ কার্যকর। গ্যাস, অ্যাসিডিটি বা বদহজমের মতো সমস্যায় এটি প্রাকৃতিক প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। নিয়মিত খেলে হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয় এবং খাবার থেকে পুষ্টি গ্রহণও বাড়ে।

আরও পড়ুনঃ ঘরে যদি দেখতে পান এই সব লক্ষণ, বুঝে নিন সৌভাগ্য কড়া নাড়ছে আপনার দরজায়

সংক্রমণ প্রতিরোধে ঢালঃ তুলসীতে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ও ফাইটোকেমিক্যাল, যা শরীরকে সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচায়। নিয়মিত সেবনে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, ফলে মরশুমি অসুখ যেমন সর্দি-কাশি বা জ্বর সহজে ঘেঁষতে পারে না।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তাঃ গবেষণায় দেখা গেছে তুলসী রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ফলে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি বিশেষভাবে উপকারী। প্রতিদিন অল্প কিছু পাতা খেলে রক্তে সুগারের মাত্রার ভারসাম্য বজায় থাকে।

ত্বক ভাল রাখেঃ তুলসীর জীবাণুনাশক গুণ ত্বককে ভেতর থেকে পরিষ্কার করে। নিয়মিত খেলে ব্রণ, ফুসকুড়ি কিংবা দাগ-ছোপ কমে যায়। এর অ্যান্টি-এজিং গুণ ত্বককে রাখে তরুণ ও উজ্জ্বল।

চুলের যত্নেও কার্যকরঃ তুলসী চুলের গোড়ায় পুষ্টি জোগায়। ফলে চুল পড়া কমে, চুল হয় মজবুত ও ঘন। এছাড়া মাথার ত্বকে সংক্রমণ প্রতিরোধেও এটি সাহায্য করে।

হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়কঃ বিশেষজ্ঞদের মতে, তুলসী খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল) কমাতে সাহায্য করে। ফলে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে। হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখতে নিয়মিত তুলসী পাতা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন।

সার্বিকভাবে স্বাস্থ্য উন্নত করেঃ প্রতিদিন তুলসীর মাত্র ৩–৪টি পাতা খাওয়ার অভ্যাস শরীরকে দীর্ঘমেয়াদে সুস্থ রাখে। এটি শরীরে শক্তি যোগায়, মানসিক চাপ কমায় এবং সামগ্রিকভাবে জীবনযাত্রাকে করে তোলে আরও ভারসাম্যপূর্ণ।